স্মরণ : শিশুসাহিত্যিক গোলাম রহমান
- মীযানুল করীম
- ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আজ প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক গোলাম রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার কয়েকদিন পর ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি তাকে রাজধানী ঢাকার বুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তার মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের কোনো তদন্ত হয়নি গত তিন যুগেও, বিচার দূরের কথা। ১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে তিনি শিশুসাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। প্রধানত শিশুতোষসহ বহু বই লিখে বাংলা সাহিত্যের সম্ভারকে করে গেছেন সমৃদ্ধ। আকস্মিক মৃত্যুর সময়ে তার অনেক রচনাই ছিল অপ্রকাশিত। জন্মগ্রহণ করেছিলেন কলকাতায়। প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৯৪৭ সালে। ভর্তি হন কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। ১৯৫০ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পুনরাবৃত্তি অসংখ্য মুসলমানের মতো তার পরিবারকেও বাধ্য করে পাড়ি জমাতে পূর্ব পাকিস্তানে। ১৯৫০ সালে ভর্তি হয়েছিলেন জগন্নাথ কলেজে। পড়াশোনা শেষ না করেই সাংবাদিকতায় যোগ দেন। তিনি কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদে ছোটদের পাতা ও সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদনা করেছিলেন। একই দায়িত্ব পালন করেন ঢাকার দৈনিক ইনসাফে। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনে এই পত্রিকার বেশ অবদান রয়েছে। গোলাম রহমান ১৯৬০ সালে ঢাকা থেকে নিজের সম্পাদনায় শিশুতোষ মাসিক মধুমালা প্রকাশ করেছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের (ইপিইউজে) সহসম্পাদক নির্বাচিত হন। তার প্রকাশনা সংস্থা ‘প্রিমিয়ার বুকস’ ছিল সুপরিচিত। লিখেছেন ছোটগল্প, নাটক, উপন্যাস, জীবনী প্রভৃতি। তার রচিত শিশুতোষ গ্রন্থগুলো হচ্ছে- রকমফের ও পানুর পাঠশালা, বাড়ি নিয়ে বাড়াবাড়ি, আজব দেশে এলিস, বুদ্ধির ঢেঁকি, চকমকি, জ্যান্ত ছবির ভোজবাজি ও রুশ দেশের রূপকথা, ঈশপের গল্প (দ্বিতীয় সংস্করণ ১৯৬৬) প্রভৃতি। বড়দের জন্য নেতা ও রাণী, আমাদের বীর সংগ্রামী ও জীবনের বিচিত্রা। নাটক লিখেছেন চেনামুখ নামে।
বাংলা একাডেমি চার খণ্ডে গোলাম রহমান রচনাবলী বের করেছে। ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারির মধ্যরাতের পর কয়েকজন তরুণ নবাবপুর রোডের বাসা থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন ধোলাই খাল পাড়ে পাওয়া যায় তার লাশ। ওই সময়ের বিশেষ পরিস্থিতিতে কারা প্রভাবশালী ছিল, তা বলাই বাহুল্য। ধারণা করা হয়, রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হয়েই তাকে খুন করা হয়েছিল। বহু আগেই তার ঘাতকদের গ্রেফতার, বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত ছিল সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের। আজ তাকে আমরা ভুলে গেছি। বুদ্ধিজীবী দিবসে কেউ তাকে স্মরণ করে না। তিনি সাংবাদিক ছিলেন। অথচ সাংবাদিকরাও তাকে মনে রাখেননি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা