‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি’
- ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
- ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পরোপকার করা মানে নিজেরই উপকার করা। মানুষ এককভাবে একক অবস্থানে একক ভাবনায় সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে না। একে-অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতেই হয়। সব মানুষ সমান মেধা, শক্তি ও সামর্থ্যরে অধিকারী নয়। উদ্ভাবনী শক্তি, সৃজনশীল প্রতিভা সবার সমান নয়- পরিবেশও সর্বত্র এক নয়। কিন্তু একে-অন্যের শক্তি ও সামর্থ্যরে ভাগাভাগিতে পরস্পরের উপকার লাভ ঘটে থাকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর বান্দাদের মধ্যে সুযোগের যে বিভিন্ন পর্যায় দিয়েছেন তার মধ্যে থেকে একে অন্যের সাহায্য সহযোগিতা সম্প্রসারণ করে সব সমস্যা মোকাবেলা ও সমাধান সন্ধান করবে- এটি তার মহান শিক্ষা।
আল্লাহ নিজে এসে তার কোনো বান্দার সমস্যার সমাধান করে দেন না। কিংবা তাকে সরাসরি সহযোগিতা করেন না। তিনি তার এক বান্দার মাধ্যমে অন্য বান্দার সমস্যা সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেন। অর্থাৎ যে অন্যকে সাহায্য করার সুযোগ পাবে বা যার সামর্থ্য আছে সে অন্যের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে। এটিই পরোপকার। এই পরোপকার প্রবৃত্তির দ্বারা ঘটে আল্লাহর সেই মহৎ উদ্দেশ্যের বাস্তবায়ন। এই উপকারের ফলে অপর ব্যক্তির সমস্যার সমাধান হওয়া বা করা মানে হলো ওই ব্যক্তির সুখ-শান্তির কারণ সৃষ্টি করা। অপর ব্যক্তি সমস্যার সমাধান পেয়ে নিজে শান্তি পেতে পারে এবং এভাবে সমাজে সবার শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে সবাই শান্তিতে ও সুখে বসবাস করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে হাহাকার হানাহানি কমে যাবে। আমি যদি আমার প্রতিবেশীকে অভুক্ত দেখি কিংবা কোনো সমস্যায় আকীর্ণ দেখি অথচ আমার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা যদি দূর করতে উদ্যোগী না হই তা হলে ওই প্রতিবেশী হয়তো একপর্যায়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আমার ওপর আক্রমণ করে বসতে পারে এবং আমার অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যিনি বেশির ভাগ মানুষের সমস্যার সমাধানে ব্রতী হন তিনি বড় সমাজের শান্তি নিশ্চিত করতে সক্ষম।
উপকারের প্রতিদান অবশ্যই মেলে। সরাসরি না হলেও যেকোনোভাবে হোক উপকারের সুফল পাওয়া যাবেই। এটি প্রকৃতির অমোঘ বিধান। এই জগতে যত প্রাণী বসবাস করে তারা পরস্পরের সহানুভূতি সহায়তার সুযোগেই সমঝোতা ও সহাবস্থানের কারণে বসবাসের সুযোগ পায়। প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এই বোধ ও বিশ্বাসের দ্বারা মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে। কবির ভাষায়- আপনার লয়ে বিব্রত রহিতে/আসে নাই কেহ অবনী পরে/সকলের তরে সকলে আমরা/প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
আরবি ইহসান শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ পরোপকার, সদ্ব্যবহার, ন্যায়বিচার। পরোপকার মহান রাব্বুল আলামিনের তরফ থেকে তাঁর বান্দার প্রতি অশেষ রহমতেরই উত্তম প্রতিদান। আল কুরআনের ২৮ সংখ্যক সূরা কাসাসের ৭৭ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে- ‘আহসিন কামা আহসানাল্লাহু ইলাইকা’ পরোপকার কর যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। সূরা লোকমানের ২০ নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‘তোমরা কি দেখো না আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন এবং তোমাদের প্রতি তার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করেছেন।’ আল্লাহর দেয়া নিয়ামত ভোগের ব্যাপারে মানুষের উচিত রাহমানুর রাহিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন। আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অন্যতম উপায় হলো পরোপকার করা। বস্তুত পরোপকারের দ্বারা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সহানুভূতি প্রকাশ এবং প্রতিযোগিতা, প্রতিহিংসার পরিবর্তে সহায়তা সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আল্লাহ যেমন তোমার প্রতি সদয় হয়েছেন তুমিও তেমন তার সৃষ্টিকুলের প্রতি সদয় বা উপকারী হও। এর ফলে যে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে- সেটিই আল্লাহর বিশেষ পছন্দ।
ইহসান বা পরোপকার মূলত বান্দার হক। সুবিচার করা, সৎ কাজে আদেশ, অন্যায় কাজ নিষেধ, সদালাপ, সদ্ব্যবহার, বিপদে-আপদে সহানুভূতি জানানো, সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা-সঙ্কটে সহানুভূতি জানানো, সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা-সঙ্কট সমাধানে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করা সবই পরোপকারের পর্যায়ে পড়ে। আল কুরআনের ২৫ সংখ্যক সূরা ফুরকানের ৬৩ থেকে ৭৭ নং আয়াতে আল্লাহর বিশেষ ও প্রিয় বান্দাদের ১৩টি গুণ ও আলামত বর্ণিত হয়েছে। এসব গুণের মধ্যে অন্যতম হলো ‘কথাবার্তায় সবসময় সচেতন থাকা, সালামের জবাব দেয়া, কারো মনে আঘাত লাগতে পারে কিংবা বিরূপ ভাব ও সংক্ষোভের উদ্রেক হতে পারে এমন সংলাপ পরিহার করা।’ সুবচন ও সুশীল আচরণ কখনোই শত্রুতা ও বিবাদের জন্ম দেয় না। ইসলামের অভিবাদন পদ্ধতি, সালাম দেয়ার মূল উদ্দেশ্যই হলো পরস্পরের প্রতি সালাম বা শান্তি বর্ষিত হোক- এই ইচ্ছা প্রকাশ বা দোয়া করা। এর অন্যতম বাহ্যিক তাৎপর্য হলো পরস্পরকে এটি জানান দেয়া যে, আমরা একে-অন্যের থেকে নিরাপদ। এটি পরোপকারের একটি মৌলিক ভিত্তি বা পর্যায়।
পরোপকারের প্রথম হকদার নিকটাত্মীয়রা। নিকটজন থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে অসহায় সাহায্যপ্রার্থী সবাইকে সহায়তা দানের নির্দেশ দিয়ে সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‘আল্লাহর ইবাদত করবে, কোনো কিছুকে তার শরিক করবে না এবং মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে।’ সূরা বাকারাহর ৮৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‘মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন এবং দরিদ্রদের প্রতি সদয় ব্যবহার করবে এবং মানুষের সাথে সদালাপ করবে, সালাত কায়েম করবে ও জাকাত দেবে।’ অর্থাৎ পরোপকারকে নামাজ, জাকাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং কোনো কিছুর সাথে আল্লাহর শরিক না করার মতো গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
পরোপকার প্রকারান্তরে নিজেরই উপকার। সব ধর্মেই এ কথা বহুল প্রচারিত যে, ‘উপকার করো এবং উপকৃত হও।’ কারো উপকার করলে নিজের সহায়-সম্পদের কোনো ঘটতি হয় না; বরং অন্যের সাথে সহযোগিতা আদান-প্রদানের মাধ্যমে যে সুখকর ও নিরাপত্তার পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাতে পারস্পরিক কল্যাণ এবং সহায়-সম্পদ সৃষ্টির সুযোগ অবারিত হয়। সূরা বনি ইসরাইলের ১০০ নং আয়াতে পরোপকার বা অন্যের কল্যাণ সাধনে মানুষের কৃপণ স্বভাবের প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে- ‘(হে রাসূল) আপনি বলুন, যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভাণ্ডারের অধিকারী হতে, তবুও ব্যয় হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তোমরা তা ধরে রাখতে, মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।’ শিক্ষা এই, পরোপকারের প্রশ্নে মানুষের উচিত দরাজদিল হওয়া, উদার ও মুক্তচিত্ত হওয়া।
মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কে ভিত্তি হওয়া উচিত সহমর্মিতার সৌহার্দ্যরে ও বন্ধুত্বের। সব মানুষ ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সমান এবং সবার মর্যাদার মাপকাঠিও সমতার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। কোনো মানুষই কারো পরম বন্ধু কিংবা চরম শত্রু হতে পারে না। স্বাভাবিক সম্পর্ক হওয়া উচিত সবার। পরম বন্ধু অনেকসময় বিশ্বাসঘাকতায় ও ভুল বোঝাবুঝির পরিপ্রেক্ষিতে চরম শত্রু বনে যেতে পারে। আবার চরম শত্রু অবস্থা ও পাত্রভেদে কালের প্রেক্ষাপটে বন্ধুতে পরিণত হতে পারে। তাই কাউকে চরম শত্রু ঠাউরে দূরে ঠেলে দেয়া সমীচীন নয়। প্রত্যেক মানুষের উচিত হবে তার সম্পর্কের সীমানা মেনে চলা।
পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে নিজের আত্মমর্যাদার বিষয়টি ভেবে ও মেনে চলা উচিত। অন্যের প্রতি ততদূর যাওয়া উচিত যেখান থেকে সসম্মানে ফিরে আসা সম্ভব। আবার নিজের স্বকীয়তার সীমার মধ্যে অন্যের প্রবেশে ততটাই সায় দেয়া উচিত, যেন প্রয়োজনবোধে তাকে ফিরিয়ে দিতে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। আমি যাতে অন্যের চোখে ভালোভাবে প্রতিভাত হই সে দিকে লক্ষ রাখতে হয়। আমার এমনভাবে চলাচল করা উচিত যেন অন্য কেউ তাতে বিব্রতবোধ না করে এবং নিজেকেও যাতে বিব্রত হতে না হয়।
দ্বিপক্ষীয় রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে কূটনীতিকরা তাই এ বাক্য যথার্থই আওড়ান, ‘Friendship to all and malice to none.’ সব রাষ্ট্রই তার জনগণের সার্বিক কল্যাণে অন্য রাষ্ট্রের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। এখানে পারস্পরিক সম্মান, সৌহার্দ্য, সমঝোতা, সমীহা ও সম্ভ্রমবোধ প্রকাশের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। সবার প্রতি ধনাত্মক (positive) দৃষ্টিভঙ্গি বন্ধুত্ববোধ ও বিশ্বাস এই চেতনাকে জাগ্রত ও সক্রিয় রাখে। পক্ষান্তরে কারো প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ বা প্রকাশের দ্বারা সমঝোতা ও সহানুভূতি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে ফাটল ধরতে পারে।
পরিবার সমাজ, দেশ ও বিশ্ব সংসারে বসবাসকারী মানুষের সাথে সহাবস্থান করে পরস্পর সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার সাথে সমঝোতা ও সুসম্পর্ক রাখা প্রয়োজন। মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনে ‘কল্যাণ’ আছে উল্লেখ করে আল কুরআনে এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে যে- ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আকাক্সক্ষায় কেউ তা করলে তাকে অবশ্যই আমি মহা পুরস্কার দেবো।’ (সূরা নিসা, আয়াত-১১৪) মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলিমদের নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে নবী করিম সা: বলেছেন, ‘কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধপক্ষ অবলম্বন করব।’
যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেন রাষ্ট্র পরিচালনার, তারা তাদের শপথবাক্যে এটিও উচ্চারণ করেন যে, কারো প্রতি রাগ অনুরাগ কিংবা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু তারা করবেন না। এরূপ শপথবাক্য পাঠের উদ্দেশ্য হলো- সবার প্রতি তারা সমান আচরণ করবেন। তাদের কাছে শত্রুও যা মিত্রও তা।
সমাজে একে-অপরের পরিপূরক বিবেচনায় এনে রাসূল সা: সবাইকে একটি দেহের ন্যায় দেখতে বলেছেন। দেহের কোনো অঙ্গ যদি পীড়িত হয়ে পড়ে তাহলে অপর অংশও নিদ্রাহীনতাসহ তার ডাকে সাড়া দিয়ে থাকে।
মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমতা ও সমঝোতা বন্ধুত্ব ও সৌজন্য প্রকাশের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, সমতাবোধ মানুষকে পরস্পরকে কাছে আনে, বিভেদ তাড়ায়, হিংসা-বিদ্বেষ ঈর্ষা ও হীনম্মন্যতার বোধ দূরে রাখে। সমঝোতা পারস্পরিক মনোমালিন্য পরিষ্কার করে, শত্রুভাবাপন্ন হতে বাধা দেয়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বন্ধুত্ব সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুতিকে উৎসাহিত করে, আর সৌজন্য প্রকাশ মনের উদারতা বিশালতাকে প্রসারিত করে, মনের কালো ঘুচায় তাতে। কবির ভাষায়- পরের কারণে মরণেও সুখ, ‘সুখ, সুখ করি কেঁদো না আর,/যতই কাঁদিবে, যতই ভাবিবে/ততই বাড়িবে হৃদয়ভার।’
অন্যের প্রতি ভালো ধারণা পোষণ করা পারস্পরিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি বলেই ইসলামে একে ‘আখলাকে হাসানা’ বা শ্রেষ্ঠ স্বভাব বা চরিত্র বলা হয়েছে। দলিল প্রমাণ ব্যতিরেকে কারো প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা বিধেয় নয়। সাধারণ অবস্থায় অন্যের প্রতি ভালো ধারণা পোষণ করা অপরিহার্য। সবার প্রতি ভালো ধারণা পোষণের ব্যাপারে সব ধর্মগ্রন্থেই তাগিদ রয়েছে। আর রাসূলুল্লাহ সা: ‘ভালো ধারণা পোষণ’ এবং ‘কু-ধারণা পোষণ থেকে বিরত থাকার’ নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন কু-ধারণা জঘন্যতম মিথ্যা।
আলোকিত মানুষের মনে এমন এক উজ্জ্বলতা বিস্তার লাভ করে যেখানে মানবিক উদারতা ও ঔদার্য বিকাশ লাভ করে। আলোকিত মনের মানুষ নিজের জন্য তো বটেই অন্যের জন্যও পরম আশীর্বাদস্বরূপ। কেননা, তার উজ্জ্বল মনের আলোয় অন্যেরাও হয় আলোকিত।
লেখক : সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা