কোকোর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে : ডা. জাহিদ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৩
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না জানিয়ে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে। এর সাথে জড়িত যারাই থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
ডা. জাহিদ আরো বলেছেন, আরাফাত রহমান কোকো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি ক্রীড়াঙ্গণে একজন মেধাসম্পন্ন সংগঠক ছিলেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে আজ বাংলাদেশের ক্রিকেট সারা পৃথিবীতে একটি পর্যায়ে চলে এসেছে। এই অবদান তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে দেয়া হলে সেটি ইতিহাসকে বিকৃত করা হবে।
আরাফাত রহমান কোকোকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়ার এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, কোকোর এই মৃত্যুকে আমরা কখনই স্বাভাবিকভাবে নিইনি এবং এখনো নিচ্ছি না। কাজেই আমরা এটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, এর মূল রহস্যে কী আছে। সে অনুযায়ী এর সাথে সম্পৃক্ত যারাই আছেন তাদের আইনের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে সব সময়ই চেষ্টা করব।
এসময় দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষ জিয়া পরিবারের প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এজন্য তিনি কৃতজ্ঞতাও জানান।
ডা. জাহিদ আরো বলেন, এখানে অনেকেই আছেন যারা নিজ কানে শুনেছেন ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’ ২৬ এবং ২৭ মার্চ ১৯৭১-এ আমরা অনেকেই শুনেছি। কাজেই আমরা যারা শুনেছি তারা জানি, যারা পালিয়ে গেছে তারা দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার কথা ছিল। তা না করে পালিয়ে গেছে, আবার কেউ আত্মসমর্পণ করেছেন।
তিনি বলেন, যে মানুষটি নিজের দু’টি নাবালক শিশুর কথা ভুলে গিয়ে দেশ প্রেমের কথা চিন্তা করে নিজের সহধর্মীনির কথাও মনে রাখেন নাই। শুধু সামনে এগিয়ে গেছেন দেশ এবং দেশ প্রেমে সাড়া দিয়ে। নিজের পরিবারকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যে মানুষটি অস্ত্রহাতে রনাঙ্গণে যুদ্ধ করেছেন সেই মানুষটি হচ্ছেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে ঘোষণা হয়েছে যে সিলেটে প্রথম সেক্টর কমান্ডরদের মিটিং হয়েছে জেনারেল ওসমানীর নেতৃত্বে। সেখানেই প্রথম ১ নম্বর সেক্টর কামান্ডার হয়েছেন জিয়াউর রহমান। আবার সেখানেই জেড ফোর্স গঠন করা হয়েছে, সেটার কমান্ডারও জিয়াউর রহমান। কাজেই বিএনপি গর্ব করবে। আপনাদের ইতিহাস পালিয়ে যাওয়ার নয়, সামনের দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।
মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে ডা. জাহিদ বলেন, জিয়াউর রহমান সেই মানুষ, ৭ নভেম্বর যে মানুষকে এই দেশের সিপাহী জনতা বন্দি দশা থেকে মুক্ত করে এনেছিলো। তখন বিএনপি ছিল না, কোনো অঙ্গসহযোগি সংগঠন ছিল না। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস ছিল ওই মানুষটির ওপর, যে উনাকে যদি দায়িত্ব দেয়া যায় তাহলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অখণ্ড থাকবে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান নিজে ক্ষমতায় বসেননি। সিপাহী জনতা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। তার পরেও তিনি গণভোট দিয়েছিলে। তখন জনগণের মেন্ডেড নিয়েই ক্ষমতায় ছিলেন। মাত্র সাড়ে চার বছরের শাসনামলে তলাবিহীন দেশের তলা লাগিয়ে ছিলেন। কাজেই যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলেন, আগে তারা আয়নায় নিজের মুখ দেখবেন।
তিনি আরো বলেন, দেশে যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না হতো, মুক্তিযুদ্ধ না হতো, আপনারা কোনো অবস্থাতে ৯০ও দেখতেন না, ২৪ এর ৩৬ জুলাইও দেখতেন না। বহু মানুষের ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়েই আজকের বাংলাদেশ।
ডা. জাহিদ আরো বলেন, আমরা যেমন আবু সাঈদের কথা ভুলব না, মুগ্ধের কথা ভুলব না, ঠিক একইভাবে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের কথাও ভুলব না। গত ১৫টি বছর গণতন্ত্র পুরুদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছে, তাদের সবাইকে যার যার সম্মান দিতেই হবে। কাজেই বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ মালেক বলেন, খালেদা জিয়া তো সুস্থ অবস্থায় জেলে গেছেন। তাকে তিলে তিলে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর বিচার করতেই হবে। আর এখন ছাত্ররা দেশ চালাচ্ছেন। ছাত্ররা দেশ চালালে শিক্ষকরা কী করবেন?
অনুষ্ঠানের পরিচালনা করেন আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কোঅর্ডিনেটর আবু নাছের শেখ ও শরফরাজ শরফুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য দেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ প্রমুখ।
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা