৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

‘প্রতারক ক্ষমতায় থাকলে তার সন্তানরাও প্রতারক হয়, যেমন জয়-পুতুল’

বক্তব্য দিচ্ছেন রুহুল কবির রিজভী - ছবি : সংগৃহীত

‘প্রতারক যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে, তখন তার সন্তানরাও প্রতারক হয়’ মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘তার উদাহরণ পুতুলের নামে সূচনা সংগঠন এবং জয়ের নামে বিনিময় সংগঠনের কোনো অস্তিত্ব পায়নি দুদক। অথচ এই সংগঠনের নামে শত শত টাকা বরাদ্দ নিয়ে লুটপাট করেছে জয়-পুতুল।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ‘প্রতিবন্ধী রিকশাচালক মামুন’-এর জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলটির কোষাধ্যক্ষ ও আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন প্রমুখ।

শহীদ পরিবারের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘শহীদ পরিবার কোনো কিছুই প্রত্যাশা করে না। তাদের প্রত্যাশা ঘাতকদের বিচার। এই পরিবারগুলো এটাই দেখে যেতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘যারা টার্গেট করে গুলি করে, তাদের আত্মা মানুষের আত্মা না, তাদের আত্মার মধ্যে ছিল রক্তপিপাসু নেকড়ের কোনো আত্মা। তা না হলে এই ফুটফুটে শিশুদের গুলি করে মারতো না। শেখ হাসিনার কাছে নারী, শিশু, কিশোর মানবতার কোনো মূল্য নেই। ওর (হাসিনা) কাছে একটাই মূল্য, বাংলার সিংহাসনটা চাই, চাই।’

শেখ হাসিনা তার সিংহাসন রক্ষা করার জন্য সারাদেশে ১৬ বছর ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এই হাসিনা কত মায়ের কোল খালি করেছে, কত নারীকে বিধিবা করেছে, কত পরিবারকে সন্তান হারা করেছে, তার কোনো হদিস নেই। শেখ হাসিনার ক্ষমতার দেড় দশক ছিল এদেশের মানুষের জন্য শোকের বছর। গুম ছিল শেখ হাসিনার কাছে একটা খেলা। ক্রসফায়ারে হত্যা ছিল শেখ হাসিনার কাছে একটা আনন্দের বিষয়। সে বিরোধী পক্ষের লাশ, রক্ত দেখলে খুব খুশি হতো।’

প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজের মতো সাজিয়ে নিয়েছিল রাষ্ট্র ক্ষমতার জোরে। কই? এখন সামাজিক সংঘাতে কত মানুষ মারা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এটা দমনে তো কোনো ভূমিকা দেখি না। অপরাধীদের তো গ্রেফতার করে না। অথচ এই পার্টি অফিস (বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়) থেকে একটা মিছিল বের হলে, মৌমাছির মতো ঘিরে ফেলতো। বিরোধী নেতাকর্মীরা যদি ধান ক্ষেতে, বাঁশ ঝাড়ে বসে লুকিয়ে থাকতো, সেখান থেকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যেত। আজ যারা সমাজের অপরাধী তাদেরকে গ্রেফতার করে সমাজের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা হচ্ছে না। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ শত মানুষকে হত্যা করেছে, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? কারা এই অপরাধীদের রেহাই দিচ্ছে, তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করে রাখছি। এদের বিচার করলে শহীদ পরিবারে রাগ কিছুটা শীতল হতো। বরং আমরা কী দেখছি! মামলার নামে যে বাদি সে বিএনপির আরেক কর্মীর নামে মামলা করছেন, এই চক্রান্ত প্রায় জায়গায় হচ্ছে। কারা এই কাজগুলো করছেন, সেটা আমরা জানি।’

শেখ হাসিনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সে শিশু হত্যা করতে পারে। তার পরিবারের দুর্নীতি তো এখন সবার জানা। ভাগ্নি-ভাগ্নের নামে প্লট। শুনলাম আওয়ামী লীগ নাকি মাঠে নামার কর্মসূচি দিয়েছে। জানি না। হয়তো প্রতিক্রিয়া জানার জন্য। তিনি আবার ক্ষমতা ফিরে পেতে চান। ছাই থেকে জন্ম নিতে চায়। এত সাহস পায় কই থেকে?’

এগুলো সরকারকে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানান রিজভী।


আরো সংবাদ



premium cement