সেনা হত্যার বিচার না হলে জাতি দায়মুক্ত হবে না : সেলিম উদ্দিন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:০০, আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:০৩

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ‘২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমী সেনা হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না বরং তা দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এবং পূর্ব পরিকল্পিত।’
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টার দিকে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে শেরেবাংলা নগর উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আমির মু. আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে এবং থানা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মোহাম্মদ শাহজাহানের পরিচালনায় বক্তব্য দেন থানা বায়তুলমাল সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, কর্মপরিষদ সদস্য সাইফুল আলম ও মো: নুরুল ইসলাম প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘পিলখানার তথাকথিত বিদ্রোহের ঘটনা ছিল বাংলাদেশ বিরোধী আধিপত্যবাদী, সম্প্রসারণবাদী এবং তাদের তাবেদারদের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অরক্ষিত করার জন্যই সেদিন ৫৭ জন চৌকস, মেধাবী ও দেশপ্রেমী সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশ ও জাতিকে কলঙ্কিত করেছিলো। কোনো যুদ্ধেও এতো সংখ্যক সেনা কর্মকর্তার প্রাণহানির কোনো রেকর্ড নেই। তাই গঠিত তদন্ত কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ি শেখ হাসিনা এবং তাদের দোসরদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এদেশ থেকে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি চিরতরে বিদায় দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে জনগণের শাসন। আগামী দিনে কোনো দাদাগিরি মেনে নেয়া হবে না।’
পিলখানার শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান সেলিম উদ্দিন।
‘আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে জনগণের বাংলাদেশ’ মন্তব্য করে জামায়াত নেতা বলেন, ‘এদেশে আর কখনো চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, দুর্নীতি ও লুটপাট মেনে নেয়া হবে না। এজন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। সে নির্বাচনকে অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা দরকার। মূলত, এজন্যই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হওয়া জরুরি। নির্বাচনের বিকল্প হিসেবে স্থানীয় সরকারে প্রশাসক নিয়োগ কোনো সমাধান নয়। কারণ, এরা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের দোসর।’
আগামী নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন কোনোভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারণ, এ পদ্ধতির নির্বাচনে হোন্ডা, গুন্ডা এবং বস্তাভর্তি টাকার কারবার হয়। পিআর পদ্ধতি প্রবর্তিত হলে এসবের কোনো সুযোগ থাকবে না। থাকবে না নির্বাচনী সহিংসতাও। এ পদ্ধতির ভোটারটা ব্যক্তিকে নয় বরং প্রতীকে ভোট প্রদান করবেন। সংসদে ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বও নিশ্চিত হবে।’
এসময় তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পাদন করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই সেনা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিলো। ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছিলো অসংখ্য নিরাপরাধ বিডিআর জাওয়ানকে। তারা ফ্যাসিবাদী সরকারের অবিচারের শিকার হয়ে দীর্ঘ পরিসরে কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন। কথিত বিচার ছিলো রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত। ফলে অনেকে পরিবার-পরিজন, পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। তাই তাদের আর কারাগারে অন্তরীণ রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
তিনি আটক বিডিআর জাওয়ানদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে বলেন, ‘অবিলম্বে তাদের জামিনে মুক্তি দিন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার করে দায়িদের শাস্তি নিশ্চত করুন। অন্যথায় জাতি কোন ভাবেই দায়মুক্ত হবে।’ (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা