ঐক্যফ্রন্টের কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি শুরু
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:২১, আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’র প্রতিবাদে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
আজ বুধবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। শেষ হবে বিকাল ৪টায়।
গত ৩১ জানুয়ারি ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের মতিঝিল চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক সভা শেষে জোটের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী ও ভুক্তভোগী ভোটারদের অংশগ্রহণে ২৪ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে গণশুনানির আয়োজন করবে জোট।
বিএনপি ও গণফোরামসহ পাঁচ দলের জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ব্যাপক ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে দাবি করে এর ফল প্রত্যাখ্যান করে।
এদিকে, পুনর্নির্বাচন কিংবা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে ধীরে ধীরে সোচ্চার হওয়ার চেষ্টা করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলেও এর প্রতিবাদে ফ্রন্টের নেতারা এত দিন মাঠের কোনো কর্মসূচিতে নামেননি। আজ প্রথমবারের মতো ‘কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন’ কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে তারা। ফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ফের জনগণের ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য। সরকার যত দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের উদ্যোগ নেবে তত দ্রুতই রাজনীতির আকাশের কালো মেঘ কেটে যাবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর দেশে কী হয়েছে সেটি আমরা কেন দেশের সবাই দেখেছে। একে কি নির্বাচন বলবেন? জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল দাবি হচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর দেশে যেহেতু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি তাই দ্রুত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আদায় করা। সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এ দাবি আদায়ে সোচ্চার হতে হবে।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ইতোমধ্যে এক মাস ৬ দিন পেরিয়ে গেছে। ঐক্যফ্রন্টের বড় শরিক বিএনপিও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। কেন কোনো কর্মসূচি দেয়া হয়নি, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলা-হামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের নতুন করে বিপদে না ফেলে বিশ্রাম দিতেই কোনো কর্মসূচি নেয়া হয়নি। দলটির বহু নেতাকর্মী এখনো কারাগারে। যাদেরকে এখন জামিনে মুক্ত করে নিয়ে আসাই দলটির অন্যতম কাজ। ইতোমধ্যে দলীয় তৎপরতায় বহু নেতাকর্মী জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে এসেছেন। সিনিয়র এক নেতা বলেছেন, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে আরো কয়েক মাস সময় লাগবে। নেতাকর্মীদের নতুন করে ঝামেলায় না ফেলার জন্যই আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জনসভার কর্মসূচি বাতিল করেছে বিএনপি।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট হয়নি, এ বিষয়টি সর্বজনগ্রাহ্য। এখন প্রয়োজন সরকারকে নির্বাচনের চাপে ফেলা। এ কাজটি করতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্য একসাথে রাজপথে আসা অপরিহার্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে আসা বিরোধী দলগুলোর নেতারা আবারো যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাবনা দেখছেন। নেতারা বলছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি বিষয় স্পষ্ট হবে। সেটি হচ্ছে, এই নির্বাচনে যারা অংশ নেবে না, তাদের সাথে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করার দ্বারোন্মোচন হবে। তাহলে ভবিষ্যতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আলোচনা করে রাজপথে আসার সম্ভাবনা থাকবে। সব বিরোধীই যদি উপজেলা নির্বাচন বয়কট করে, তাহলে ন্যূনতম ভিত্তিতে রাজপথে আসবে ঐক্যফ্রন্ট।
ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের দাবিকে সামনে আনতে হবে। আমরা কাজ করছি। যারা যারা কাজ করবে, তাদের সাথেও কথা হতে পারে, আলোচনা হতে পারে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম কয়েক দিন আগে একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভয় পাবেন না, সারা দেশের মানুষ সাথে আছে। আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য চলে গেছে। সুতরাং এখন সাহস নিয়ে লড়াই করতে হবে।