১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে : জাতীয় শ্রমিক ঐক্য

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে : জাতীয় শ্রমিক ঐক্য - ছবি : নয়া দিগন্ত

জাতীয় শ্রমিক ঐক্যের সভাপতি এ এ এম ফয়েজ হোসেন বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসররা ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত হওয়া অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করতে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তারা পোশাক শিল্পে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। স্বৈরাচারের দোসররা গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিক ঐক্যের উদ্যোগে পোশাক শিল্পের চলমান অস্থিরতা, পরিকল্পিত নৈরাজ্য সৃষ্টি, ধ্বংসত্মক কার্যক্রম ও পোশাক শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ এবং দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

শ্রমিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহতাব উদ্দীন শহীদ, সম্বনিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পথিক, বাংলাদেশ অটোরিকশা হালকাযান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো: গোলাম ফারুক, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহরাইনে সুলতান বাহার, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের নেতা হারুনুর রশিদ, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারদিন হাসান হাসিব, গাজীপুর জেলা সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম ও ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি হারুনুর রশিদ প্রমুখ।

ফয়েজ হোসেন বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের একটি বড়ো অংশ স্বৈরাচার সরকারের দোসর। তারা বিগত ১৫ বছরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের দিয়ে নানা রকমের খেলা খেলেছে। জীবিকা বাঁচানোর জন্য শ্রমিকরা তাদের কথা শুনতে বাধ্য হয়েছে। আজকে গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের দিয়ে আবারো ষড়যন্ত্রের খেলা খেলতে চাচ্ছে। চলমান নৈরাজ্য তাদের নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ। এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বিপদে ফেলার অপচেষ্টা করছে। জাতীয় শ্রমিক ঐক্য কোনো নৈরাজ্য আশ্রয় প্রশ্রয় দিবে না।

তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের কল-কারখানা ভারতীয় মালিকরা কিনে নিচ্ছে। তারা এদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে তাদের দেশে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করছে। তাদের সাথে স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের সম্পর্ক আছে। আমাদের দেশপ্রেমিক শ্রমিকরা আন্দোলন সংগ্রাম করে ন্যায্য মজুরির জন্য। তারা কারখানা বন্ধ করা বা ভাঙচুর-জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার জন্য আন্দোলন করে না। আমাদের শ্রমিকরা সুশৃঙ্খল। তারা ৮ ঘণ্টার জায়গায় ১২ ঘণ্টা কাজ করে। তারা শ্রম দেয় কারখানা ধ্বংসের জন্য না। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছি আর একটি কারখানায়ও যদি নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয় তাহলে আমরা কঠোরভাবে দমন করব।

অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি গার্মেন্টস শিল্পে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রধান হোতা। তার নির্দেশে মিরপুরে ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি করা হয়েছে। আমরা তার গ্রেফতার দাবি করছি। একইসাথে তার নেতৃত্বে ভোট ডাকাতি করে বিজিএমইএ-এর পর্ষদ দখলকারীদের অবিলম্বে অব্যাহতি প্রদান করতে হবে। গার্মেন্টস শিল্পে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পাশের দেশের দুস্কৃতিকারীরা ইন্ধন দিচ্ছে কিনা তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খুঁজে বের করতে হবে। সকল দুস্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখামুখী করতে হবে। আমরা কোনো দুস্কৃতিকারীদের আর এক মুহূর্ত গার্মেন্টস শিল্পে দেখতে চাই না।

আমরা জানি এখনো বহু মালিক শ্রমিকের বেতন-ভাতা বাকি রেখেছেন। তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা সরকারকে বলতে চাই সাড়ে বারো হাজার টাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকের সংসার চলে না। অবিলম্বে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করুন। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি প্রতিষ্ঠা করেন। পোশাক শিল্প রক্ষা করার জন্য নাগরিক কমিটি গঠন করতে হবে। যারা জুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার পায়তারা করছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। শিল্প পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা শ্রমিকদের সকল দাবির সাথে একমত। দাবি আদায়ে আমরা মালিক ও সরকারের সাথে আলোচনা করব। আমরা শ্রমিকদের সাথে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিব।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement