জনগণ তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখতে চায় : মঈন খান
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:২৭

‘জনগণ তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখতে চায়’ মন্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, জনগণ তাদের ভোটের জন্য আজকের অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। শুধু দেশ পরিচালনা নয়, জনগণের আরেকটি প্রধান প্রত্যাশা হচ্ছে, দেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা এবং স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের আগে যেমন মানুষের স্বাধীনতা চাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, ঠিক একইভাবে আজ ২০২৫ সালে এসে মানুষ তাদের ভোট দেয়ার যে প্রত্যাশা, সেটির প্রতিফলন অবিলম্বে দেখতে চায়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চলে আসছে। ছাত্র-জনতা তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। গ্রামে গ্রামে আমাদের নেতাকর্মীরা রাত জেগে আন্দোলন করেছেন, মাঠে-মাঠে সংগ্রাম করেছেন। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই জুলুমের অবসান ঘটেছে।’
বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি যে আকর্ষণ রয়েছে তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালোভাবে আমাদের পর্যবেক্ষণ করছে। তারা জানে, আমরা যখন দায়িত্বে থাকব, তখন আমাদের তাদের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে শহীদ জিয়ার হাতে গড়া বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের আন্দোলন ছিল। সেই আন্দোলনের ফলস্বরূপ, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘটে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণকে গিনিপিগে পরিণত করার চেষ্টা করবেন না। যারা আতেল আছেন, বুদ্ধিজীবি আছেন, থাকেন। আমরা সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি কিন্তু জনগণের অধিকার কেড়ে নিবেন না। জনগণ এই দেশের মালিক, তারাই স্থির করবে এই দেশে কোন ধরনের সংস্কার হবে। বাংলাদেশের সংসদ বসে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। সুতরাং অতি শিগগিরই একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে অবনতির পথে। এই অবস্থা থেকে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে কেবলমাত্র একটি সঠিক ও দ্রুত নির্বাচন। আমরা জনগণের শাসন চায়, সংস্কার যদি করতে হয় নির্বাচিত সংসদ সংস্কার করবে। বাংলাদেশের জনগণ সংস্কার করবে। এক ধরনের আতেল বাংলাদেশে গজিয়ে উঠেছে, তাদের সাথে জনগণের সম্পর্ক নাই, তারা জানে যে জনগণ কখনো গ্রহণ করবে না। তাদের আজব আজব ধ্যান ধারণা জনগণের কাধে চাপিয়ে দিতে চায় ছাত্রদের মাধ্যমে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্ররা বয়সে তরুণ, সারা পৃথিবী দেখেই নাই তাদের। এখনো বাবার হোটেলে খায়, এখনো তাদের সে ধরনের ম্যাচিউরিটি আসে নাই। তবে তাদের ধন্যবাদ জানাই, তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। বিএনপির সাথে সাথে তারাও নেমেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিদায় করতে। আবারো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দেখছি, বিএনপির ১৬ বছরের সংগ্রামকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, মনে হচ্ছে এই দেড় মাসের সংগ্রামে যেন দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। এই দেড় মাসের সংগ্রামেও বিএনপি ৪২২ জন নিহত হয়েছে।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমাদের সচেতন হবে। বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ সরকার, তাদের মধ্যে অনেকে বলে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। তাহলে আমরা কী জন্য জীবন দিলাম এত কর্মী? গণতন্ত্রের জন্যই তো জীবন দিয়েছে। ভোটাধিকারের জন্য। আমরা তো বলি নাই বিএনপিকে ক্ষমতায় দিয়ে দেন। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, জনগণ যাকে ইচ্ছা বেছে নিক।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘গণতন্ত্রের লড়াই ১৭ বছর ধরে করেছি, এটা যারা অস্বীকার, অবজ্ঞা করে, মানতে চায় না তারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে এটা বলতে পারে না। এক মাসের জন্য সব হয়ে গেল, আর গণতন্ত্রের জন্য আমার যে বোনটা স্বামীকে হারিয়ে তার কথা ভুলে যায় এটা ভয়াবহ। বাংলাদেশ এক মাসে হয় নাই। ১৭ বছরের প্রচেষ্টায় হচ্ছে দেশকে উলট-পালট করে দেয়ার।’