২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শেখ হাসিনাকে ফেরত পেতে জটিলতা

-


কাছেই আছি, যেকোনো সময় চট করে চলে আসব- নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার এমন ঘোষণা বা আশ্বাসের বাস্তবায়নের নমুনা নেই। সময়ের ব্যবধানে তিনি বীরের বেশে প্রত্যর্পণ করবেন সে আলামতও নেই। বিপরীতে সরকারের দিক থেকে যেভাবে বলা হচ্ছে, তাকে ধরে এনে কঠিন বিচার করা হবে- সে লক্ষণও ক্ষীণ। তার উপস্থিতিতে বিচার হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে ভারতের সদিচ্ছার ওপর। দিল্লি যদি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার আগমন ভারত থেকে। ২০২৪ সালে নির্গমণ সেই ভারতে। যেখান থেকে এসেছেন সেখানে ফিরে গেছেন। তার অকৃত্রিম ভরসাস্থল ভারত। যা তিনি গোপন রাখেননি। ক্ষমতায় থাকতে ঘটনাচক্রে নিজ মুখে বলেছেন, ‘ভারতকে যা দিয়েছি তা তাদের আজীবন মনে রাখতে হবে’। অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ হয়েছে- ভারত তা মনে রেখেছে। কেবল ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নয়, কংগ্রেসসহ ভারতের সব ক’টি দল সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে আশ্রয় দিয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘পদত্যাগ করে’ শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ভারতে চলে যাওয়ার পর দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও বিরোধী দল কংগ্রেসসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সংসদের ভেতরে-বাইরে দফায় দফায় বৈঠকে বসে। বলার অপেক্ষা রাখছে না, ভবিষ্যতেও শেখ হাসিনার ভালোর জন্য যা যা করা দরকার, দিল্লি তা করবে।

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান দুই দেশের রাজনীতির সমান্তরালে কূটনীতিরও বিষয়। তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃস্থানীয়দের চাপ রয়েছে। সরকার তা গ্রাহ্যও করছে। যে কারণে তাকে ফেরত পেতে দিল্লিকে ঢাকার কূটনৈতিক পত্র। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তির (এক্সট্রাডিশন ট্রিটি) অধীনে শেখ হাসিনাকে চাওয়া হয়েছে। দিল্লি পত্রটি গ্রহণ করেছে। গ্রহণ করেছে মানে গ্রাহ্য করেছে, তা নয়। বাকিটা বোঝা যাবে তাদের এ-বিষয়ক প্রতিক্রিয়ার পর। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো উত্তর না এলে বাংলাদেশ একটি অনুস্মারক চিঠি পাঠাতে পারবে। এ দিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত সাবেক শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা না গেলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ এগিয়ে নেয়ার ইঙ্গিত আছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কথায়। শেখ হাসিনা নিজে আদালতে উপস্থিত না হলে কিংবা ভারত তাকে ফেরত না দিলে কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে এসেছে কথাটি।

কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলার ব্যবস্থা আইনে আছে। আবার আরেক বাস্তবতা হচ্ছে, যে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, সেই চুক্তি অনুযায়ী দুই রাষ্ট্র যেমন- দু’পক্ষ, বর্তমান বিবেচ্য ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা নিজেও একটি পক্ষ। এ কারণে রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের দিক থেকে তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয় যেমন আছে, তিনি নিজে ফিরতে চাইবেন কি না, ঢাকা ফিরে আদালতে বিচার মোকাবেলা করবেন কি না, সেটিও ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়। ভারতের কাছে শেখ হাসিনা শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি বাংলাদেশে তাদের পরীক্ষিত, বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন একমাত্র মিত্র। কাজেই তাকে বিচার করে সাজা দিতে ভারত সরকারিভাবে ফেরত দেবে, এমন সম্ভাবনা নেই বললে চলে। তাই বলে নিজের সিদ্ধান্তে কিংবা ভারত সরকারের মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশে এসে রাজনীতি শুরু করে দেবেন, এমন আশঙ্কাও নেই। বিষয়টি দুই দিক থেকেই জটিল। তৃতীয় কোনো পক্ষের কিছু কী করার আছে, শেখ হাসিনার বিষয়ে? এ প্রশ্নও ঘুরছে। কিন্তু স্পষ্ট জবাব নেই। পারিপার্শ্বিকতায় এখানে ভারতের মতিগতিই মুখ্য। বাংলাদেশ বা তৃতীয় কেউ চাইলেও শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা সম্ভব নয়, সে বার্তা দেয়া হচ্ছে নানান দিক থেকে।

এক দেশের নাগরিককে অন্য দেশ থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উষ্ণ রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং যাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, তার বিষয়ে ওই সরকারের অবস্থান। শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ভারতের অত্যন্ত পেয়ারের। ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা পাল্টে গেলেও শেখ হাসিনার বিষয়ে ভারত বদলে যায়নি। মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। এক সময় আসামের অধিকার নিয়ে সোচ্চার নেতা অনুপ চেটিয়াকে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে দিল্লির হাতে তুলে দেয় দুই দেশের বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী। শেখ হাসিনা তা করেন। এখন দিল্লি সেই হাসিনাকে ঢাকার হাতে তুলে দেবে- এমন আশাবাদী একটি মহল। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ২০১৫ সালে আসামের স্বাধীনতাকামী সংগঠন উলফার শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়া, লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামী, বাবুল শর্মাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে বাদল ফারাজি নামের এক বাংলাদেশীকে ভারত বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমে ঢাকার কাছে হস্তান্তর করে। একই প্রক্রিয়ায় দিল্লিতে পলাতক শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে ঢাকার চিঠি দেয়ার যুক্তি আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হত্যাকাণ্ড, গত ১৬ বছরে গুম-ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড মোটাদাগে এ কয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসেছে। শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভা, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তিটি ২০১৩ সালে করা হলেও ২০১৬ সালে মূল চুক্তিটি সংশোধন করা হয়।

সংশোধনের সময় এমন একটি ধারা যুক্ত করা হয় তা হস্তান্তর প্রক্রিয়া বেশ সহজ করে তুলেছে। সংশোধিত চুক্তির ১০ এর (৩) ধারায় বলা হয়েছে) কোনো অভিযুক্তের হস্তান্তর চাওয়ার সময় অনুরোধকারী দেশকে সেই সব অভিযোগের পক্ষে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ না করলেও চলবে। শুধু সংশ্লিষ্ট আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা পেশ করলে তা বৈধ অনুরোধ হিসেবে ধরা হবে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পাদিত বন্দিবিনিময় চুক্তিতে বলা হয়েছে, ন্যূনতম এক বছরের সাজা হতে পারে এমন মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ভারত বা বাংলাদেশকে পলাতক বন্দী হস্তান্তর করতে হবে। হত্যা, গণহত্যা, বোমা হামলা, গুলি করে হত্যা, সম্পত্তির ক্ষতি, গুম-অপহরণ বা জিম্মি করা এবং হত্যার প্ররোচনার মতো অপরাধের মামলায় দুই দেশের পলাতক আসামিকে ফেরত দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে চুক্তিতে। তবে অপরাধ রাজনৈতিক হলে প্রত্যর্পণ উপেক্ষা করা যেতে পারে।

আসামি ধরে আনার আরেক মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারপোল। সে পথেও আছে বাংলাদেশ। জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি মাফিয়া রানী হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির আবেদন করা হয়েছে। এ রেড নোটিশ জারির মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের ফেরত আনতে চায় সরকার। ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করলে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে আনা সম্ভব? বাস্তবে কেবল নোটিশ জারি করে কাউকে ফেরত আনা সম্ভব নয়। খুনি শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। তিনি সেখানে বন্দী নন। তিনি বাংলাদেশের আদালতের দৃষ্টিতে পলাতক আসামি। ভারতের কাছে একজন আশ্রয়প্রার্থী। বন্দিবিনিময় চুক্তিতে কারাগারে থাকা আসামি বা গ্রেফতার করা আসামির কথা বলা আছে। আবার শুনতে যত কঠোর মনে হয়, বাস্তবে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরে আনার রেকর্ড কম। এক হিসাবে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ইন্টারপোলের মাধ্যমে ১৭ জন অভিযুক্ত আসামিকে বাংলাদেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। আর বর্তমানে ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটের রেড নোটিশের তালিকায় বাংলাদেশের ৬৪ জনের নাম রয়েছে। তাদের বেশির ভাগ একাধিক ফৌজদারি অপরাধ ও বিভিন্ন হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।

ইন্টারপোল বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন হলো এমন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেটি সারা বিশ্বের পুলিশ এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞদের একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত ও সমন্বয় করে। এর প্রধান কাজ অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থাকে সহায়তা করা। যেন বিশ্বের সব পুলিশ অপরাধের বিরুদ্ধে এক হয়ে কাজ করতে পারে। একটি দেশের আসামি সেখানে অপরাধ করার পর অন্য দেশে চলে গেলে ওই ব্যক্তিকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা লাগে। সংস্থাটি অপরাধের তদন্ত, ফরেনসিক ডাটা বিশ্লেষণ, সেই সাথে পলাতকদের খুঁজতে সহায়তা করে। ইন্টারপোলের এমন একটি ডাটাবেজ রয়েছে; যেখানে অপরাধীদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য যেমন- ছবি বা স্কেচ, ক্রিমিনাল প্রোফাইল, ক্রিমিনাল রেকর্ড, চুরির রেকর্ড, চুরি যাওয়া পাসপোর্ট, যানবাহন ও জালিয়াতির তথ্য ইত্যাদি পাওয়া যায়। দুর্নীতি, যুদ্ধাপরাধ, সন্ত্রাসবাদ, মানবপাচার, অস্ত্রপাচার, মাদকপাচার, সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, শিশু সহিংসতাসহ ১৭ ক্যাটাগরির অপরাধ তদন্তে ইন্টারপোল সব সদস্য দেশকে সহায়তা দিয়ে থাকে। শেখ হাসিনা খোঁজার আসামি নন। তিনি ভারতে নাম-ঠিকানা নিয়ে রাজমেহমান হয়ে আছেন।
শেখ হাসিনার দিল্লি যাওয়া, তাকে ফেরত চাওয়া ও ফেরত দেয়ার পুরো বিষয়টির মধ্যে রাজনীতি আছে বলে মনে করেন ভারতের হরিয়ানার ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ের অধ্যাপক ড. শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বাংলাদেশের একটি পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি দুই দিকের জন্য খুব জটিল একটি ব্যাপার। কাজেই এটি নিশ্চিত করে বলা যায়, তাকে ফেরত দেয়ার ব্যাপারটি রাতারাতি ঘটবে না।’

অন্য দিকে বাংলাদেশে সরকারের ভেতর-বাইরের কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, শেখ হাসিনার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি এমনকি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নেপথ্যে নানা রকম দর-কষাকষি হতে পারে। এ দর-কষাকষিতে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম পক্ষ হতে পারে, এমনটিও মনে করেন বাংলাদেশের এক ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মনে করেন, ‘চুক্তির কয়েকটি অনুচ্ছেদ (৬ ও ৮) কাজে লাগিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ফেরত না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ আছে। এ ক্ষেত্রে ভারত নিশ্চয় তাকে ফেরত না দেয়ার রাজনৈতিক কী মূল্য হতে পারে, তা বিবেচনায় নেবে।’
একাধিক বাস্তবতা হলো- রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় কোনো দেশ কোনো আসামিকে ফেরত দিতে না চাইলে যেকোনো কারণ দেখিয়ে আবেদন নাকচ করে দিতে পারে। আবার চাইলে আইন বা চুক্তিও লাগে না। তা জটিলও, সহজও।
লেখক : সাংবাদিক
[email protected]

 

 

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
ব্রাজিলে সেতু ধসে নিহত বেড়ে ১০ দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ আইএসপিআরের সপ্তাহের মাঝামাঝি সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে সীমাবদ্ধতা নিয়ে যা জানালো সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে পরকীয়া প্রেমিকের ধর্ষণের শিকার ইউপি সদস্যের মৃত্যু, গ্রেফতার ১ ১৩ বছর পর দেশে ফিরেছেন কায়কোবাদ অর্থপাচারের ফাইল নষ্ট করতেই সচিবালয়ে আগুন দেয়া হয়েছে : রিজভী সিলেট সীমান্তে ভারতীয়র গুলিতে দু’দিনে ২ বাংলাদেশী নিহত ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা ব্যাপক হতাহতের সম্মুখীন

সকল