১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত : শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত : শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন - ছবি : নয়া দিগন্ত

২০২৪-২৫ সালের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটকে গতানুগতিক ও শ্রমিকবান্ধব নয় উল্লেখ করে প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। সরকার বারংবার বাজেটের আগে আশারবাণী শোনায়। কিন্তু বাজেটে তার ছিটেফোঁটা পাওয়া যায় না। দেশে আজ স্মরণকালের সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি চলছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আজ দিশেহারা। তারা আজ কোনোমতে অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন অতিবাহিত করছে। কিন্তু সরকার সাধারণ মানুষের কষ্ট দেখতে পায় না। তারা কথায় কথায় উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু মানুষের পেট ও পকেট স্বস্তি না থাকলে উন্নয়ন যে বুমেরাং হয়ে যায় সেই সত্যটুকু তারা অনুধাবন করতে পারছে না অথবা স্বীকার করছে না।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘একদিকে সরকার প্রতি অর্থবছরে বিভিন্ন দাতা গোষ্ঠীর কাছ লাখ লাখ কোটি ঋণ করছে অপরদিকে তাদের অনুগত সরকারি কর্মচারী ও দলীয় নেতাকর্মীরা লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। ফলে ক্ষতি যা হওয়ার এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেট দারিদ্র্য বিমোচন করবে না বরং দারিদ্র্য আরো বৃদ্ধি পাবে। সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করবে। লুটরাজদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার কারণে দুর্নীতির পরিমাণ বাড়বে। ধনীরা আরো ফুলে ফেঁপে উঠবে।

এই বাজেটে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। কিন্তু বাজেটে সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। চলমান ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মধ্যবিত্তরা পর্যন্ত হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের আয়ের সাথে বর্তমান বাজারদর কোনোভাবে যায় না। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বস্তির পরিবর্তে এই বাজেট আরো অস্বস্তি সৃষ্টি করবে। প্রায় সর্বত্র ভ্যাট ও করের কারণে জনগণ দিশেহারা হয়ে উঠবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের নাগরিকদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থা রাখা হয়নি। আজ শ্রমজীবী মানুষরা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও সন্তান-সন্তুতির শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা সরকারের কাছে স্পষ্টভাষায় দাবি জানাচ্ছি, প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করুন। বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিন। শ্রমজীবী মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সকল শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধিসহ বর্তমান বাজার দরের আলোকে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করুন। দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের আইনের মুখোমুখি করুন। বিদেশে পাচারকৃত সকল টাকা ফেরত আনার কার্যকর ব্যবস্থা নিন। সম্পদের সুষম বণ্টন ও যাকাতভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করুন। পুঁজিবাদী ও মুক্তবাজার অর্থনীতির কালো ছায়া থেকে বেরিয়ে আসুন। কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য কৃষিখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করুন। নিম্ন আয়ের মানুষের সন্তানরা যেনো বিনামূল্যে অধ্যয়ন করতে পারে সেজন্য শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করুন। একইসাথে নিত্যপণ্যের ওপর অর্পিত কর প্রত্যাহার করুন। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানুন। সাধারণ মানুষ যেনো দুবেলা নিশ্চিন্ত মনে খেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

আশাকরি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটবে। প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে একে গণমুখী ও শ্রমবান্ধব হিসাবে পাশ করা হবে।’

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement