কোয়ারেন্টিনেই চিকিৎসা চলছে খালেদা জিয়ার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৮ মার্চ ২০২০, ০৭:০৩, আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০, ০৮:৫৪
কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসা চলছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। গুলশানের বাসা ফিরোজার দোতলায় তিনি ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে আছেন। তার সাথে নার্সসহ সেবা প্রদানকারী কয়েকজন সদস্যও সেলফ কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এই সময়ে সোস্যাল ডিসট্যান্স অর্থাৎ একজন থেকে অপরজন যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলার নিয়ম তা যথাযথভাবে মেনেই ম্যাডামের সেবা প্রদানকারীরা সেবা দিচ্ছেন।
সরকারের নির্বাহী আদেশে গত বুধবার বিকেলে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুলশানে ফিরোজায় আসেন খালেদা জিয়া। বাসায় আসার পর ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে দেখে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন।
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটিজ আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং চোখ ও দাঁতের নানা রোগে আক্রান্ত।
শারীরিক গুরুতর অসুস্থতা থাকলেও মানসিকভাবে স্বস্তিবোধ করছেন খালেদা জিয়া।
তার চিকিৎসার পুরো কার্যক্রম তদারক করছেন লন্ডন থেকে তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা: জোবাইদা রহমান। অধ্যাপক জাহিদ জানান, কোয়ারেন্টিনে ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। তিনি শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হলেও ঘরোয়া পরিবেশে এখন স্বস্তি বোধ করছেন। তার মানসিক শক্তি বেড়ে গেছে। আগে যে বিপর্যস্ত চেহারা ছিল সেটাও অনেকটা কমে আসছে।
তিনি বলেন, ম্যাডাম প্রিয়জনদের সাথে মোবাইলে কথাবার্তা বলতে পারছেন, ডাক্তারদের সাথে কথা বলছেন যেটা সমস্যা সেটা জানাচ্ছেন। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে তিনি সময় কাটাচ্ছেন। কখনো শুয়ে, কখনো বসে, কখনো বইপত্র পড়ে।
চিকিৎসার বিষয়ে অধ্যাপক জাহিদ জানান, বিএসএমএমইউ মেডিক্যাল বোর্ডের দেয়া ওষুধপত্রে কিছুটা সংশোধন, পরিবর্তন এনেছেন ম্যাডামের ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম। ম্যাডামের হাত-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। রিউমাটিজ আর্থ্রাইটিজের কারণে হাত-পায়ের জয়েন্টে গুটলি হয়েছে। এগুলো তাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে, প্রচণ্ড ব্যথা। এই ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওষুধে কিছুটা পরিবর্তন ও সংযোজন এনেছেন।
তিনি বলেন, কারাগারের নির্জনতা ও নির্মমতার কারণে ম্যাডাম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি অনেকটা শুকিয়ে গেছেন, দুর্বলতাও রয়েছে তার। ওজনও তার ৯-১০ কেজি কমে গেছে। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসায় তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবেন। একটা সিস্টেমের মধ্যে চলে এলে তার ডায়াবেটিসের মাত্রাও ক্রমান্বয়ে কমে আসবে বলে আমরা ধারণা করছি।
বিএসএমএমইউ মেডিক্যাল বোর্ডের ব্যবস্থাপত্র ও পরীক্ষার কাগজপত্রের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।
ফিরোজায় এখন মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমের সদস্য ও নিকট আত্মীয়স্বজনরা ছাড়া কারো প্রবেশাধিকার নেই। নিরাপত্তা কর্মীরা সব সময়ে গেট বন্ধ রেখে পাহারা দিচ্ছেন।