খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর’ প্রতিবেদন
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:২৩
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা ইস্যুতে চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তারের বরাত দিয়ে কলকাতা ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল ‘দ্য ওয়াল’ বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আব্দুস সাত্তার জানান, দ্য ওয়ালে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সে বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
কলকাতাভিত্তিক দ্য ওয়ালের সংবাদে বলা হয়, ‘বিএনপি নেত্রী তথা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে চায় তার দল বিএনপি। বাংলাদেশের ভিভিআইপি রাজনীতিকদের মধ্যে এখন তালিকার এক নম্বরে আছেন বিএনপি নেত্রী। তার জন্য সর্বক্ষণ সরকারি নিরাপত্তা বরাদ্দ। তারপরও তার দল বিএনপি দলের তরফ থাকে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে চায়। দলের হয়ে যারা নেত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন তাদের জন্য ওয়ারলেস সেট কেনা এবং সেগুলো ব্যবহারের জন্য পৃথক বেতার তরঙ্গ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছে বর্তমানে দেশের অন্যতম দলটি।’
‘খালেজা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবিএম আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, তারা প্রথমে বাংলাদেশ টেলি নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন বিএনপির নামে পৃথক বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ করতে। যাতে প্রশাসনের পাশাপাশি দলও নেত্রীর নিরাপত্তার দিকে নজরদারি চালাতে পারে। বাড়তি নিরাপত্তা বরাদ্দ করাও দলের উদ্দেশ্য।’
টেলি নিয়ন্ত্রণ কমিশন অবশ্য আর্জি খারিজ করে দিয়ে বলেছে, ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে এই ধরনের অনুমতি দেয়ার সুযোগ বর্তমান আইনে নেই। বিএনপি যদি কোনো বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সিকে নিয়োগ করে সরকার তাদের জন্য পৃথক বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ করতে পারে। টেলিকমিশন আর্জি খারিজ করায় বিএনপি সরকারের টেলি কমিউনিকেশন মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানিয়েছে। যদিও বিএনপির আর্জি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল মনে করছে, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিএনপি আসলে সরকারকে বার্তা দিতে চেয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় তারা সন্তুষ্ট নয়।’
‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার কথা। চিকিৎসার জন্য তিনি সিঙ্গাপুর অথবা থাইল্যান্ডে যেতে পারেন। আর আগে লন্ডনে যাবেন তার পুত্র তারেক জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে। তারেক এখনও দেশে ফেরার অনুমতি পাননি। লন্ডন থেকে খালেদা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও যেতে পারেন। দেশে ফিরে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হবেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হতেও বাধা নেই।’
এতে আরো বলা হয়, ‘বিএনপি মনে করছে, ফের জনতার কাছে যাওয়ার আগে তার নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার। তাৎপর্যপূর্ণ হল, নিরাপত্তা বাড়াতে সরকারের দ্বারস্থ না হয়ে বিএনপি নিজেই সে দায়িত্ব নিতে চাইছে। মনে করা হচ্ছে দল কোনো বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সির হাতে খালেদার নিরাপত্তার ভার তুলে দিতে চাইছে যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দলের সিদ্ধান্তে স্পষ্ট তারা সরকারি নিরাপত্তার উপর পুরোপুরি ভরসা করতে পারছেন না।’
দ্য ওয়ালের প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, বেগম খালেদা জিয়ার জন্য পৃথক বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ চাওয়া বিষয়ে আমার জানা নাই। গণমাধ্যমে যা লেখা হয়েছে সে কমেন্টস আমি দেইনি।
বিষয়টি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা (সিএসএফ) প্রধান কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ইসহাক মিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন আব্দুস সাত্তার।
সিএসএফ প্রধান মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য আমরা আগেও ওয়ারলেস, ওয়াকিটকি ব্যবহার করেছি। ২০১৮ সালে ম্যাডাম জেলে যাওয়ার পর আর ব্যবহার হয়নি। ব্যবহার না হওয়ায় ওয়াকিটকি নষ্ট হয়ে যায়। এখন আমরা ক্রয় করতে গেছি তখন তারা (আমদানি ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান) বলেছে নতুন করে অনুমোদন আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরল মনে আবেদন করলাম। প্রথমে বিএনপির অফিস থেকে বিএনপির প্যাডে আবেদন করা হয়। তখন বিটিআরসি বললো, ‘বিএনপি প্যাডে লিখলে হবে না। আমরা কোনো দলকে অনুমোদন দেই না। আপনারা যখন তার (খালেদা জিয়া) নিরাপত্তা দেখা-শোনা করেন, আপনারা চিঠি লেখেন। তাহলে আমরা অনুমোদন দেবো।’