১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শূন্যের মধ্যে আর্থিক খাত, যেকোনো সময় ক্র্যাশল্যান্ডিং হতে পারে : রিজভী

বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবির রিজভী - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেশের আর্থিক খাত এখন শূন্যের মধ্যে ঝুলছে- এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যেকোনো সময় এর ভয়ংকর ক্র্যাশল্যান্ডিং হতে পারে।

সোমবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, অনিয়ম, অপচয়, দুর্নীতি আর মূল্যবৃদ্ধির এই ভয়াবহ প্রকোপের মধ্যে জনজীবনে যে হতাশা, অশান্তি ও নৈরাজ্য নেমে এসেছে সেটিকে কার্পেটের নিচে ঢেকে রাখতে চায় সরকার। সেজন্য জুলুমের মাত্রাকে তিনি তীব্র করেছেন বিক্ষোভ-প্রতিবাদকে স্তব্ধ করার জন্য।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেন এমনই ‘ওয়াশিং মেশিন’ যে- এর ভেতর দিয়ে ঢুকলে লুটেরা, হরিলুটকারী, টাকা পাচারকারী মহাদুর্নীতিবাজরা সাফসুতরো হয়ে যায়। শীর্ষ ব্যবসায়ী কোনো অনুমতি না নিয়ে বিদেশে অর্থ সরিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে। নিয়ম-নীতি না মেনে ক্ষমতাঘনিষ্ঠের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা। ঋণখেলাপীর পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে, দেশের আর্থিক খাত এখন শূন্যের মধ্যে ঝুলছে। যেকোনো সময় এর ভয়ংকর ক্র্যাশল্যান্ডিং হতে পারে।

রিজভী বলেন, আর তাই মিথ্যা আর বিভ্রান্তি আওয়ামী নেতাদের সারাক্ষণের নিত্যসঙ্গী। মানুষের মনোযোগকে ধূসর ও বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অবিরাম বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছে। অথচ বিরোধী নেতাদের প্রতি রীতি ও শালীনতা উপেক্ষা করে ক্রমাগত বিষোদগার করা হয়। বিরোধী দলের কথা বলা, স্বাধীন মত প্রকাশ করা আওয়ামী নীতিবিরুদ্ধ।

তিনি বলেন, সারাদেশকে অনতিক্রম্য কাঁটাতারের বেড়ায় ঘিরে রাখার পরও জুলুমের পরিধি বিস্তৃত করা হচ্ছে প্রতিদিন। ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ছিলেন। অপেক্ষাকৃত এই তরুণ নেতার জনপ্রিয়তায় ডামি সরকার মনে করছে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় থাকার নিদারুণ ব্যাঘাত ঘটবে। ইশরাকের সাহসী নেতৃত্বে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী অস্বস্তিবোধ করছে। ডামি সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা চিরস্থায়ী করতে চাচ্ছে কারাগারকে। তাই প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে গতকাল পল্টন থানার একটি মিথ্যা মামলায় জামিন না দিয়ে সরকারের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পেশীশক্তির জোরে চলছে বিরোধী দল দমনের কর্মসূচি। তারপরও টলিয়ে দেয়া যায়নি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতাকর্মীরদের দৃঢ় অঙ্গীকার। প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের মতো একজন প্রতিশ্রম্নতিশীল বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারের ঘটনা বর্তমান সরকার সৃষ্ট নৈরাজ্যের চরম দৃষ্টান্ত। সরকারের চোখ রাঙানির বিরুদ্ধে সাহসী উচ্চারণ থেকে সরানো যায় না বলেই ইশরাককে কারাবন্দী করা হয়েছে। দখলদার সরকার কণ্ঠের স্বাধীনতা সীমায়িত করতে অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরও জেগে উঠছে বাংলাদেশ। মানুষের ক্ষোভের আগুনে ফ্যাসিবাদ ছাই হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আদালতের স্বাধীনতা থাকলে দুর্বল গদবাঁধা সাজানো মামলায় প্রকৌশলী ইশরাকসহ বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মীকে অকারণে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী সাজা প্রদান ও আটক রাখতে পারতো না। দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষরা এখন কারাগারে, আর টেন্ডারবাজ, তদ্বিরবাজ, ধোঁকাবাজ, সিন্ডিকেটবাজ, চাঁদাবাজ ও ঋণখেলাপীদের দৌরাত্ব এখন চরমে।

অবিলম্বে জনতার মেয়র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশী সাজা বাতিল এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান রিজভী।


আরো সংবাদ



premium cement