মহাকবি আলাওল
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
আজ ১৪ জানুয়ারি মহাকবি আলাওলের মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ছিলেন মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। আনুমানিক ১৬০৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় বর্তমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রামে (মতান্তরে ফরিদপুর জেলার ফতেয়াবাদ পরগনার জালালপুর গ্রামে) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন ফতেয়াবাদের অধিপতি, মজলিস কুতুবের একজন অমাত্য। অভিজাত পরিবারের সন্তান হিসেবে আলাওল বাল্যকালেই বাংলা, সংস্কৃত, আরবি ও ফারসি ভাষা শেখেন। যুদ্ধবিদ্যা ও সঙ্গীত বিষয়েও তার জ্ঞান ছিল।
এ সময় তার কবিপ্রতিভার স্ফুরণ ঘটলে প্রধান অমাত্য, কোরেশী মাগন ঠাকুরের (১৬৪৫-৫৮) আনুকূল্যে তিনি আরাকানের রাজসভায় স্থান পান। সৈয়দ মুসা (রাজ-অমাত্য), সোলায়মান (প্রধান অমাত্য), মোহাম্মদ খান (সৈন্যমন্ত্রী) ও মজলিস নবরাজ (রাজস্বমন্ত্রী) কবিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তিনি তাদের কাছ থেকে সাহিত্যচর্চা ও গ্রন্থ রচনায় প্রেরণা লাভ করেছিলেন।
১৬৫৯-৬০ সালে মোগল সম্রাট শাহজাহানের ছেলে ও বাংলার সুবাদার শাহ সুজা রোসাঙ্গে (আরাকান) আশ্রয়প্রার্থী এবং রোসাঙ্গ রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সপরিবারে নিহত হন। এই বিদ্রোহের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আলাওল ৫০ দিন কারাভোগ ছাড়াও আর্থিক বিপর্যয়ে ভিক্ষাবৃত্তি দ্বারা স্ত্রী-সন্তানসহ প্রায় ১০ বছর কাটাতে বাধ্য হন। শেষ বয়সে আধ্যাত্মিক গুরু মসউদ শাহ তাকে ‘কাদেরী খিলাফত’ প্রদান করেছিলেন। তার আখ্যানকাব্য হচ্ছে- পদ্মাবতী (১৬৪৮), সতীময়না-লোর-চন্দ্রানী (১৬৫৯), সপ্তপয়কর (১৬৬৫), সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল (১৬৬৯) ও সিকান্দরনামা (১৬৭৩); নীতিকাব্য তোহফা (১৬৬৪) এবং সঙ্গীতবিষয়ক কাব্য রাগতালনামা। এ ছাড়া কিছু গীতিকবিতা আছে। রাগতালনামা ও গীতিকবিতাগুলো তার মৌলিক রচনা; অন্যগুলো অনুবাদ।
পদ্মাবতী মালিক মোহাম্মদ জায়সীকৃত হিন্দি পদুমাবত, সতীয়ময়না-লোর-চন্দ্রানী সাধনকৃত ‘মৈনাসত’, সপ্তপয়কর নিজামী গঞ্জভীকৃত ফারসি ‘হফত পয়কর’, তোহফা ইউসুফ পদাকৃত ফারসি ‘তুহুফ-এ-নাসাঈহ’, সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল গাওয়াসিকৃত ফারসি এবং সিকান্দরনামা নিজামী গঞ্জভীকৃত ফারসি আখ্যান কাব্য অনুসরণে রচিত। ‘পদ্মাবতী’ তার সর্বশ্রেষ্ঠ রচনা। নাগরিক শিক্ষা, বৈদগ্ধ ও অভিপ্রায় তার কাব্যের ভাব-ভাষা-রুচিতে প্রভাব বিস্তার করেছে। দরবার-সংস্কৃতির সব লক্ষণই তার রচনায় প্রতিফলিত। কাব্যিক আবেগের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনার সংমিশ্রণ থাকায় আলাওলকে ‘পণ্ডিতকবি’ বলা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা