১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বিএনপির বিরোধিতার কারণে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাইনি : ওবায়দুল কাদের

- ছবি : বাসস

বিএনপির বিরোধিতার কারণে আমরা এখনো গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাইনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘এরা দালাল। এদের কারণে গণহত্যার স্বীকৃতি আজও আমরা পাইনি। আমরা পাকিস্তানের কাছ থেকে আমাদের ন্যায্য পাওনা পাইনি। পাকিস্তানি নাগরিকরা বছরের পর বছর বোঝা হয়ে আছে। কথা দিয়ে তাদের নাগরিকদের ফেরত নেয়নি।’

সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পাকিস্তান একাত্তরে গণহত্যার জন্য একবারও দুঃখ প্রকাশ করেনি। কোনো সরকারও প্রকাশ্যে এই যুদ্ধাপরাধের জন্য বাংলাদেশের কাছে এ যাবত ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। সে পাকিস্তানের যারা দালালি করে তারা স্বাধীনতার শত্রু।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি পাকিস্তানের দালালি করে, আমাদের শত্রু। এই শত্রুরা বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করেছিল। জয় বাংলা, ৭ মার্চ নিষিদ্ধ করেছিল। ২৬ মার্চে স্বাধীনতার স্থপতিকে নিষিদ্ধ করেছিল।’

বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ভুয়া। এটি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি জানতে চাই, আজ (২৫ মার্চ সোমবার) দুপুর বেলায় পল্টন ময়দানে মির্জা ফখরুল মুক্তিযোদ্ধার সমাবেশ করেছেন, একাত্তরে আপনি কোথায় ছিলেন? আপনি কোথা থেকে ট্রেনিং নিয়েছেন? কোন সেন্টারে যুদ্ধ করেছেন? বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ভুয়া, এটি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ। এরা পাকিস্তানের দালাল।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে ২৫ মার্চ গণহত্যা নিয়ে একটি শব্দ উচ্চারণ করেনি, এরা কারা? এরা পাকিস্তানের দালাল। হাতে গুনলে কয়জনকে পাবেন? যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না তারা কোনোদিন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নাই। বিএনপির প্রভু আছে যারা তাদের স্বার্থের পক্ষে উকালতি করে। আমাদের বন্ধুরা একাত্তরের পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো বিদেশী বন্ধু হস্তক্ষেপ করেনি। বিএনপির বন্ধুরা যখন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল, তখন আমাদের বন্ধুরা নির্বাচনের পক্ষে স্ট্রংলি দাঁড়িয়েছিল।’

বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রান্নাঘরে যা যা ব্যবহার করে তার মধ্যে ভারতীয় পণ্য কোনটা কোনটা। রান্না ঘরে যান, শোয়ার ঘরে যান, ভারতীয় পণ্য। এখন রিজভী সাহেব রাজনীতি করার জন্য গা থেকে কাশ্মিরি শাল ফেলে দিয়ে আগুনে পুড়িয়েছেন। আরো কয়টা শাল তার ঘরে আছে কে জানে। ভারতীয় পণ্য ছাড়া খাবার জোটে না। ভারতীয় মশলা, ভারতীয় পেঁয়াজ কার ঘরে নাই? খুঁজে দেখবো?’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম ও ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খায়, ভারতের গরুর গোশত দিয়ে সেহরি খায়, ভারতের শাড়ি পরে স্ত্রীরা সাজে, কিন্তু বয়কটের ডাক দেয়। তারা ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে মানুষের সাথে তামাশা করছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’

২৫ মার্চের গণহত্যা দিবস অনেক আগেই স্বীকৃতি পেতে পারত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গণহত্যার সব আলামত নষ্ট করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। যিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের প্রধান হয়ে জাতিসঙ্ঘে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন।’

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের গণহত্যার স্বীকৃতি দরকার। যেন ভবিষ্যতে এমন গণহত্যা পৃথিবীর কোথাও না হয়। গাজায় যে হত্যা হচ্ছে, সেখানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বক্তব্য রাখছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আমরা এই গণহত্যা বন্ধ চাই।’

মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা মুক্তিযুদ্ধের সব ইতিহাস মুছে দিয়েছিল। তাদের কারণে আমরা এখনো গণহত্যার স্বীকৃতি পাইনি। বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়নি। এই মিথ্যাচারের কারণে আমরা এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাইনি।’

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement