বাংলাদেশ আমেরিকার সম্পর্ক
- প্রফেসর এম এ রশীদ
- ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
বাংলাদেশ ও আমেরিকার সম্পর্ক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক দিক থেকে বহুমাত্রিক। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের শুরু ১৯৭২ সালে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতি দেয় এবং এর পর থেকে দেশটি বাংলাদেশে বিনিয়োগ, বাণিজ্য, মানবাধিকার ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। বিশেষ করে তৈরী পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রধান আমদানিকারক। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হয়, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিশাল চাহিদা পূরণ করছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে, যা এ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উন্নয়ন সংস্থা USAID (ইউএসএইড) এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং কৃষি খাতে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করে থাকে। ইউএসএইডের সহযোগিতায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হ্রাস, শিক্ষার প্রসার এবং কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে।
মার্কিন বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন বিনিয়োগ রয়েছে। যেমন, তৈরী পোশাক, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং আইটি খাত। বাংলাদেশের জন্য আমেরিকার বিনিয়োগের প্রয়োজনের কারণগুলো হলো :
১. অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ করলে দেশে নতুন শিল্প ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান বাড়বে। জনগণ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সরাসরি কর্মসংস্থান তৈরি করা ছাড়াও ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উপকৃত করে, যা সাধারণ অর্থনীতির চাকা আরো দ্রুততর করে।
২. প্রযুক্তি ও জ্ঞান স্থানান্তর
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞ জ্ঞান নিয়ে আসতে পারে। তা দেশের উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বাড়ায়। বিশেষ করে আইটি, স্বাস্থ্যসেবা ও কৃষিতে মার্কিন বিনিয়োগ হলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। দেশীয় ব্যবসাগুলোও উন্নত প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারবে। এতে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে আরো প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠতে সক্ষম হবে।
৩. রফতানি বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরী পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের অন্যতম প্রধান বাজার। এই খাতগুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানো হলে, বাংলাদেশ রফতানি বাড়ানোর সুযোগ পাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়বে। এই বিনিয়োগ দেশীয় শিল্পকে আরো প্রতিযোগিতামূলক করবে এবং পণ্যের গুণগত মান উন্নত করবে, যা বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করবে।
৪. পরিবেশবান্ধব শিল্প উন্নয়ন
মার্কিন বিনিয়োগের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও নীতি গ্রহণে বাংলাদেশের শিল্প খাত উপকৃত হতে পারে। উন্নত দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র পরিবেশসম্মত উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণে অভ্যস্ত, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে, পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।
৫. বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন
যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ থেকে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা মানে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির চাপ আরো বেড়ে যাওয়া। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রক্রিয়াগত ও নীতিগত সংস্কার প্রয়োজন, যাতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি আরো সহজ এবং নিরাপদ হয়। মার্কিন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব সংস্কারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে, যা অন্যান্য দেশ থেকেও বিনিয়োগ আনার পথ উন্মুক্ত করবে।
৬. বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কও আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। অর্থনৈতিক সম্পর্কের এই দৃঢ়তা রাজনৈতিক সহযোগিতাকে উন্নত করবে এবং উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে আরো ভালোভাবে সহযোগিতা করতে পারবে।
সার্বিকভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কৌশলগত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয়। এজন্য বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক মূলত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহযোগিতামূলক হলেও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। উভয় দেশ সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমানো এবং মানবাধিকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করে। সন্ত্রাস দমন ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
তবে, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের মতো বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে মাঝে মাঝে ভিন্নমত দেখা যায়। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ধরনের ইস্যুতে দেশটি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দেয় বা সমালোচনা করে, যা কখনো উভয় দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায়ও উভয় দেশ একসাথে কাজ করছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম হওয়ায়, যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু তহবিল, প্রযুক্তি সহায়তা এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সহযোগী হিসেবে কাজ করে।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এই ভিন্নমতগুলো সাধারণত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয় এবং উভয় দেশই সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী।
নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা ও সামরিক খাতে ঘনিষ্ঠ অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তি এবং লজিস্টিক সহায়তা দেয়। বাংলাদেশী সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেন। এটি তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে সহায়ক।
মানবপাচার রোধে উভয় দেশ একযোগে কাজ করছে। বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে সমুদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি অবৈধ মৎস্য আহরণ, মানব ও মাদকপাচার প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কমান্ড (ইউএস ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড) এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাথে বাংলাদেশ নিয়মিত অংশীদারত্বের ভিত্তিতে যৌথ সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে।
এই সহযোগিতা শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই নয়, বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম বৃহৎ অবদান রাখা দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা পেয়ে আসছে। দুই দেশ নিরাপত্তা খাতে একত্রে কাজ করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখছে।
শিক্ষা খাতে সহযোগিতা
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শিক্ষা খাতেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। প্রতি বছর বহু বাংলাদেশী শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায় এবং শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চমানের শিক্ষার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচুর আগ্রহ রয়েছে, যা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সম্পর্ক আরও গভীর করছে।
ফুলব্রাইট স্কলারশিপসহ অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি বৃত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়। ফুলব্রাইট স্কলারশিপের মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে পড়াশোনা ও গবেষণা করতে পারে, যা পরে বাংলাদেশে তাদের দক্ষতা প্রয়োগে সহায়ক হয়। এই স্কলারশিপ প্রোগ্রাম দুই দেশের মধ্যে শিক্ষার আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের কারণে সমস্যা
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ জোরদার হয়েছে, বিশেষ করে অর্থনীতি, সামরিক ও কৌশলগত ক্ষেত্রে। এ কারণে বাংলাদেশের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এটি সরাসরি কোনো সঙ্কটের সৃষ্টি না করলেও কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। প্রধান সমস্যাগুলো হলো :
১. কৌশলগত ও আঞ্চলিক ভারসাম্য
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের গভীরতা বাড়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন কৌশলগত ভারসাম্য তৈরি হয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও কৌশলগত উপস্থিতি বৃদ্ধির কারণে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে উঠেছে। এটি আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে এবং বাংলাদেশকে কখনো চিঁড়েচ্যাপ্টা অবস্থানে ফেলে দিতে পারে।
২. প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যু
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো, যেমন BECA, LEMOA এবং COMCASA, ভারতের সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করছে। এর ফলে ভারত দক্ষিণ এশিয়া এবং বঙ্গোপসাগরে আরো শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশকে তাই আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির সাথে আরো সতর্ক থাকতে হচ্ছে এবং অনেক সময় নিজস্ব প্রতিরক্ষানীতি নিয়ে সমন্বয়ের চাপে পড়তে পারে।
৩. অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশ-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্কে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য বড় রফতানি বাজার হলেও, ভারত-আমেরিকা অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং উভয়ের মধ্যে অধিক বাণিজ্যসুবিধা চালু হলে বাংলাদেশের জন্য প্রতিযোগিতায় কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।
৪. কূটনৈতিক চাপ
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায়, বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক বা মানবাধিকার ইস্যু হলে এ দুই দেশের কাছ থেকে সমন্বিত চাপ আসার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসাথে অবস্থান নিলে, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ মোকাবেলা করতে হতে পারে।
৫. চীন-ভারত প্রতিদ্বন্দ্বিতা
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের অন্যতম কারণ হলো চীনকে প্রতিহত করা। বাংলাদেশ চীনের সাথে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতায় জড়িত। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশকে মাঝে মধ্যে চীন এবং ভারত-যুক্তরাষ্ট্র জোটের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার কৌশলগত চাপে পড়তে হয়।
বাংলাদেশের করণীয়
এই চ্যালেঞ্জগুলো সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখতে চায়, যা তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে। বাংলাদেশ সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়ার মাধ্যমে নিজের স্বার্থ রক্ষা করে।
লেখক : সিনিয়র ফেলো, এসআইপিজি, নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি
e-mail : [email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা