১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`

খালেদা জিয়া এখন ‘অনেকটা বেটার’ : মির্জা ফখরুল

উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে বেগম খালেদা জিয়া - সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্য-সেবায় ঐতিহ্যবাহী ও সর্ববৃহৎ হাসপাতাল ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকে’ চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে চিকিৎসা-সেবা শুরুর সাত দিনের-মাথায় তার শারীরিক অবস্থা ‘অনেকটা বেটার’ বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলীয় শীর্ষ নেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা লন্ডনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া ‘অনেকটা বেটার’ আছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারাও পত্র-পত্রিকায় খবর দিচ্ছেন, আমরাও খবর নিয়েছি, উনি (বেগম খালেদা জিয়া) মানসিক এবং শারীরিক উভয় দিক থেকেই আলহামদুলিল্লাহ আগের চাইতে অনেকটা বেটার (ভালো)।’

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের সেন্ট্রাল-ওয়েস্টস্থ বিশেষায়িত হাসপাতাল লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

বেগম খালেদা জিয়া কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান। অত্যাধুনিক স্বাস্থ্য-সেবা সম্বলিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি গত ৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১২টায় বিএনপি চেয়ারপারসন এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করে। কাতারের দোহায় যাত্রা-বিরতিসহ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি পরের দিন ৮ জানুয়ারি লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিট) হিথ্রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছায়। সেখান থেকে তাকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নেয়া হয়। তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে হাসপাতালে নেন। বেগম খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ অর্থাৎ তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমানও এ সময় সাথে ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বড় ছেলের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, নাতনী ব্যারিস্টার জাইমা রহমান (তারেক রহমানের মেয়ে) এবং জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানের (দু’জনেই আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে) সার্বক্ষণিক সান্নিধ্যে মানসিকভাবেও প্রশান্তিতে রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তিনি ছেলের বাসায় রান্না করা খাবার খাচ্ছেন। সকাল ও বিকেলের নাস্তাও বাসা থেকে দেয়া হচ্ছে। ছেলে তারেক রহমান নিজেই খাবার নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের সফরসঙ্গী, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এনামুল হক চ্যেধুরী এবং যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতারা লন্ডনে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এবং বিভিন্ন সময়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের মাধ্যমে ঢাকার সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো ভিডিও বার্তায় এসব তথ্য তুলে ধরেন।

৭৯ বছর বয়সী বেগম সখালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা আরো বেড়ে যায়। তিনি জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েন কয়েকবার। এ জন্য রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে দীর্ঘ সময় তাকে চিকিৎসাধীনও থাকতে হয়েছে।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement