২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শ্রমিকদের সাথে আমানবিক ও প্রতারণাপূর্ণ আচরণ করছে মালিকপক্ষ : আল্লামা কাসেমী

আল্লামা কাসেমী - ছবি : সংগৃহীত

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে লাখ লাখ শ্রমিক বেতন না পেয়ে, চাকুরি হারিয়ে অত্যন্ত মানবেতর সঙ্কটে আছেন। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে মালিকপক্ষ যেমন অমানবিক ও প্রতারণাপূর্ণ আচরণ করছে, তেমনি এসব বন্ধে সরকারের কার্যকর উদ্যোগও দেখা যায় না। এতে গভীর মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব বলেন।

তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতনের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া সত্ত্বেও মালিকপক্ষ শ্রমিকদেরকে বঞ্চিত রেখে নিজেরাই এর সুফল ভোগ করছে। নানা অজুহাত হাজির করে গণহারে শ্রমিক ছাঁটাই করেছে এবং অনেক শ্রমিক গত দুই-তিন মাস যাবত বেতন পাচ্ছে না। কারখানা চালু বা বেতন পাওয়ার আশায় এসব শ্রমিক কয়েক মাস ধরে ধার-দেনা ও খেয়ে-না খেয়ে বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। বিজিএমইএ সভাপতি তার সংগঠনের অধিনস্থ গার্মেন্টসমূহ থেকে গত মাসে ২৫ হাজার কর্মী চাকুরি হারানোর কথা স্বীকার করেছেন এবং আগামী ছয় মাসে এই সংখ্যা ৫ লাখে গিয়ে দাঁড়াতে পারে বলেছেন।

আল্লামা কাসেমী বলেন, দেশে বিপুল শ্রমজীবী মানুষ ও ঘন বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানার মালিকরা নিজেদের সুবিধামতো কারখানা বন্ধ ও চালু করেন, কম বেতন দিতে লে-অফ করেন এবং যখন-তখন শ্রমিক ছাঁটাই ও নিয়োগ দেন। শিল্পকারখানার মালিকরা বছরের পর বছর শ্রমিকদেরকে দিয়ে ব্যবসা করেছেন, অনেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা পেয়েও তারা শ্রমিকদের বেতন দিবেন না, গণহারে ছাঁটাই করবেন, শ্রমিকদের দুর্দশা লাঘবে কিছুই করবেন না- এটা তো হতে পারে না।

তিনি বলেন, শ্রম আইন অনুয়ায়ী শ্রমিকদের মূল বেতনের অর্ধেক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বহাল রেখে শর্ত সাপেক্ষে কারখানা ৪৫ দিনের জন্য লে-অফ করা যায়। অথচ বর্তমানে এই আইন অনেক গার্মেন্ট মালিক মানছে না। সরকার কিন্তু করোনাকে বাংলাদেশে এখনো মাহামারি ঘোষণা করেনি। মূলত: মালিকরা শ্রমিক ঠকানোর উদ্দেশ্যে পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন।

তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, লাখ লাখ শ্রমিক পরিবারকে রাষ্ট্রীয় অভিভাকত্বহীন করে রাখবেন না। প্রণোদনার সুফল শ্রমিকরা পাচ্ছে কি না এবং শিল্পকারখানার মালিকরা শ্রম আইন যথাযথ অনুসরন করছে কি না সেটা নিশ্চিত করুন। পাশাপাশি শ্রমিকদের পাশে মানবিক সহযোগিতা নিয়েও রাষ্ট্রকে দাঁড়াতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement