২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`

ভাষা আন্দোলন আমাদের জন্য গর্বের ও প্রেরণার উৎস : হামিদুর রহমান আযাদ

রাজধানীর আইডিইবি ভবনে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ - ছবি : নয়া দিগন্ত

’৫২’র ভাষা আন্দোলন জাতি হিসেবে আমাদের জন্য গর্বের ও প্রেরণার উৎস’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনের কাউন্সিল হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের কথা আসলে ১৯৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারির কথা ওঠলেও এর পেছনে রয়েছে অনেক অজানা ইতিহাস। রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রথম দাবি ওঠে বৃটিশ শাসনামলে ১৯১১ সালে। মূলত, রংপুর শিক্ষা সম্মেলনে নওয়াব আলী চৌধুরী বৃটিশ সরকারের কাছে প্রথম এ দাবি উপস্থাপন করেন। এর পর ১৯১৮ সালে শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ দাবির প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার জোরালো দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৩৬ সালে একই দাবি উত্থাপন করেন মাওলানা আকরাম খাঁ। ১৯৪৬ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য জিয়াউদ্দীন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করলে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার জোরালো দাবি করেন। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করলে জনগণ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। দুর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে।’

ভাষা আন্দোলনে শহীদ অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সামনের সারির নেতা। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ডাকসুর নির্বাচিত জিএস হিসেবে লিয়াকত আলী খানের কাছে স্মারকলিপিও পেশ করেছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে বারবার গ্রেফতার, কারাবরণ ও কলেজের চাকরি হারিয়েছিলেন। কিন্তু হীনমন্যতার কারণে তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি বরং ডাকসুর জিএসদের নাম ফলক থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ফলক থেকে নাম মুছে ফেলেই দেশ, জাতি ও ভাষা আন্দোলনে তার অবদান মুছে ফেলা যাবে না। তিনি হীন্যমনতা পরিহার করে সরকারকে অধ্যাপক গোলাম আযমের প্রাপ্য সম্মান দেয়ার আহ্বান জানান।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ও জাতি নতুন দিশা পেলেও দেশ এখনো বৈষম্যমুক্ত হয়নি। এমন দিশা আমরা ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর পেয়েছিলাম। সেদিন সিপাহী-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে আধিপত্যবাদ মুক্ত করেছিলো। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি। বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছর দেশ ও জাতির ঘাড়ে আওয়ামী স্বৈরাচারের জগদ্দল পাথর চেপে বসেছিলো। দেশকে পরিণত করা হয়েছিলো জুলুম- নির্যাতন, খুন-ধর্ষণ এবং দুর্নীতি-লুটপাটের অভয়ারণ্যে। কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে জাতীয় নেতাদের একের পর এক হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের পরও আজও বৈষম্য দূর হয়নি। সকল রাজবন্দী মুক্তি লাভ করলেও অসুস্থ জননেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন।’

তিনি অবিলম্বে জননেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেন, ‘অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোনের মাধ্যমে জনগণ দাবি আদায় করেই ছাড়বে।’

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসীবাদীরা পতনের আগের রাষ্ট্রের সকল অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে অর্জিত বিপ্লব ও বিজয় ব্যর্থ হবে। তাই সবার আগে দরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন। একই সাথে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে। বিশ্বের ৬২টি দেশে এ পদ্ধতি চালু আছে এবং তারা এর সুফল পাচ্ছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে দক্ষ সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে সংসদ সমৃদ্ধ হবে।’

এ সময় তিনি সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা, দারিদ্র, অপশাসন ও দুঃশাসন মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে একদফায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু আতাউর রহমান সরকার প্রমূখ।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। অধ্যাপক গোলাম আযম ও প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমসহ ইসলামপন্থীরা এ আন্দোলনের সূচনা ও নেতৃত্ব দিলেও রাম-বামেরা তা হাইজ্যাক করেছে। ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম হলেও তাকে অবমূল্যায়ন করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি করা হয়েছে। তাকে ‘২১ পদক থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি সকল প্রকার হীনমন্যতা পরিহার করে শহীদ অধ্যাপক গোলাম আযমকে তার প্রাপ্য সম্মান দেয়ার আহ্বান জানান।

উত্তরা মডেল থানা

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উত্তরা মডেল থানা জামায়াত আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় ও দোয়া অনুষ্ঠিত। মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য ও থানা আমির অ্যাডভোকেট মো: ইব্রাহিম খলিল সভাপতিত্বে এবং থানা কর্মপরিষদ ও থানা সেক্রেটারি বদিউজ্জামান বকুল সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উত্তরা মডেল থানার অফিস সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, তারবিয়াত সম্পাদক উসমান গনী জুয়েল, থানার প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক রাজিবুল হাসান নাঈমসহ ওয়ার্ড দায়িত্বশীল ও জনশক্তি প্রমূখ।

গুলশান যুব জামায়াতের মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

গুলশান পূর্ব থানা জামায়াত যুব ওয়ার্ডের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুব ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মিলন সরদারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিসে শূরার অন্যতম সদস্য ও গুলশান থানা পূর্বের সম্মানিত আমির জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন থানা মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা তোফায়েল আহমেদ ও আহসান উল্লাহ। আরো উপস্থিত ছিলেন থানা মজলিসে শূরা সদস্য ফারুক হোসেন ও ইব্রাহীম খলীল, শাহজাদপুর উত্তর ওয়ার্ডের সভাপতি মাইদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি মিরাজ হোসেন, শাহজাদপুর দক্ষিণ ওয়ার্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক, ঈদগাঁ ওয়ার্ডের সেক্রেটারি রহমতুল্লাহ ও লেকপাড় ইউনিটের সভাপতি আফজালুর রশীদ প্রমূখ।

তেজগাঁও উত্তর থানার আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প

তেজগাঁও উত্তর থানার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, ব্লাড গ্রুপিং কার্যক্রম শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে নাবিস্কো মোড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। থানা আমির আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি নাসিফুল হক নাসিফের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার। আরো বক্তব্য দেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মহসিন খান, আবু জাফর, শ্রমিক নেতা কাজী মুজিবুর রহমান, বাবর আলী, ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দীন ও মাস্টার নজরুল ইসলাম প্রমূখ।

বাড্ডা পশ্চিম থানার দায়িত্বশীল শিক্ষা বৈঠক

বাড্ডা পশ্চিম থানার দায়িত্বশীলদের নিয়ে শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি আতিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুর রব, বাড্ডা উত্তর থানার সংগ্রামী আমীর মাওলানা কুতুব উদ্দিন ও তালিমুল কুরান বিভাগের বাড্ডা-রামপুরা জোনের পরিচালক মাওলানা আতিকুর রহমান নুমানী। সভাপতিত্ব করেন বাড্ডা পশ্চিম থানা আমির আব্দুস সবুর ফরহাদ। সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন সোহাগের সঞ্চালনায় শিক্ষা বৈঠকে থানার বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিট ও ওয়ার্ড দায়িত্বশীলগণ উপস্থিত ছিলেন।

হাতিরঝিল পশ্চিম জামায়াতের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাসামগ্রী উপহার বিতরণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হাতিরঝিল থানা পশ্চিমের উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাসামগ্রী উপহার হিসেবে খাতা ও কলম বিতরণ করা হয়েছে। রাজধানীর রমনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে উপহার বিতরণী কার্যক্রমে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ও হাতিরঝিল থানা পশ্চিমের আমির মো: ইউছুফ আলী মোল্লা। সেক্রেটারি মো: রাশেদুল ইসলাম রাশেদের পরিচালনায় উপহার বিতরণী কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমির মো: নূরুল ইসলাম আকন্দ, বড় মগবাজার দক্ষিণ ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুল বাশির ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির হাতিরঝিল থানা পশ্চিমের সভাপতি সাজজাদ হোসাইন শিহাব প্রমূখ। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)


আরো সংবাদ



premium cement