১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬
`

নৈরাজ্যমুক্ত পরিবহন সেক্টর গঠন করতে হবে : শামসুল ইসলাম

বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আ ন ম শামসুল ইসলাম। -

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল। টার্মিনাল দখল, চাঁদাবাজি ও এমন কোনো অপকর্ম নাই যা তারা করেনি। আগামী দিনে দেশের পরিবহন সেক্টর হবে নৈরাজ্য মুক্ত। পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনকে সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

তিনি শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে অঞ্চল সভাপতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কবির আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে পরিবহন সেক্টরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, বিগত দেড় যুগে আমরা দেখেছি সরকার পরিবহন সেক্টরের উপর ভর করে দেশে অপরাজনীতির নষ্ট খেলায় মেতে উঠেছিল। দেশের নিরীহ পরিবহন শ্রমিকদের দিয়ে দেশের মানুষদের সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে। তারা বিভিন্ন টার্মিনাল দখল করে তাদের মর্জিমত পরিচালনা করেছে। কথায় কথায় তারা বাস বন্ধ করে দিতো। বিরোধী দলের সভা সমাবেশের আগে সারাদেশের পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতো। গুটি কয়েক নেতা নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য ৪০ লাখ শ্রমিককে জিম্মি করে রেখেছিল। অথচ করোনা মহামারীর সময় এসব নেতাদের শ্রমিকদের পাশে দেখা যায়নি। করোনার সময় পরিবহন শ্রমিকরা না অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করেছে। কিন্তু এসব কথিত শ্রমিক নেতারা কোনো দিন শ্রমিকের খোঁজ নিতে যায়নি। উল্টো সরকারের দেওয়া প্রণোদনা তারা মেরে খেয়েছে।

তিনি বলেন, শ্রম আইনে মালিকপক্ষ-শ্রমিকপক্ষ কারা হবেন, তার সুস্পষ্ট সংজ্ঞা থাকলেও আমাদের দেশে পরিবহন মালিকরা শ্রমিক নেতা বনে যাচ্ছে। এই ধারা বন্ধ করতে হবে। শ্রমিক নেতা হবেন শ্রমিকদের মধ্য থেকে। তারা পরিবহনের মালিক হবেন না। পরিবহন মালিকরা মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন দুটোই নিয়ন্ত্রণ করতে চান। এর মাধ্যমে তারা মূলত নিজেদের ব্যবসার ফায়দা তুলতে চান। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, পরিবহন শ্রমিক সেক্টর শ্রমিকদের হাতে থাকবে। শ্রমিকরা আর নষ্ট রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহার হবে না। শ্রমিকরা তাদের ও দেশের স্বার্থ আপোষহীন ভূমিকা রাখবে। কারো রক্তচক্ষুকে শ্রমিকরা আর ভয় করবে না। আমরা ঘোষণা করছি, দেশের কোনো টার্মিনালে দখলদার ও চাঁদাবাজদের স্থান আর হবে না। চাঁদাবাজ ও দখলদার মুক্ত টার্মিনাল গঠনের জন্য শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। গুটিকয়েক দখলদার ও চাঁদাবাজদের জন্য দুর্নাম হয় ৪০ লাখ শ্রমিকের। শ্রমিকরা দিনরাত পরিশ্রম করে দুর্নামের জন্য না। আগামী দিনে যারা টার্মিনাল দখল ও চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হবে না। সরাসরি আইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের এখনো নানাবিধ সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে এসব সমস্যা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমাধানের দাবি জানাচ্ছি। বিশেষত শ্রমিকদের ড্রাইভিং লাইন্সেস নিয়ে বিআরটি যে টালবাহানা করে তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের উপর ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। মালিকদের অবশ্যই প্রতিটি শ্রমিককে নিয়োগপত্র প্রদান করতে হবে। সর্বোপরি পরিবহন শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে তারা দেশের অগ্রগতির অন্যতম চালিকা শক্তি। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement