সনাতন ও প্রচলিত গ্রেডিং পদ্ধতিতে ফল বৈষম্য নিরসন জরুরি
- ড. মনোয়ারুল ইসলাম
- ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
১৯৯১ সালে বাংলাদেশে প্রথম গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হয়। প্রথমবারের মতো এ গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করে বুয়েট। এরপর পরীক্ষার অন্যান্য শাখায় বিভাগ পদ্ধতির পরিবর্তে গ্রেডিং পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসএসসি পরীক্ষায় গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হয় ২০০১ সালে। আর এইচএসসি পরীক্ষায় এই পদ্ধতি চালু হয় ২০০৩ সালে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। শুধু নম্বর দেয়ার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়। পরিবর্তন আনা হয় ফলাফলের প্রকাশ ভঙ্গিতে। ২০০১-এর আগে ৮০ ওপর নম্বর পেলে বলা হতো লেটার মার্কস আর গ্রেডিংয়ে বলা হয় জিপিএ ৫। তবে রয়ে যায় নানা জটিলতা। যেমন আগে প্রতিটি নম্বর কাউন্ট হতো এখন তা হয় না বরং গ্রেড থেকে গ্রেডে অনেক ক্ষেত্রে ১৯ নম্বর পর্যন্ত অমূল্যায়িত থেকে যায়। আবার চতুর্থ বিষয়ের নম্বর যোগ না হওয়ায় ওই বিষয়ের পুরো নম্বরই অমূল্যায়িত থেকে যায়। ফলে বিভাগ পদ্ধতির রেজাল্ট আর গ্রেডিং পদ্ধতির রেজাল্টে বড় অসমতা তৈরি হয়। আর এটি বিশেষত তৈরি হয় ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। কারণ ২০০৪ সালের পর থেকে অনেকটা সমতা আনা হয়েছে। যেমন ১. ৮০-১০০ নম্বরে (A+) গ্রেড ছিল এখানে ৭০ নম্বরে আরো একটি (-A) গ্রেড যুক্ত করা হয়েছে, ২. চতুর্থ বিষয়ের নম্বর আগে যুক্ত হতো না পরে যুক্ত করা হয়েছে।
২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ এর এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীরা যেভাবে বৈষম্যের শিকার
২০০৩ সালের আগে গ্রেড সংখ্যা কম ছিল। এর ফলে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের অপচয় হতো। যেমন ২০০১ সালে এসএসসি গ্রেড পয়েন্ট ছিল, ৮০-১০০ A+ গ্রেড (গ্রেড পয়েন্ট ৫), ৬০-৭৯ A (গ্রেড পয়েন্ট ৪), ৫১-৫৯ B গ্রেড (গ্রেড পয়েন্ট ৩), ৪১-৫০ C গ্রেড (গ্রেড পয়েন্ট ২), ৩৩-৪০ D গ্রেড (গ্রেড পয়েন্ট ১), ০০-৩২ F গ্রেড (গ্রেড পয়েন্ট ০)। নম্বর অপচয় কিভাবে হয়েছে তা একটু দেখে নেয়া যাক- এ পদ্ধতিতে কোনো বিষয়ে ৬০ পেলে A ধরা হয় আবার কোনো বিষয়ে ৭৯ পেলেও A ধরা হয়। যেখানে ১ নম্বরের জন্য ফলাফল এদিক-ওদিক হয়ে যায়। আর এখানে তো অনেক নম্বরের ব্যবধান। এখানে ১৯ নম্বর মূল্যয়নই হচ্ছে না। বিষয়টি তখন দৃশ্যমান সমস্যা না হলেও এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তখন মার্ক জানার সুযোগও ছিল না যে এখন সমতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী তার মার্ক উল্লেøখ করবে। পরবর্তীতে মার্কের অবমূল্যায়ন কমানোর জন্য গ্রেড পয়েন্ট বাড়িয়ে সাতটি করা হয়। এখানে সংশোধিত গ্রেড পয়েন্টধারীদের সাথে আগের গ্রেড পয়েন্টধারীদের একটি বড় অসমতা রয়ে গেছে।
সনাতন ডিভিশন পদ্ধতিতে প্রথম বিভাগ ছিল ৬০০ মার্ক। এখানে প্রতিটি নম্বর মূল্যায়ন হতো। চতুর্থ বিষয়ের নম্বরও যুক্ত হতো। ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তাদের চতুর্থ বিষয়ের নম্বরও যুক্ত হয়নি, আবার এক গ্রেড থেকে অন্য গ্রেড পর্যন্ত মাঝের অনেক মার্ক অমূল্যায়িত হয়েছে। সুতরাং এখানে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের জিপিএ আর সনাতন ডিভিশন পদ্ধতি এবং বর্তমান জিপিএ এক মনে করার সুযোগ নেই।
২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে গ্রেডিং পদ্ধতিতে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তাদের রেজাল্টে অতিরিক্ত বিষয়ের (চতুর্থ বিষয়) কোনো নম্বর যোগ হতো না। তারা মূল বিষয়গুলোতে যা পেতো, তাই তাদের চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে গণ্য হতো। কিন্তু এর পরে যারা পরীক্ষা দেয়, তাদের ফলাফল অতিরিক্ত বিষয়ের ফলাফলের সাথে সমন্বয় করেই তৈরি করা হয়। সুতরাং, যারা ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে পরীক্ষা দিয়েছে আর যারা এ সময়ের পরে পরীক্ষা দিয়েছে তাদের ফলাফলের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে এবং বড় একটি অসমতা রয়ে গেছে। এখানে বড় বৈষম্য হলো- পদ্ধতিগত ভুলের কারণে একদিকে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আবার তারা যে নম্বর পেয়েছে তাও মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। যেমন- চাকরিতে বর্তমানে গড় ৪.০০ চাওয়া হচ্ছে। সেখানে চতুর্থ বিষয়ের নম্বরও যুক্ত আছে। অথচ ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩.৫০ পেয়েছেন তাদের চতুর্থ বিষয় নম্বর যোগ করলে বর্তমান ৪.০০ এর বেশি হবে। কিন্তু এটি মূল্যায়িত হচ্ছে না।
২০০১, ২০০২ (মাধ্যমিক) ২০০৩ (উচ্চমাধ্যমিক) সালের জিপিএ পদ্ধতি আর এখনকার পদ্ধতি যে এক নয় এটি সবারই জানা। বিশেষ করে ২০০১ সাল। তারা ছিল প্রথম ব্যাচ। মাধ্যমিক পরীক্ষার দুই সপ্তাহ আগে জানানো হয় গ্রেডিং সিস্টেমের কথা। প্রথমবারে এ গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হলে ছাত্ররা অনেকটা হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। কারণ বুয়েটে আগে চালু হলেও এ পদ্ধতির সাথে মাধ্যমিক ছাত্র-শিক্ষকদের তেমন জানাশোনা ছিল না, স্টাডিও ছিল না। হঠাৎ ঘোষণা হওয়ায় জানত না তাদের রেজাল্ট কিভাবে হবে বা গ্রেডিং সিস্টেমের পুরো পদ্ধতিটা কী। অনেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার অনেক পরে জেনেছে। এর উপর তেমন কোনো ট্রেনিংও হয়নি। ফলে পরীক্ষকরাও ঠিকমতো জানতেন না কিভাবে খাতা দেখা হবে, কিভাবে মার্ক দিতে হবে। শিক্ষকরা জিপিএ পদ্ধতি মার্কিংয়ের দিকে না তাকিয়ে শিক্ষার্থীরা কোন ডিভিশন পাচ্ছে অনেকটা সেদিকে খেয়াল রেখে মার্ক দিয়েছেন, ফলে শিক্ষার্থীরা নম্বর প্রাপ্তিতে বৈষম্যের শিকার হয়েছে অনাকাক্সিক্ষতভাবে। গ্রেডিং পদ্ধতিটি প্রথম হওয়ায় অনেকটা জটিলতা তৈরি হয়। ফলে ওই বছর রেজাল্টে বড় ধরনের ধস নামে এবং বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই সময়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।
২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে যে ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন কারণেই ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হয় তা এসএসসিতে জিপিএ ৫ ২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কয়েকটি ফলাফল নমুনা দেখলেই বোঝা যায়। ২০০১ সাল পাসের হার ছিল ৩৫.২২ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র ৭৬ জন শিক্ষার্থী। এ বছর চার পয়েন্টও পায় হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্র। ২০০২ সালের পাসের হার ৪০.৬৬ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৩২৭ জন। ২০০৩ সালে পাসের হার ৩৫.৯১ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১৩৮৯ জন। ২০২৪ সাল পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এ বছর চার পয়েন্ট পাওয়ার সংখ্যা কত তা এখান থেকে স্পষ্ট ও অনুমেয়। এখানে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, গ্রেডিং পদ্ধতির আগে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী প্রথম বিভাগ পেলে এবং ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল প্রতি বছর লাখের উপর A+ গ্রেড আর লাখ লাখ চার পয়েন্ট পেলে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা গেল কোথায়? ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় যেখানে মাত্র ৭৬ জন A+ পেয়েছিল, ২০২৪ সালে এসে সে সংখ্যাটি লাখ ছাড়িয়ে গেছে, পাসের হার ৩৫ থেকে ৮৩ শতাংশে উঠে এসেছে। এই চিত্র থেকে বোঝা যায়, ২০০১, ২০০২, ২০০৩ সালের জিপিএ কতটা কঠিন ছিল।
চাকরির কোয়ালিফিকেশনে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের শিক্ষার্থীরা সমস্যার সম্মুখীন ও আন্দোলন
সনাতন ধারার ডিভিশন ফলাফলে ৬০ শতাংশ মার্কস পেলে প্রথম বিভাগ ধরা হয়। চাকরির ক্ষেত্রেও এটিকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে নিয়োগ শর্তে প্রথম বিভাগ চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রেডিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে চাকরির কোয়ালিফিকেশনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পয়েন্ট চাওয়া শুরু করে। ফলে সনাতন বিভাগ পদ্ধতির সাথে গ্রেডিং পদ্ধতির মধ্যে সঙ্কট ও অসমতা সৃষ্টি হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০০৯ সালের ১ এপ্রিলে সনাতন বিভাগ পদ্ধতির সঙ্গে বর্তমানে প্রচলিত গ্রেডিং পদ্ধতির মধ্যে সমতা বিধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সব ধারায় আগের প্রথম বিভাগকে বর্তমানে জিপিএ ৪ (প্রাপ্ত নম্বর ৭০-৭৯) থেকে ৫ (৮০-১০০) এর সমমান করা হয়। দ্বিতীয় বিভাগকে করা হয় জিপিএ ৩ (৫০-৫৯) থেকে ৩ দশমিক ৫ (৬০-৬৯) পর্যন্ত এবং তৃতীয় বিভাগকে করা হয় জিপিএ এক (৩৩-৩৯) থেকে দুই (৪০-৪৯) এর সমতুল্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও সমতার বিধান করে। কিন্তু ২০০১ থেকে ২০০৩ সালে মাধ্যমিক ও ২০০৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা সরকারের ওই মান প্রমিতকরণ না মেনে এ নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। ১৩ মে ২০০৯ পরীক্ষায় গ্রেডিং ও বিভাগ পদ্ধতির সমতা বিধান নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে একটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (কলেজ) মাইনুদ্দীন খন্দকারকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিদের সদস্য করা হয়।
সনাতন বিভাগ পদ্ধতির সাথে গ্রেডিং পদ্ধতির সমতা আনয়ন
২ জুন ২০০৯ গঠিত কমিটি প্রস্তাবনার আলোকে সরকার পরীক্ষায় গ্রেডিং ও বিভাগ পদ্ধতির সমতা বিধানে নতুন মাপকাঠি নির্ধারণ করে। সেখানে ২০০১ থেকে ২০০৩ সালের এসএসসি ও সমমান এবং ২০০৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য এক ধরনের এবং ২০০৪ থেকে এর পরের শিক্ষার্থীদের জন্য আরেক রকম মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে শুরু করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সব ধারায় আগের প্রথম বিভাগকে বর্তমানের জিপিএ ৪ বা তদূর্ধ্ব জিপিএ’র সমমান করা হয়েছে। অর্থাৎ জিপিএ ৫ পর্যন্ত এই বিভাগ ধরা হবে। দ্বিতীয় বিভাগকে করা হয়েছে জিপিএ ৩ বা তদূর্র্ধ্ব কিন্তু জিপিএ ৪-এর কম এবং তৃতীয় বিভাগকে করা হয়েছে জিপিএ এক বা তদূর্র্ধ্ব কিন্তু জিপিএ ৩-এর কম। তবে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ এর এসএসসি ও সমমান এবং ২০০৩ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রথম বিভাগকে বর্তমান জিপিএ ৩ দশমিক ৫০ বা তদূর্ধ্ব জিপিএ এর সমমান করা হয়। দ্বিতীয় বিভাগকে করা হয়েছে জিপিএ ২ দশমিক ৫০ বা তদূর্ধ্ব কিন্তু ৩ দশমিক ৫০এর কম জিপিএ এবং তৃতীয় বিভাগকে জিপিএ এক বা তদূর্ধ্ব কিন্তু ২ দশমিক ৫০ এর কম জিপিএ’র সমতুল্য করা হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ’র ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ বা তদূর্ধ্ব নম্বরকে প্রথম বিভাগ, ৪৫ বা তদূর্ধ্ব কিন্তু ৬০ শতাংশের কম নম্বরকে দ্বিতীয় বিভাগ এবং ৩৩ বা ততোধিক কিন্তু ৪৫ শতাংশের কম নম্বরকে তৃতীয় বিভাগের সমমান হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় যে স্কেলে (৪ থেকে ৫) সিজিপিএ প্রদান করে তাকে ৮০ শতাংশ এর সমান নম্বর ধরতে বলা হয়। অর্থাৎ কোনো শিক্ষার্থী ৪ স্কেলে জিপিএ ৩ পেলে সেটি প্রথম বিভাগের সমান এবং ৫ স্কেলে এই জিপিএ পেলে সেটি হবে দ্বিতীয় বিভাগের সমান।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ এর এসএসসি ও সমমান এবং ২০০৩ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়। সরকার এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চাকরির যোগ্যতা নির্ধারণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়।
চাকরির নিয়োগ কোয়ালিফিকেশনে সরকারের সমতা বিধান কার্যকর হচ্ছে না
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগসহ গুরুত্বপূর্ণ সব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে কিছু ক্রাইটেরিয়া দেয়া হয়, যেগুলো পূরণ সাপেক্ষে একজন প্রার্থী আবেদনের যোগ্যতা লাভ করে। এই ক্রাইটেরিয়াগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল। বর্তমানে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের আবেদনের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ন্যূনতম কোয়ালিফিকেশন হিসেবে সনাতনী প্রথম বিভাগ এবং জিপিএ ৪.২৫ কে শর্ত হিসেবে আরোপ করা হয়। আবার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ৪.০০। কিন্তু কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ ৪.০০ কম পেয়ে আবেদনের সুযোগ রাখা হয়নি। কিন্তু সনাতনীর ক্ষেত্রে সব জায়গায় প্রথম বিভাগ চাওয়া হয়। অথচ সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জিপিএ ৩.৫০-কে প্রথম বিভাগ হিসেবে উল্লেখ করা হয় না। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে জিপিএ এর ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নির্দেশনা না মানার ফলে চরম বৈষম্য তৈরি হয়েছে, যা দূরীভূত হওয়া সময়ের দাবি।
বৈষম্য উত্তরণে সুপারিশ
সব নিয়োগের ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতির ফলাফল এবং প্রচলিত জিপিএ’র সমতা বিধান কার্যকর করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ সব নিয়োগ প্রজ্ঞাপনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের ক্ষেত্রে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের শিক্ষার্থীদের কোয়ালিফিকেশন শর্ত হিসেবে জিপিএ ৩.৫০ তদূর্ধ্ব (প্রথম বিভাগ), ২.৫০ তদূর্ধ্ব (দ্বিতীয় বিভাগ) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা। কারণ ২০০৯ সালের সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে যারা জিপিএ ৩.৫০ পেয়েছে তাদের ফলাফল ধরা হয়েছে সনাতন প্রথম বিভাগ এবং প্রচলিত গ্রেডিংয়ের ২০০৪ সালের পরের জিপিএ ৪.০০ এর সমান এবং ২.৫০ তদূর্ধ্ব ধরা হয়েছে দ্বিতীয় বিভাগ।
অথবা যেহেতু সনাতন ডিভিশন পদ্ধতিতে প্রথম বিভাগ হলো ৬০০ মার্কে। সেহেতু ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের শিক্ষার্থীদের সর্বমোট নম্বরের সমন্বয় ব্যবস্থার মাধ্যমে সনাতন পদ্ধতির বিভাগ ফলাফলের সাথে সমন্বয় করা।
পরিশেষে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশে সনাতন ডিভিশন পদ্ধতির সাথে গ্রেডিং পদ্ধতির ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের এসএসসি, এইচএসসি ও সমমান ফলাফলের বৈষম্য দূর হবে এবং সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সমতার বিধান কার্যকর হবে এই প্রত্যাশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা