খালেদা জিয়াকে দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি
- ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা
- ০২ অক্টোবর ২০১৯, ২২:২১, আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০, ১৫:১৫
বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বুধবার বিকেলে চারজন দলীয় সংসদ সদস্য সাক্ষাত করেন। মঙ্গলবার বিএনপির দলীয় তিন এমপি যথাক্রমের উকিল আবদুস সাত্তার, হারুনুর রশীদ ও আমিনুল ইসলাম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই মোশাররফ হোসেন, জি এম সিরাজ, জাহিদুর রহমান জাহিদ ও রুমিন ফারহানা এই চার এমপি সাক্ষাৎ করলেন। খালেদা জিয়ার অবস্থা কেমন দেখলেন তা নয়া দিগন্তের কাছে প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। অনুলিখন করেছেন ইকবাল মজুমদার তৌহিদ। এখানে রুমিন ফারহানার বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
যেই মানুষটি হেঁটে-হেঁটে কারাগারে গেছেন আজকে সেই মানুষটাকে দেখলাম কারো সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না, দাঁড়াতে পারেন না, নিজের হাতে কিছু খেতে পারেন না, পোশাক পাল্টাতে পারেন না, মাথার চুলও বাঁধতে পারেন না। প্রতি ক্ষেত্রে সাহায্য নিতে হয় অন্যজনের। তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের এমন অবনতি দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।
দেশনেত্রীর ডায়াবেটিস কন্ট্রোল থাকছে না ২২-২৩ এ উঠে যায় আবার ১২-১৩ তে নেমে যায়। এই অবস্থায় তার যে পরিবেশ এবং যত্ন পাওয়ার কথা তিনি সেটা পাচ্ছেন না। আসলে ওনাকে পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা কেনো এমন হলো, তার জবাব সরকারকে দিতে হবে। বারবার সরকারকে বলা হয়েছে, বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য। নেত্রীর আস্থাভাজন চিকিৎসক দিয়ে বোর্ড গঠনের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য। সরকার এসব দাবির কোনো কর্ণপাত করেননি। আজকে আমি যেই বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে আসলাম, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবারের বিরোধী দলীয় নেত্রী, যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান এর স্ত্রী সেনাপ্রধানের স্ত্রী তার এই অবস্থার জন্য সরকারকে জবাব দিতে হবে। যে ধরনের মামলায় তাকে আটক রাখা হয়েছে এর চেয়ে সিরিয়াস মামলায় সাথে সাথে জামিন দেয়া হচ্ছে, সেখানে এটা কোনো মামলাই না। কেন তাকে দিনের পর দিন জামিন না দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে এটা আমাদের প্রশ্ন।
খালেদা জিয়া দেশের মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করেছেন। শহীদ জিয়ার গড়া বিএনপিকে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত করেছেন। এজন্য তিনি আজ নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে নিতে হবে, দেশকে এই লুন্ঠণ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের সুসময় আসবেই। মনোবল হারানোর কোনো কিছু নেই।
শারিরীকভাবে দুর্বল থাকলেও নেত্রীকে মানসিকভাবে অনেক দৃঢ় মনে হয়েছে। তিনি সংসদে থাকা বিএনপির এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনারা দল, দেশ, দেশের মানুষ, তাদের ভোগান্তি-কষ্ট, সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি-অনাচার, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকারের কথা সংসদে তুলে ধরবেন।
মাত্র ৭ জন এমপি সংসদে প্রতিবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে ভূমিকা না রাখতে পারলেও গণতন্ত্র রক্ষায় এটা ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলে মনে করেন খালেদা জিয়া। এজন্য তিনি আমাদেরকে সৎভাবে দায়িত্বপালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা