‘সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে’
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ জুন ২০২৪, ২০:২৫
পবিত্র ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সকলকে রাজপথে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
বুধবার লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা শাখা অয়োজিত এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রামগঞ্জ উপজেলা আমির নাজমুল হাসান পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে ও পৌর আমীর অ্যাডভোকেট হাসান বান্নার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ। উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি মমিন উল্লাহ্ পাটওয়ারী, লাক্ষ্মীর জেলা ওলামা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সহকারি অধ্যাপক মাওলানা মু. আমিনুল ইসলাম মুকুল, ঢাকাস্থ রামগঞ্জ ফোরামের সভাপতি নাছিমুল হক, সাধারণ সম্পাদক শফিক খান, সৌদি আরবস্থ প্রবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন, ঢাকাস্থ উত্তর খান থান আমির মনির হোসেন ও লাক্ষ্মীর জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মনির হোসেন, রামগঞ্জ উপজেলা নায়েবে আমির বেলায়েত হোসেন, সেক্রেটারি এমরান হোসেন, পৌরসভা সেক্রেটারি মাওলানা ইসমাইল ইলিয়াস ও প্রবাসী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নেতারা।
ড. রেজাউল করিম বলেন, এবারের ঈদ মজলুম ও অধিকার হারা জনতার আর্তনাদে মোটেই অর্থবহ হয়নি। পবিত্র ‘জিলহজ্ব’ এক মহামাহিমান্বিত মাস। এ মাসেই হযরত ইবরাহিম আ: আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ঈসমাইল আ:-কে কোরবানি করতে সংকল্পবদ্ধ হন। মুসলিম জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণেই মুসলিম উম্মাহ দিবসটিকে পবিত্র ঈদুল আজহা হিসেবে পালন করে আসছে। তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশ পালনার্থে প্রিয় পুত্র ঈসমাঈল আ:-কে কোরবানি করতে গিয়ে যে ত্যাগের নজরানা পেশ করেছিলেন তা শত-সহস্র বছর পরেও মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত আছে। তিনি সেই ত্যাগ ও আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পশুপ্রবৃত্তি, লোভ-লালসা ও কামনা-বাসনার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করাই ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। অন্যায়-অসত্য, অনাচার-পাপাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম-নির্যাতন, বিভেদ-বিসংবাদ বন্ধ করে সমাজে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করে মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ সাধন করা পবিত্র ঈদুল আজহার মহাত্ব ও বৈশিষ্ট্য। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমরা যথারীতি ঈদ উদযাপন করলেও দেশের মানুষ ঈদের প্রকৃত আনন্দ থেকে বঞ্চিত। বস্তুত, রাষ্ট্রশক্তি অশুভ শক্তিকে দমনের পরিবর্তে পশুশুক্তিকেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে। তাই পবিত্র ঈদুল আজহার শিক্ষাকে ধারণ করে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলত হবে।
তিনি রামগঞ্জের দুই কৃতি সন্তান শহীদ ডা. ফয়েজ আহমদ (রাহি.) ও মরহুম মগফুর মাওলানা লুৎফর রহমান (রাহি.) সহ সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদেরকে জান্নাতের আ’লা মাকাম দানের জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ক্ষমতাসীনরা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই তারা বিনাভোটে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই এই অপশক্তির হাত থেকে দেশ, জাতি ও ইসলামকে বাঁচাতে হলে এদের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি জালিমশাহীর বিদায়ের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি