চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া
সুস্থ হয়ে দেশ ও দলের হাল ধরবেন, প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের- অসীম আল ইমরান, ঢাকা
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৫, আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০২
উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ১৫ মিনিটে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়।
এর আগে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে তার বাসার সামনে ভিড় জমাতে থাকে নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার আমাদের নেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি দিতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু পতিত সরকার এ অনুমতিটুকু দেয়নি। জুলাই-আগস্ট এ ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আমাদের নেত্রী মুক্তি পেয়েছেন, আজ চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন, আমরা খুব খুশি। আমাদের সকলের প্রত্যাশা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দেশ ও দলের হাল ধরবেন। সুস্থ হয়ে মা-ছেলে (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান) একসাথে দেশে ফিরবেন, আশাবাদী আমরা।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬টা ১০ মিনিটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফিরোজায় আসেন, তিনি ৬টা ৩৫ মিনিটে বাসভবন থেকে বেরিয়ে যান। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সভাপতি আমিনুল হকসহ দলটির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বাসায় প্রবেশ করেন।
দলের চেয়ারপারসনকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে এসে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় আমরা বারবার আবেদন করেছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি, চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেনি। দেশের ১৬ কোটি মানুষের দোয়ায় আমাদের নেত্রী যেন সুস্থ্ হয়ে দেশে ফিরে আসেন, এটা আমাদের সকলের প্রত্যাশা।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘দেশের মানুষের প্রত্যাশা, চিকিৎসা শেষে মা ও ছেলে একসাথে দেশে আসবেন।’
মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের মানুষের আবেগের জায়গায়। আমাদের নেতা তারেক রহমান মাকে নিয়েই দেশে ফিরবেন, এটা আমাদের আশা।’
যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন বলেন, ‘বেগম জিয়া ও তারেক রহমান এদেশের মানুষের আবেগ ও ভালোবাসার প্রতীক। এ দেশের প্রত্যেকটি মানুষ প্রত্যাশা করে তিনি সুস্থ্ হয়ে দেশে ফিরে দল ও দেশের হাল ধরবেন। বেগম জিয়ার সাথে তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলে আমরা আশা করি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাত ৮টা ১৬ মিনিটে বাসা থেকে বিমান বন্দরে উদ্দেশে বের হলে রাস্তায় মানব প্রাচীর দেখা যায়, নেতাকর্মীর সাথে জনতাও নেমে আসেন রাস্তায়, গাড়ি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্সকে ( সিএসএফ) হিমশিম খেতে দেখা গেছে। সেইসাথে নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। খালেদা জিয়াকে এক নজর দেখতে, নানা বয়সী মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়াচ্ছেন, অনেকে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করতে দেখা গেছে, অনেকে রিস্ক নিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়ি ধরে ছবি তুলতে দেখা গেছে। নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাসিত হয়ে 'খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া' তারেক জিয়া, ' খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই ' ইত্যাদি স্লোগানে এলাকা মুখরিত করে তোলেন। মানব প্রাচীর চাপে ধীর গতিতে চলে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটি, ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহরটি পৌঁছে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে।
জানা গেছে, রাত ১১টা ১০ মিনিটে বিমানে ওঠেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন চেয়ারপারসনের সঙ্গী হিসেবেই আছেন।
৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘দলের চেয়ারপারসন আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, ‘একসাথে কাজ করো, জনগণের পক্ষে কাজ করো, গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করো।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা