০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ৬ রজব ১৪৪৬
`

এই মুহূর্তের প্রথম এবং প্রধান ভাবনা

-

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-উত্তর সময়ে এ পর্যায়ে দেশের সব মানুষের মধ্যে আস্থা ও কর্মচাঞ্চল্য বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। চব্বিশের জুলাই-আগস্ট মাসে রক্তক্ষয়ী দিনগুলোতে স্থবির হয়ে পড়ে থাকা ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও অর্থনৈতিক জীবনযাত্রায় জীবন ও জীবিকা সমন্বয় সাধনের অনিবার্যতা উপস্থিত। কিন্তু পণ্য ও সেবা উৎপাদনে অগ্রগতির চাহিদা অনুযায়ী না বৃদ্ধি পাওয়ায় সরবরাহে কিছু ক্ষেত্রে বড় বৈসাদৃশ্য ও বেমানান বাড়াবাড়িতে সমাজ ও অর্থনীতির দৈন্য ও দুর্দশা ফুটে উঠেছে। প্রতীকী উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ইলিশের সংগ্রহে ভাটা সত্ত্বেও একদিকে ইলিশ রফতানির প্রয়াস যেমন চলেছে, অন্যদিকে বর্ধিত চাহিদা মেটানোর মতো উৎপাদন বা ধরার উদ্যোগে ভাটা পড়ায় মাছটির দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে মুখরোচক সংবাদ শিরোনামে পরিণত হতে পারে। যত দাম হাঁকা হোক না কেন, প্রতিযোগিতা করে যেন কেউ কেউ ইলিশ কিনেছেন- ভাবখানা এই ইলিশ না হলে যেন চলে না। চড়া দামে ইলিশ কেনার মানুষ আছে বলে ইলিশের চড়া দাম হাঁকার অবকাশ তৈরি হয়েছে। সরবরাহ ও চাহিদার এ মহামহিম দূরত্বের দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীরও দাম হু হু করে বাড়ে, আকাশচুম্বী দাম হাঁকা হয়ে থাকে। এ অবস্থায় সমাজে আর্থিক বৈষম্যের বিবর আরো বেদনাদায়কভাবে উন্মোচিত হয়।
বাংলাদেশ অর্থনীতির চালচিত্র, এর আবহমান সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ- করোনাকালে কিংবা করোনা-উত্তর পরিবেশে ভেদাভেদ ভুলে পুরনো দিনের বেদনা ও বৈষম্যের জঞ্জাল সরিয়ে নতুন দিনের আলো অবগাহনের মতো গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা ও পরিতৃপ্তিকে উপভোগ করার চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক হতে চলেছে সামাজিক অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধির মতো বিষয়ের এ অতি অস্বাভাবিক আচরণে।
প্রভূত পরিসংখ্যান, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ও পটভূমিতে আজ এটি স্পষ্ট হচ্ছে যে, দূরত্ব বাড়ছে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের ও নাগরিকের মধ্যে, করদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে, শিল্পমালিক ও শ্রমিকের মধ্যে, নীতিনির্ধারকের সাথে পোষণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, উৎপাদনকারীর সাথে খুচরা ক্রেতার, ব্যাংকের আমানতকারীদের সাথে ব্যাংক ব্যবস্থাপনার, সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যাশার সাথে আর্থিক খরচে কর্মনৈপুণ্যের, ব্যয় সঙ্কোচন কৃচ্ছ্রতা সাধন পরিবেশেও বলগাহীন ব্যয়ের, সদাচার, সামাজিক ন্যায়নীতিনির্ভরতার সাথে অসদাচার ও নীতিহীনতার, সুশৃঙ্খলা বোধের সাথে উচ্ছৃঙ্খলতার, রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার সাথে ব্যয় ব্যবস্থাপনার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সাথে সাধারণ মানুষের।
সামষ্টিক অর্থনীতিতে চড়া সুদ ও কড়া শর্তের ঋণের টাকা ব্যয়ে অপব্যয়ের জৌলুসের চাকচিক্যের ডামাডোল থামানোতে মনে হতে পারে এটি পুঁজিবাদী মানসিকতা প্রস্তুত এবং বৈষম্যবিলাসী উদাসীন ঊর্ধ্বতনদের ইচ্ছা ও সদ্য অভিলাষ উৎসারিত। এই অগ্রগতি গুণগতমান উন্নয়ন ছাড়া শিক্ষার পাসের হার এবং পার ক্যাপিটা জিডিপি বৃদ্ধির মতো সাময়িক তৃপ্তিলাভের অগ্রগতি মনে হতে পারে- ভূত-ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টিপাত করে নয়- সাময়িকভাবে, নিজেদের মতো করে অর্থনীতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিতভাবে সীমাবদ্ধকরণের প্রয়াস উৎসারিত।
