১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দায়িত্বশীলদের কুরআনের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হবে। জনশক্তিরা দায়িত্বশীলদের কাছেই কুরআনি সমাধান খুঁজতে আসবে।’

তিনি বলেছেন, “চূড়ান্ত সফলতা সেই সাহসীরাই পায়, যারা এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। রাসূল সা. বলেছেন, ‘দুর্বল মুমিনের চাইতে শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।”

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণসংযোগ ও দাওয়াতী পক্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত সর্বস্তরের দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সকল দায়িত্বশীলকে উঁচুমানের আমল আখলাকের অধিকারী হতে হবে। নিজেদেরকে কুরআন সুন্নাহর আলোকে সাজাতে হবে। দাওয়াতী ময়দানে কাজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। আমাদের সর্বপ্রথম নিজেকে দাওয়াত দিতে হবে। নিজেকে দ্বীনের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। এরপর পরিবারকে দাওয়াত দিতে হবে। পরিবারের কোনো সদস্যই যেন দাওয়াতের বাইরে না থাকে। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের হকের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পেশাগত জীবনে সম্পৃক্ত যারা আছেন তাদেরকে দাওয়াতের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহর ওপর ভরসা করে এখন থেকে সাংগঠনিক সকল কর্মসূচি সক্রিয় ভুমিকা পালনের চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তায়া’লার কাছে সাহায্য চাইব, তিনি যেন আমাদের পথচলাকে স্বস্তিদায়ক ও সহজ করে দেন। সকল দিক বিবেচনায় জনশক্তিকে অধিক পরিশ্রমী, শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমাদেরকে মূল উদ্দেশের দিকে ফিরে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আজ শুক্রবার থেকে শুরু করে আগামী ১৫ দিন গণসংযোগ ও দাওয়াতী পক্ষ পালন করা হবে। এটাকে আমরা বিশেষ অভিযান হিসেবে পালন করব। সারাবছরই আমাদের দাওয়াত চলে। কেন্দ্রীয় আমির থেকে শুরু করে সকল স্তরের দায়িত্বশীলকে এই কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে। সংগঠনের সকল স্তরের দায়িত্বশীলদেরকে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’

প্রধান অতিথি আরো বলেন, ‘আদর্শিক পথচলা কখনোই সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতার জন্য এ পথের বিকল্প নেই। সুতরাং সর্বাবস্থায় আদর্শের ওপর টিকে থাকতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ও কর্মপন্থা সুস্পষ্ট। কুরআন প্রদত্ত ও রাসূল সা. প্রদর্শিত জীবনব্যবস্থাকে সার্বিক জীবনে গ্রহণ করে এগিয়ে চলাই আমাদের মূল বিষয়।’

চট্টগ্রাম মহানগরী শুধু বাণিজ্যিক রাজধানীর দিক থেকে নয়, এটি ইসলামের সূতিকাগার উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম দিয়েই আল্লাহর দ্বীনের দ্বায়ীরা এদেশে প্রবেশ করেছিল। তারা কেউই বাংলা ভাষাভাষী ছিলেন না। তাদের চেহারা ভাষা দুটিই ছিল আমাদের থেকে ভিন্ন। কিন্তু তাদের ভাষা বুঝতে এদেশের মজলুম জনগণের কোনো অসুবিধা হয়নি। মানুষ তাদের মুখের ভাষা না বুঝলেও তাদের বুকের এবং আমলের ভাষা বুঝতে পেরেছিল। আমলের সৌন্দর্যে অভিভূত হয়েই তারা আল্লাহর দ্বীনকে কবুল করেছিল।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির, সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও মোমেনশাহী অঞ্চল পরিচালক ড. মুহাম্মদ ছামিউল হক ফারকী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে মুক্ত হয়ে শান্তিময় সমাজ গঠন করতে হলে রাসূলুল্লাহ সা.-এর আদর্শের দিকে অবশ্যই ফিরে আসতে হবে। আর এই মহান আদর্শের চর্চা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে বাস্তবায়নের উত্তম সময় হলো মাহে রমজান। আমরা যদি মাহে রমজানের শিক্ষাকে সার্বিক জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে অল্প সময়ের ব্যবধানে সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইসলামী সভ্যতার অন্যতম কাজ হলো আল্লাহর দিকে ডাকা। দ্বীনের দিকে ডাকা হচ্ছে ইসলামের অন্যতম সুন্দর কাজ। স্বয়ং আল্লাহ হচ্ছেন সবচেয়ে বড় দ্বায়ী। তাওহীদ, রেসালাত ও আখিরাতের বীজ মানুষের মনে প্রতিষ্ঠা করাই হলো দাওয়াত। প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। সকল জনশক্তিকে দাওয়াতী কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি ব্যক্তিগত টার্গেট-ভিত্তিক দাওয়াতী কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিভ্রান্ত মানুষকে দ্বীনের আলো পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা ইখলাসের সাথে চালিয়ে যেতে হবে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও মোমেনশাহী অঞ্চল পরিচালক ড. মুহাম্মদ ছামিউল হক ফারুকী বলেন, ‘দাওয়াতী কাজ সহজ কাজ নয় বা দাওয়াত হলো যুদ্ধ ক্ষেত্র, এখানে যে যত বেশি কৌশলী হবেন, তিনি তত সফলকাম হবেন। রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার এবং নিজের নফসের পক্ষ থেকে দাওয়াতী কাজে বাধা আসবে। জীবন, স্বাস্থ্য ও সম্পদ ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। কখনো কখনো অপ্রাপ্তি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়া অধৈর্যের কারণ হতে পারে। সুতরাং আগামী দিনে ইসলামী আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে হলে মানুষের মেজাজ বুঝে দাওয়াতী কাজ করতে হবে এবং বুদ্ধিভিত্তিক ভুমিকা পালন করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে মহানগরী আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার জন্যে দাওয়াত দেয়া অপরিহার্য। সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামগণ আল্লাহর দিকে মানবজাতিকে আহ্বান করেছেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর দিকে আহ্বানের জন্য দাওয়াতী কাজ করে এসেছে। আমাদের দাওয়াত মুসলমানদের জীবন গঠন ও ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন চট্টগ্রামের ময়দান ইসলামি আন্দোলনের জন্য খুবই উর্বর। কাজেই এই নগরীতে তৃণমুল পর্যায়ে আমাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।’

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও নগর নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ।

এতে দারসূল কুরআন পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক আহমেদ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement
‘আপত্তিকর ভাষা’ ব্যবহারে শাস্তি পেলেন জোসেফ শ্রীমঙ্গলে হত্যা মামলায় প্রেমিক গ্রেফতার জামায়াত নেতা কাজী ফজলুল করিমের মৃত্যুতে ড. রেজাউল করিমের শোক প্রকাশ বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে মাঠে থাকব : মুন্না আমতলীতে ব্যবসায়ীকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় জড়িতদের বিচার দাবি সিরিয়া নিয়ে আশা ও শঙ্কা ইসরাইলের সিরিয়ায় বাশারের পতনে ইসরাইল কতটুকু লাভবান অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের ৫৭৯ কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহত ৫ এ দেশে রাজনীতি করতে হলে জনগণের সেবক হয়েই রাজনীতি করতে হবে : সেলিম উদ্দিন এখন সময় শান্তি ও স্থিতিশীলতার : অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী

সকল