অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে : বুলবুল

অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘সংস্কারের অনেকগুলো কমিটি করেছে। সেই কমিটিগুলো আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই রিপোর্ট দিবে বলে আশা করছি। শুধু নির্বাচন কমিশনই নয়, জনগণের প্রয়োজন হচ্ছে পুরো রাষ্ট্রের সংস্কার। আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি, অনিয়ম ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল, পরিকল্পিতভাবে গোটা রাষ্ট্রকে শেষ করে দিয়েছিল। তাই এখানে বিভিন্ন ধরণের সংস্কার প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘জনগণ শুধু নির্বাচন নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিচারব্যবস্থার সংস্কার চায়। এখানে সংবিধান সংশোধনসহ বহুবিধ রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রয়োজন। এই অন্তবর্তী সরকার ইতোমধ্যেই ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই রিপোর্ট পেশ করার কথা বলেছে। সে বিষয়ে ভালো কিছুর আশা করছে দেশবাসী। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য অন্তবর্তী সরকার ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে সে আশা আমরাও করছি। এর মধ্য দিয়েই আগামী দিনে দেশে গণতান্ত্রিক ধারায় জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে সবাই স্বপ্ন দেখছে।’

রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর লালবাগ এলাকায় শীতবস্ত্র উপহার দেয়ার সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও লালবাগ থানা আমির ড. শামীমুল বারীর সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মু: আবুল খায়েরের সঞ্চালনায় শীতবস্ত্র উপহার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও অত্র জোন পরিচালক আব্দুর রহমান, ব্যবসায়ী নেতা ও আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক হাফেজ এনায়েতুল্লাহ, লালবাগ রহমতুল্লাহ হাই স্কুল অ্যান্ড মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ আবুল কাশেম। এছাড়া লালবাগ থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাফিস আব্দুল্লাহসহ ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘জনগণ যেমন তাদের প্রতিনিধির হাতে দেশের শাসন ভার তুলে দিয়ে চায়, তেমনি কোনো সংস্কার সংশোধন ছাড়াই তড়িঘড়ি করে নির্বাচন চায় না। কারণ একেবারে কোনো সংস্কার ছাড়াই আগের নিয়মে আবার কেউ দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনুক এটা জনগণ দেখতে চায় না। এজন্যই আমরা বলি, অন্তবর্তী সরকার সংস্কারের মাধ্যমে সকল সেক্টরে একটি নিয়ম শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দিয়ে সর্বক্ষেত্রে নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করবে। না হলে জনগণ আবারো প্রতারিত হওয়ার পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।’

তিনি বলেন, ‘দেশজুড়ে শৈতপ্রবাহ চলছে। আজ রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল কষ্টে থাকা মানুষের কাছে গিয়ে শীতবস্ত্র উপহারসামগ্রী পৌঁছে দেয়া। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এমন কর্মসূচি সবসময় করে আসছি। আমরা আগেও দেখেছি জনগণের কষ্ট লাঘবে কোনো ভূমিকা ছিল না। সেই আওয়ামী লীগের ধারা এখন দেশে আর চলতে পারে না। জনগণের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা ছিল না। কিন্তু এখন জনগণের চিন্তায় অন্তবর্তী সরকার অবশ্যই অসহায়দের পাশে এসে দাঁড়াবে আমরা সে আহ্বান করছি। দেশের উত্তরবঙ্গ, রাজধানী ঢাকাসহ প্রায় সবখানেই শৈতপ্রবাহ চলছে এর মাঝে বঞ্চিত অসহায় মানুষের পাশে সকলকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।’

বুলবুল বলেন, ‘জামায়াত একটি আদর্শবাদী, গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও গণমুখী রাজনৈতিক দল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জামায়াতে ইসলামী দেশ ও জাতির যেকোনো ক্রান্তিকালে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। আগামী দিনেও আমাদের এই কল্যাণমুখী তৎপরতা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।’

এদিকে রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গিরচর পূর্ব থানা জামায়াতের উদ্যোগে শীতবস্ত্র উপহার দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও কামরাঙ্গিরচর পূর্ব থানা আমির বাকী বিল্লাহ হাবিবের সভাপতিত্বে উপহার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল। বিশেষ অতিথি মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও অত্র জোন পরিচালক আব্দুর রহমান। এছাড়া কামরাঙ্গিরচর পশ্চিম থানা আমির মুজিবুর রহমান খানসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি