৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

‘২০২৩ সালের ঘটনাকে সাম্প্রতিক যুবলীগ কর্মী হত্যা হিসেবে প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা’

-

ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার ২০২৩ সালে এক তরুণের লাশ উদ্ধারের ঘটনাকে সাম্প্রতিক যুবলীগ কর্মীকে হত্যার ঘটনা দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচারকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে প্রমাণ করেছে।

বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাটি জানায়, সম্প্রতি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে গাছে ঝুলে থাকা এক তরুণের লাশের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে যে, এই লাশটি একজন যুবলীগ কর্মীর এবং তাকে হত্যা করা হয়েছে। রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই লাশটি কোনো যুবলীগ কর্মীর নয় এবং লাশ উদ্ধারের ঘটনাটিও সাম্প্রতিক সময়েরও নয়। ২০২৩ সালে ১২ নভেম্বর বিগত সরকারের আমলে শাফিন মিয়া নামের অনার্স পড়ুয়া এক তরুণের লাশের ভিডিও এটি।

ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানের শুরুতে ওই ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘মিঠাপুকুর, রংপুর আপডেট খবর’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর ‘মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসী দামুয়া এলাকায় শাফিন নামে এক অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির তরুণের পোশাক ও পারিপার্শ্বিক বিষয়বস্তুর মিল রয়েছে।

অনুসন্ধানে পাওয়া যায় অনলাইন এ রংপুরডট২৪ নামের (Online A Rangpur.24) নামের অপর একটি ফেসবুক পেজেও সে বছরের একই দিনে ‘মিঠাপুকুরে শিক্ষার্থীসহ ২ জনের লাশ উদ্ধার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ওই ঘটনায় ওই তরুণের ভিন্ন এঙ্গেলের অপর একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টের ক্যাপশন থেকেও তরুণের বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ওই লাশটি শাফিন মিয়া নামের এক তরুণের। তিনি সে সময়ে অনার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। সে সময় তাকে হত্যা করে পুকুর পাড়ের একটি আম গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে দাবি করা হয়েছে।

ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাটি জানায় যে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর ‘মিঠাপুকুরে ছাত্রকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে বছর মিঠাপুকুরে সাফিন মিয়া নামে এক ছাত্রকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠে। উক্ত উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসী বেকীপাড়া গ্রাম থেকে সে সময় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শাফিন ওই গ্রামের সেকান্দার আলীর ছেলে।

অনুসন্ধানে সে সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে ‘গাছে ঝুলছিল রংপুর কারমাইকেল কলেজ ছাত্রের মরদেহ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আলোচিত তরুণ শাফিন মিয়া রংপুরের কারমাইকেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার নিশ্চিত করেছে যে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ২০২৩ সালে এক তরুণের লাশ উদ্ধারের ঘটনাকে সাম্প্রতিক যুবলীগ কর্মীকে হত্যার ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।


আরো সংবাদ



premium cement