ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দ্রুত পুনর্বাসন করুন : শামসুল ইসলাম
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ মে ২০২৪, ২০:০৩
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে সারাদেশে প্রায় অর্ধকোটি কৃষিজীবী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় দুই লক্ষাধিক হেক্টর কৃষি জমি ও ৭৫ হাজার মাছের ঘের-পুকুর পানিতে ভেসে গেছে। এমতাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দ্রুত পুনর্বাসন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ফেডারেশনের অঞ্চল পরিচালক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, লস্কর মো: তসলিম, মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মনসুর রহমান প্রমুখ।
আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর অর্থনীতির দেশ। এদেশের শ্রম অঙ্গনের দুই তৃতীয়াংশ মানুষের পেশা কৃষি নির্ভর। যারা মাঠে দিনরাত পরিশ্রম করে মাঠে সোনার ফসল উৎপাদন করে। বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ দেশ। কিছুদিন পরপর দেশের আকাশে বিভিন্ন দুর্যোগ আঘাত হানে। এসব দুর্যোগে কবলিত হয়ে দেশের এই বৃহৎ খাতের শ্রমিকরা সর্বশান্ত হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। ১৯ জেলায় প্রায় দুই লাখ কৃষকের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। নিহত হয়েছেন ১৬ জন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা কৃষকের একার পক্ষে সম্ভব না। কারণ কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় না। ফলে এ ধরনের বিপদ-আপদ মোকাবেলা করার সামর্থ্য তাদের থাকে না। অপরদিকে দেশের অধিকাংশ কৃষক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফসল উৎপাদন করে। আজকে মাঠে ফসল বিনষ্ট হওয়ায় তাদের ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণে হয়ে যাবে। কৃষকদের এই দুর্দিনে রাষ্ট্রকে প্রধানত কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের ব্যাংক ঋণ লাঘব করতে হবে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কৃষকদের প্রণোদনা দিতে হবে। বিনা সুদে ঋণ প্রদান করতে হবে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকরা ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে এর প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতির ওপর।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান মানুষ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনকে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে। কৃষকের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে। কৃষকের ক্ষতিপূরণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন অতীতের ন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনেও কৃষিজীবী মানুষের পাশে সংগঠনের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
অঞ্চল পরিচালকদের উদ্দেশ্যে শামসুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের কাজ উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য বার্ষিক পরিকল্পনাকে প্রাধান্য দিতে হবে। বার্ষিক পরিকল্পনার কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে কাজের গতি বৃদ্ধি করতে হবে। তৃণমূল সংগঠনকে মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে হবে। তৃণমূল শক্তিশালী হলে কেন্দ্রীয় সংগঠন শক্তিশালী হবে। একই সাথে ইসলামী শ্রমনীতির প্রচার ও প্রসার করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের সংগঠনের আদর্শ হচ্ছে ইসলামী শ্রমনীতি।