১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৫-এর প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত

- ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৫-এর প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর মগবাজরস্থ আলফালাহ মিলনায়তনে দু’দিনব্যাপীর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

উদ্বোধনী বক্তব্য :
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু আলা নাবিয়্যিল কারিম। ওয়ালা আলিহি ওয়াআসহাবিহি আজমাইন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী, কোটি ছাত্র-জনতার হৃদয়ের স্পন্দন, শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের প্রথম সাধারণ অধিবেশন ২০২৫-এর শ্রদ্ধেয় উদ্বোধক ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের শহীদ সামিউ আমান নূর ভাইয়ের গর্বিত বাবা মো: আমান, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, সম্মানিত সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের প্রাণপ্রিয় সদস্যবৃন্দ ও আমন্ত্রিত দায়িত্বশীল ভাইয়েরা-আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

সর্বপ্রথম মহান রবের নিকট মস্তক অবনতচিত্তে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি, যাঁর অপার করুণায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আমরা সেশনের শুরুতে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের প্রথম সাধারণ অধিবেশন আয়োজন করতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। দরুদ ও সালাম পেশ করছি বিশ্বমানবতার মহান শিক্ষক হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত-বরণকারী সকল ভাই-বোনকে। আরো স্মরণ করছি ব্রিটিশবিরোধী আজাদী আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের মাজলুমের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের শহীদ বীরদের।

বিশেষভাবে স্মরণ করছি ছাত্রশিবিরের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি শহীদ মীর কাশেম আলী ও দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় সভাপতি শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান রাহিমাহুমুল্লাহসহ ইসলামী আন্দোলনের সকল শহীদ সিপাহসালারকে, যাদের মিথ্যা ও সাজানো মামলায় অন্যায়ভাবে শহীদ করা হয়েছে। আজকের এই দিনে স্মরণ করছি ছাত্রশিবিরের শত শত শহীদ ভাইকে, যারা বাতিলের মোকাবিলায় দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে বুকের তাজা খুনে এই জমিনকে সিক্ত করেছেন। মুক্তি কামনা করছি আমাদের প্রিয় দায়িত্বশীল এটিএম আজহারুল ইসলাম ভাইয়ের, যাকে অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে তার দ্রুত মুক্তি দাবি জানাচ্ছি।

দু’আ করছি নিজভূমিতে নির্মম গণহত্যার শিকার মজলুম ফিলিস্তিনিদের জন্য, আল্লাহ তাদের সকলের শাহাদাত ও ত্যাগকে কবুল করুন। আল্লাহর অপার মহিমায় ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে, যেটা আসলে লড়াকু ফিলিস্তিনিদের এক ঐতিহাসিক বিজয়, যারা দখলদারদের সামরিক শক্তিমত্তা ও অব্যাহত গণহত্যার মধ্যেও অসাধারণ দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছেন। আমরা মজলুম ফিলিস্তিনিদের এ বিজয়ের জন্য আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করতে গিয়ে এবং ফ্যাসিবাদের দমন-পীড়নে নানা সময়ে যারা আহত হয়েছেন, আল্লাহর নিকট তাদের সুস্থতা ও কুরবানির কবুলিয়াত কামনা করছি। আমাদের ভাই ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসসহ যে সকল ভাই এখনো গুম অবস্থায় আছেন, আল্লাহ যেন তাদের প্রত্যেককে সুস্থ অবস্থায় আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন, আল্লাহুম্মা আমিন।

সম্মানিত উপস্থিতি,
কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সর্বোচ্চ ফোরাম। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগমুক্ত নতুন বাংলাদেশে নতুন সাংগঠনিক সেশনে বিদ্যমান জাতীয় বাস্তবতায় শুরু হওয়া এ অধিবেশন বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। গুরুত্বপূর্ণ এ অধিবেশনে আপনাদের সবাইকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।

সুপ্রিয় উপস্থিতি,
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের শাসনামলে দীর্ঘ ১৬ বছর বাংলাদেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করেছে পঙ্গু। দেশের মানুষকে নানাভাবে দ্বিধাবিভক্ত করে আমাদের জাতীয় সংহতিকে দুর্বল করার নানামুখী অপতৎপরতা চালিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে গুম, খুন ও নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে মুক্তিকামী মানুষের ওপর। বিশেষত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় ও অমানবিক দমন-পীড়ন চালিয়েছে। অবশেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনার ভারতে পলায়নের মধ্য দিয়ে এক শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তি মিলেছে। কিন্তু যে দেড় হাজার ছাত্র-জনতার রক্ত ও হাজার হাজার মানুষের আহত হওয়ার মধ্য দিয়ে এ মুক্তি এসেছে, আমরা এ ঋণের দায়ে আবদ্ধ।

ফ্যাসিস্ট হাসিনা পলায়নের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও বাংলাদেশের প্রশাসন এখনো পুরোপুরি ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। বরং ফ্যাসিবাদের দোসররা নানাভাবে বাংলাদেশকে অশান্ত, অকার্যকর ও অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ছাত্র-জনতার ওপর যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের সিংহভাগ এখনো গ্রেফতার হয়নি। যারা গ্রেফতার হয়েছে, এখনো বিচার হয়নি। এমনকি অভিযুক্তরা গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। অনেক অপরাধীকে নির্বিঘ্নে সীমান্ত পার হয়ে যেতে সহযোগিতা করা হচ্ছে। অনলাইন ও অফলাইনে আমরা খুনিদের আস্ফালন দেখতে পাচ্ছি।

আওয়ামী লুটতন্ত্রের সময়ে দেশের মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে, তা উদ্ধারের উদ্যোগও অপর্যাপ্ত। বরং লুটেরারা এ অর্থ বাংলাদেশকে অশান্ত করার জন্য ব্যয় করছে। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের অনেক আহত বীর এখনো শহীদ হচ্ছেন, অনেকে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, কিন্তু তাদের সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করার উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। একদিকে আমরা শহীদদের দাফন করছি, অন্যদিকে খুনিরা আজও মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন দৃশ্য আমরা দেখতে চাই না।

মানুষ একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে জুলাই ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষিত যে পরিবর্তন, রাষ্ট্রের কাঙ্খিত সংস্কারসমূহ এখনো ভালোভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না। এ কার্যক্রমে আমরা খুবই ধীরগতি লক্ষ্য করছি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল ঐক্য এবং শাহাদাতের তামান্না। ঐক্যের স্পিরিটে শ্রেণি-পেশা, দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছিল। শাহাদাতের তামান্নার স্পিরিটে ফ্যাসিস্টের গণহত্যার মুখেও ছাত্র-জনতা রাজপথ থেকে পালিয়ে না গিয়ে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা প্রদর্শন করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। কিন্তু অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা আমরা দেখছি।

আমরা ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, শহীদ-গাজীদের আকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন যদি আমরা নিয়ে আসতে চাই, তাহলে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে আমাদের সবসময় ধারণ করতে হবে ও সমুন্নত রাখতে হবে। এ দু’টি স্পিরিটকে যদি আমরা সমুন্নত রাখতে পারি, তাহলে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের শহীদদের স্বপ্ন পূরণে আমরা ভূমিকা রাখতে পারবো, ইনশাআল্লাহ। অন্যথায় এ স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির শুরু থেকেই ঐক্যকে ধারণ ও বিকশিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আগামী দিনেও দৃঢ়তার সাথে এ ভূমিকা পালন করবে। ইনশাআল্লাহ।

সম্মানিত উপস্থিতি,
পতিত স্বৈরাচারের সময় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষাখাত। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কাজটি যেভাবে হওয়া উচিত ছিল, সেভাবে হচ্ছে না। আমরা দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও অভিজ্ঞদের নিয়ে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করে নৈতিকতা ও আধুনিকতার সমন্বয়ে একটি যুগোপযোগী শিক্ষাপদ্ধতি চালু করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তাদের দেশের সম্পদে পরিণত করতে হবে।
আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবাসন সঙ্কট প্রকট। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। চলমান ছাত্র আন্দোলনে আমরা সংহতি জানাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে এ সমস্যার শিক্ষার্থীবান্ধব সমাধান নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেইসাথে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক হল নির্মাণ করে শতভাগ শিক্ষার্থীকে হলে সিঙ্গেল আসন বরাদ্দ দেয়া এবং হলে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য ধর্মীয় শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ চালু করার আহ্বান জানাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের ইসলামবিদ্বেষী শাসনামলে বাংলাদেশের মাদরাসাসমূহ অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখনো দেশের মাত্র তিনটি মাদরাসা সরকারি আর অল্প কিছু মাদরাসায় অনার্স-মাস্টার্স রয়েছে। কোনো মাদরাসায় ব্যবসা শিক্ষা বিভাগ নেই। মাদরাসাসমূহে অনার্স-মাস্টার্সের সুযোগ বিস্তৃত করার পাশাপাশি আলিয়া ও কওমি সকল মাদরাসা শিক্ষার্থী যেন পড়াশোনা শেষ করার পর সম্মানজনক কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারেন, এটা নিশ্চিতকরণে এ শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরিতে সুযোগ বাড়াতে হবে। মাদরাসাসমূহে কমার্স চালু করতে হবে।

প্রিয় ভাইয়েরা,
বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে বিগত সাড়ে তিন দশক ধরে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়নি। অথচ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা ও শিক্ষার্থীদেরকে আগামী দিনের নেতৃত্ব হিসেবে তৈরির জন্য এ নির্বাচনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এখন পর্যন্ত হাতে গোণা মাত্র দু’য়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। অবিলম্বে সকল ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘ আড়াই দশকের গণতন্ত্রহীনতা পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে।

বুধবার এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশে আবার নতুন করে ফ্যাসিবাদী গ্রুপ তৈরি হচ্ছে যারা কোনো ধরনের সত্যতার যাছাই না করেই ছাত্রশিবিরের ওপর নিজেদের অপকর্মের দায় উঠিয়ে দেন। এসব মিথ্যাচার বন্ধ না করলে আমরা তাদের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরআন পোড়ানো হয়েছে। এ সকল ঘটনার নিন্দা জানানো ভাষা আমাদের জানা নেই। অবিলম্বে এ সকল ঘটনা দায়িদের আইনের আওতায় এনে সবার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাহাড় নিয়ে যারা নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত, তাদের এ সকল অপতৎপরতা বন্ধে সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্মানিত কার্যকরী পরিষদ সদস্য ভাইয়েরা,
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংবিধান কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের দায়িত্ব স্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করেছে। সংবিধানের ২২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘সামগ্রিকভাবে কার্যকরী পরিষদের ও ব্যক্তিগতভাবে এর সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের তত্ত্বাবধান, কেন্দ্রীয় সভাপতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনে ইসলামী নীতির অনুসৃতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণ, সংবিধান অনুসৃতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনের যেকোনো ত্রুটি দূরীকরণ, সংগঠনের সামগ্রিক কাজের মৌলিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় সভাপতিকে পরামর্শ দান, নিঃসংকোচে মত প্রকাশ এবং কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে নিয়মিত যোগদান অথবা অভিমত প্রেরণ।’

এ দায়িত্বগুলো পালনের জন্য আমাদের নিজেদের ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকতে হবে। নিজের ব্যক্তিগত পরিশুদ্ধিতা থাকলে এ সবগুলো বিষয়ই আমাদের জন্য সহজ হবে, ইনশাআল্লাহ। রাসূল (সা.)-কে একবার একজন সাহাবী জিজ্ঞেস করেন- একজন ব্যক্তি কিভাবে নিজের পরিশুদ্ধিতা অর্জন করতে পারে? রাসূল (সা.) বলেন- ‘আঁইয়া'লামা আন্নাল্লাহা আজ্জা ওয়াজাল্লা মায়াহু হাইসু কানা।' অর্থাৎ, ব্যক্তি জানবে যে, সে যেখানেই থাকুক না কেন, আল্লাহ তা’য়ালা তার সাথে আছেন (এটার মাধ্যমে ব্যক্তি পরিশুদ্ধিতা অর্জন করতে পারে)। (তাবারানি, আল মু’জামুস সগীর)

সুতরাং, আমরাও সব সময় সকল অবস্থায় আল্লাহ তা’য়ালার উপস্থিতির অনুভূতি অন্তরে ধারণ করবো। তাহলে আমাদের ব্যক্তিগত পরিশুদ্ধিতা আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। এটার মাধ্যমে সংবিধান কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালনও আমাদের জন্য সহজ হবে।

কার্যকরী পরিষদের প্রথম সাধারণ অধিবেশনে যেহেতু সংগঠনের বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও পাস হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ আরো নানা সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে, তাই পুরো অধিবেশনজুড়ে সবাই স্বতঃস্ফূর্ত থাকা এবং নিংসঙ্কোচে মতপ্রকাশ করা জরুরি। কোরআনের ভাষায় ‘ওয়াক্বুলু কাওলান সাদিদা’ অর্থাৎ, তোমরা সরল-সোজা কথা বল। আমরাও আমাদের জীবনে এ আমলের চর্চা নিশ্চিত করবো।

প্রাণপ্রিয় ভাইয়েরা,
আমাদের এবারের অধিবেশন ২২ জন ভাইয়ের জন্য শেষ কার্যকরী পরিষদ অধিবেশন। দীর্ঘ সাংগঠনিক জীবনে ভাইয়েরা ইসলামী আন্দোলনের কাজে যে সময় দিয়েছেন, আল্লাহ যেন সেগুলো কবুল করেন, তার জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করছি। অধিবেশনে আগত সকল সম্মানিত অতিথিবৃন্দ ও সম্মানিত দায়িত্বশীল ভাইদের শুকরিয়া জানাচ্ছি। আশা করছি, আপনাদের সবার আন্তরিক অংশগ্রহণে এই অধিবেশন সফল ও সার্থক হবে, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই অধিবেশনকে কবুল করুন। আমিন। বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement

সকল