২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
স্ম র ণ

জননেতা এ বি এম আবুল কাসেম

-

স্কুলশিক্ষক থেকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কিভাবে জাতীয়পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এ বি এম আবুল কাসেম। বর্ষীয়ান এ জননেতা গত বছর ২৪ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন।
১৯৯৬ সালে সাবেক মন্ত্রী এল কে সিদ্দিকীকে হারিয়ে প্রথমবার চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। তৎকালীন অনেক মন্ত্রীকে সীতাকুণ্ডে এনে রাস্তাঘাট, পুল কালভার্ট, মসজিদ, মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অবকাঠামো উন্নয়নে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তারই প্রচেষ্টায় সীতাকুণ্ডে পল্লী বিদ্যুৎ, ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠিত এবং সীতাকুণ্ড সদর ইউনিয়ন পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়।
২০০৮ সালে আবার এমপি নির্বাচিত হয়ে আবুল কাসেম এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছেন। স্বীয় যোগ্যতার দ্বারা এই ত্যাগী নেতা সীতাকুণ্ডবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এমপি মানে জনগণের সেবক, আমজনতার সুখ-দুঃখের নিত্যসঙ্গী; জনপ্রতিনিধি মানে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে রাজধানী কিংবা জেলা শহরে বসে খবরদারি নয়।
সীতাকুণ্ড থেকে এমপি হোস্টেল, সংসদ ভবন থেকে সচিবালয়- প্রতিটি মুহূর্ত ব্যয় করেছেন জনগণের কাজে। প্রতিবারই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য, গ্রামীণ জনপদের নানা এলাকার মানুষের সমস্যা স্বচক্ষে দেখতে ছুটে যেতেন। দল-মত নির্বিশেষে যেকোনো লোক, যেকোনো সময় এমপি কাসেমের শয়নকক্ষে গিয়েও মনের কথা বলতে পারতেন। এমন কোনো রাস্তা খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে তার আমলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
প্রথমবার এমপি হওয়ার পর তিনি প্যানেল স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। দ্বিতীয়বার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি এ বি এম আবুল কাসেম কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন বেশ কয়েক বছর। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবেও তিনি ছাত্র, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসা অর্জন করেন। শিক্ষকতা, রাজনীতি এবং দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধি থাকার সুবাধে নির্বাচনী এলাকা সীতাকুণ্ড, উত্তর পাহাড়তলী ও উত্তর কাট্টলীর প্রায় সব বাড়িঘরে আবুল কাসেম মাস্টারের পদধূলি পড়েছিল।
কারো প্রিয় স্যার, কারো প্রিয় কাশেম ভাই হিসেবে তিনি এলাকবাসীর আপনজন এবং দল-মত ও জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে গণমানুষের প্রিয় নেতার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। গণমানুষের ভাগ্যোন্নয়নে আবুল কাসেম মাস্টার নিজেকে সদা নিয়োজিত রেখেছিলেন। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা কর্মনিষ্ঠা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জীবন সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
মোহাম্মদ সেলিম
লেখক : সম্পাদক, সাপ্তাহিক চাটগাঁর বাণী


আরো সংবাদ



premium cement