অর্থনৈতিক বৈষম্য-বিভাজন থেকে মুক্তির সংগ্রামে জয়ী যেখানে একটি স্বাধীন সার্বভৌম অর্থনীতির প্রাণবায়ু, সেখানে জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও ন্যায়নীতিনির্ভরতা, নৈতিক মনোবল ও মূল্যবোধ তার সার্বিক অবস্থান এবং উপস্থিতিকে আপাত প্রাণচাঞ্চল্যে ফিরে আসার অজুহাত অবয়বে নিরুৎসাহিত করা চলে না। সেগুলো ক্রমে নির্বাসনে পাঠিয়ে সাময়িক এ প্রগলভতায় সমাজ প্রকৃতপক্ষে আমরা এগোচ্ছি না পেছাচ্ছি তার একটি সালতামামি ও আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন।
মূলত এবং মুখ্যত নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে রাজস্ব আহরণে ঊর্ধ্বমুখী অগ্রযাত্রা শুরু। ১৯৯১-এর শুরুতে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসে। বাংলাদেশে ট্রেডিং-নির্ভরতা থেকে উৎপাদনমুখী অর্থনীতির নবযাত্রা শুরু হয় সেখান থেকে। প্রথম বছরে মূল্য সংযোজন কর আইন পাস ও প্রবর্তিত হয়। ’৯২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লোকবল ও কর্মকাঠামোয় প্রথম সম্প্রসারণ ও সংস্কার আনা হয়। সে সময় বাংলাদেশে ব্যবসায়-বাণিজ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় নতুন উদ্যম, নতুন উদ্যোগ সংযোজিত হওয়ায় অর্থনৈতিক খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটে, এ দশকে তিনবার (১৯৯২, ১৯৯৬ ও ১৯৯৯) ঘোষিত হয় সংশোধিত শিল্পনীতি। ১৯৯৩ সালে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন গঠন, প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড প্রতিষ্ঠা, সাউথ এশিয়ান প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যারেঞ্জমেন্ট (সাফটা) চুক্তি স্বাক্ষরিত এবং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট পাস হয়। ১৯৯৪ সালে প্রথম সেল্যুলার ফোন পদ্ধতি চালু, ১৯১৩ সালের কোম্পানি আইন প্রথম সংশোধন, টাকাকে চলতি হিসাবে লেনদেনের জন্য রূপান্তরযোগ্য ঘোষণা, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অর্থতহবিলের ৮নং আর্টিকেলের মর্যাদা লাভ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ আইন ও বিধিমালা জারি হয়। ১৯৯৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ (আইসিসিবি) গঠিত হয় এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ চালু হয়। ১৯৯৬ সালে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে পাওয়ার সেল গঠন, গ্রাসাধার বিধিমালা জারি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা, প্রাইভেট এক্সপার্ট প্রসেসিং জোন আইন পাস, প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন পলিসি ঘোষণা।
নব্বইয়ের দশকের প্রথমার্ধে ব্যবসায়-বাণিজ্য বিনিয়োগ উৎপাদন তথা আর্থিক খাতে যুগোপযোগী আইন প্রবর্তন, নীতি নিয়মপদ্ধতিতে পরিবর্তন ও সংস্কার হওয়ায় রাজস্ব আহরণের উপায় উন্নতি দৃশ্যগ্রাহ্য হয়। মূসক আইন প্রবর্তনসহ বেশ কয়েকটি রেগুলেটরি সংস্থা প্রতিষ্ঠায় কর রাজস্ব আহরণের প্রকৃতি বিস্তৃত হয় ও সার্বিক রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত যে, তখন পর্যন্ত শুধু আমদানি শুল্ক ছিল রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস। মূল্য সংযোজন কর প্রবর্তনে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ও বিপণন এবং আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সম্পূরকসহ শুল্ক হিসাবায়ন ও আদায় অভিযাত্রায় একটি গুণগত পরিবর্তন সূচিত হয়। একই সাথে উঠে আসে ভোক্তা প্রদত্ত পরোক্ষ (পণ্য ও সেবা) কর হিসাব ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধির তাগিদ। তবে প্রথম দিকে এ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হতে এবং করদাতা ও আহরণকারী উভয়পক্ষের মধ্যে নানান অনুযোগ অজুহাতে এক ধরনের ‘সময় নেয়ার’ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
অর্থনীতির যখন সবে বড় হওয়া শুরু সে সময় নতুন ভ্যাট আইন হঠাৎ করে কিছুটা হলেও গোলকধাঁধার পরিবেশ সৃষ্টির দ্যোতক হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে এর গ্রহণ ও প্রয়োগ যোগ্যতায় আনা হয় সংস্কার। ২০১২ সালে (কথিত) নতুন ভ্যাট আইনটি পার্লামেন্টে নতুন মোড়কে পাস করা হলেও ১৯৯১ সালের মতো ব্যবসায়ীদের অব্যাহত অনুযোগ অজুহাত এবং যা মোকবেলায় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দীর্ঘসূত্রতায়, সর্বোপরি এ আইন বাস্তবায়নে দৃঢ়সঙ্কল্প রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অপ্রতুলতায় এটি প্রকৃতভাবে প্রবর্তিত হতে পারেনি বিগত ৯ বছরেও।
বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যবস্থাকে একটি স্বয়ংক্রিয় ও যুক্তিযুক্ত ভিত্তি প্রক্রিয়ার ওপর দাঁড় করাতে ইতোমধ্যে গঠনমূলক বেশ কিছু উদ্যোগ গৃহীত হলেও পরবর্তীকালে সেসব প্রয়াস প্রচেষ্টায় যথাযথ ফলোআপ ছিল না। ফলে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে রাজস্ব আহরণের আওতায় আনতে শুধু বেগ পেতে হয়নি বা হচ্ছে না; এখানে বেশ কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতিও অনুপ্রবেশ করে। শুল্ক হার নিরূপণ নির্ধারণে ট্যারিফ কমিশনের তথ্য-উপাত্ত ও যুক্তি সরবরাহের প্রশ্নে এনবিআরের সাথে ট্যারিফ কমিশনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা বেড়ে যায়, যোগাযোগ হ্রাস পায়। আমদানি পণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণ ও শুল্কায়নের স্বার্থে প্রাক জাহাজীকরণ ইন্সপেকশন পদ্ধতির প্রতি ঝুঁকে পড়ে শুল্ক বিভাগ। এখানে বিদেশী ভেন্ডরদের বাংলাদেশে এ কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে এবং তাদের কর্মকাণ্ডে যথেষ্ট অস্পষ্টতা ও অনিয়ম এখানে যুগলবন্ধী হয়ে ওঠে। পিএসআই কোম্পানিগুলোর দায়িত্বহীনতা ও দুর্নীতির মহড়া দেখা যায়। এনবিআরের লোকবল ও কর্মপদ্ধতির উন্নয়ন অভীপ্সায় বিশেষ করে ভ্যালুয়েশন এবং শুল্কায়নে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি প্রয়োগের লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও ডিএফআইডির অর্থায়নে বেশ কয়েকটি গুচ্ছ প্রকল্প (যেমন- কাস্টমস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মডার্নাইজেশন বা ক্যাম; এক্সাইজ, কাস্টমস, ট্যাক্সেশন ‘ইটাক’ ডাটা কম্পিউটারাইজেশন) বাস্তবায়নের মহড়া শুরু হয়। এসব প্রকল্প মেয়াদান্তে শেষ হলেও এগুলোর রেখে যাওয়া সুপারিশ, প্রবর্তিত পদ্ধতি সফটওয়্যার প্রয়োগ বাস্তবায়ন ফলাবর্তনে সবসময় সক্রিয়তা লক্ষ করা যায়নি। বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফ রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংস্কার আনার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি ও স্ট্রাকচারাল রিফর্মস প্রোগ্রামের মধ্যে শর্ত (ট্রিগার) আরোপ করে তার বাস্তবায়নে চাপ দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক আইএমএফ বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ অনুসরণে ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করা অতীতে না গেলেও এখন যাওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই।
এ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি বিষয় বেশ চ্যালেঞ্জিং আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। এ জন্য যে- ১. এ সরকার পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া গঠিত হতে হয়েছে; ২. এ সরকারের একমাত্র সমর্থক সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা; ৩. এ সরকারের বিরূপ প্রতিপক্ষ পতিত সরকারের লক্ষ কোটি উচ্ছিষ্টভোগী, সুবিধাভোগী, দলীয় প্রশাসন ও বাহিনী, বিদেশী অ্যাজেন্ট, আইন বিভাগের বশংবদ বিরূপ পক্ষ, পটপরিবর্তনে সংক্ষুব্ধ এবং ভীতসন্ত্রস্ত সবাই; ৪. এ সরকারকে ব্যর্থ করতে পারা মানে পতিতদের পুনর্বাসনে সহায়ক হওয়া, যে ভূমিকায় দেশীয় দালাল এবং বিদেশী বিশেষ বুদ্ধিদাতা, ইন্ধনদাতা, ঐতিহাসিক প্রতিপক্ষ যারা ব্রিটিশের বদান্যতায় বঙ্গভঙ্গ রদ (১৯০৫-১১ থেকে শুরু করে ১৯৪৭ এ ভারত ভাগ এবং পাকিস্তানি আমল (১৯৪৭-৭১) পর্যন্ত প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রকে অকার্যকরণে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভূমিকায় ছিল; ৫. পতিত সরকার ঠাণ্ডা মাথায় প্রশাসন, স্থানীয় সরকারব্যবস্থা, অর্থনীতি, ব্যাংক খাত, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে আত্মঘাতী পদক্ষেপের দ্বারা দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বকে ভূ-রাজনীতির ভায়রা ভাইদের কাছে লিজ দেয়ার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছিল। সুতরাং গণহত্যায় লিপ্ত পরাজিত বাহিনী, দলীয় বাহিনী, প্রশাসন ও বিরাষ্ট্রীয়কৃত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পরোক্ষ অসহযোগিতায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক কর্মতৎপরতার নাকাল পরিস্থিতি মোকাবেলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যতিব্যস্ত রাখা হচ্ছে। শত-সহস্র দাবি-দাওয়া পেশ এবং শৃঙ্খলা ও জনচলাচল বিঘœ ঘটানোর সুযোগ নেয়া- এটিও যেন সেই ষড়যন্ত্রের অংশ। বাইরের হুমকি ধমকি এবং বশংবদ ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার তো আছেই। আর এসবের দায়-দায়িত্ব চাপাতে তৎপর ঘরে-বাইরে অবস্থানরত নেপথ্য এমন এক শক্তি, যে শক্তির রোষানলে বরাবর বাংলাদেশ। তা এমন এক শক্তি যা কোনো রাষ্ট্র ও সরকারকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বা সরকারে প্রতিপন্ন করতে তৎপর। Daron Acemoglu & James A. Rabinson, ‘,Why Nations Fail, The Origins of Power, Prosperity and Poverty,( Profile Books, London, 2013) গ্রন্থে এমন কয়েকটি দেশের পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন।
বিগত পাঁচ দশকে যেসব ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে এর বিপরীতে বিগত ১৫ বছরের অতি প্রচারে অন্তঃসারশূন্য অধিকাংশ সেবা উন্নয়ন ও সাফল্যকে টেকসই ও অর্থনীতিতে তার স্থায়ী অধিষ্ঠান ও অগ্রগতি সহগামী হতে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে। যার মুখ্য শনাক্তযোগ্য কারণ দূরত্ব পরস্পরের মধ্যে সেবক ও সেবাগ্রহীতার, চিন্তা-চেতনার , চাহিদা ও সরবরাহের, স্বপ্ন ও সত্যের, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির।
লেখক : সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান


আরো সংবাদ



premium cement