১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৬ শাবান ১৪৪৬
`

পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার ইঙ্গিত নাহিদের

নাহিদ ইসলাম - ছবি - ইন্টারনেট

সরকারের পদ থেকে সরে গিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম।

তিনি মনে করেন, সরকারে চাকরি করার চেয়ে সরাসরি জনগণের সাথে কাজ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আজ শনিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ বলেন, ‘সরকারের (থাকার) চেয়ে জনগণের সাথে কাজ করা, মাঠে যাওয়া যদি বেশি জরুরি বলে মনে হয়, তাহলে আমি সরকার ছেড়ে দেবো এবং হয়তো সেই দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হব।’

সেটি এই মাসেই হবে কি না জানতে চাওয়া হলে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘যেহেতু দলের ঘোষণা এসেছে যে দলটি এ মাসেই হবে, কয়েকদিনের মধ্যেই সবাই এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাবে।’

‘শিক্ষার্থীরা তো এখন রাজনৈতিক দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে। তো আমার মনে হয় না যে তাদের আর সরকারে আসার কোনো প্রয়োজন আছে এই মুহূর্তে, বরং জনগণের কাছেই এখন তাদের বেশি প্রয়োজন।’

সরকার থেকে তিনি সরে দাঁড়ালে তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন- এর ব্যাখ্যায় সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন কেউ কিংবা বিদ্যমান উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে কে দায়িত্বে আসবে- কেবিনেটে (মন্ত্রিপরিষদে) এ বিষয়ে আলোচনা হবে।’

রাজনৈতিক দল গঠন ও ভোটের রাজনীতি যে দু’টি ভিন্ন বিষয়, তা জেনেই মাঠে নামা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে গোছানোর ওপরে, সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর এটা নির্ভর করবে জনগণের সমর্থন তারা কতটুকু ভোটে রূপান্তর করতে পারছে। জনগণের তো তরুণদের প্রতি একটা সমর্থন আছেই, সহানুভূতিও আছে যেহেতু তারা গণঅভ্যুত্থান করেছে।’

৫ আগস্টের পর থেকে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারছে বলে জানান নাহিদ। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সাথে সরকারের (অন্তর্বর্তী) দূরত্বও কমেছে বলে মনে করেন তিনি।

‘এই সরকারকে (অনেকে) অনির্বাচিত, অসাংবিধানিক ইত্যাদি বলছিল; আওয়ামী লীগের নেতারাও এভাবেই বলছিল। তবে পরে আমরা দেখেছি যে বিএনপি তার জায়গা পরিষ্কার করেছে, তাদের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছে যে আওয়ামী লীগের রাজনীতি তারা চায় না; বিচারিক প্রক্রিয়ায় তারা এটার (আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের) ব্যবস্থা চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের তো একটা ভোটব্যাংক আছে, হিস্ট্রিকালি (ঐতিহাসিকভাবে) আমরা দেখি। তবে সেটা কতটুকু বাড়বে বা কমবে, সেটা এখনই বলতে পারব না। কারণ এবারের ভোটের ইকুয়েশনটা (সমীকরণ) একটু ডিফরেন্ট (ভিন্ন) হবে বলে মনে হয় আমার।’

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা রাজনীতির মাঠে ফেরা না ফেরার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা এটা করতে চাই, কেবল নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কিছু করে দিতে চাই না। বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে, সকল তথ্য-প্রমাণ এলে এবং আদালতের সুপারিশক্রমে আওয়ামী লীগ বিষয়ে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।’

সেটি কবে নাগাদ হবে? জবাবে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘এ বছরের মধ্যেই। অবশ্য নির্বাচনের আগে তো আমাদের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবেই। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে সেটা সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে।’

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙচুর নিয়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘সরকার এই কার্যক্রমকে সমর্থন করে, এমন নয়। তবে ওই সময় যদি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে থামিয়ে দেয়া হতো, তাহলে সেটি আরো বেশি হটকারিতায় পরিণত হতে পারত।’

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement