০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১, ৪ রজব ১৪৪৬
`

২৭ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ খাতে বিপদ হতে পারে, আশঙ্কা বিএনপির

- ছবি - ইন্টারনেট

আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ খাতে বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন সাসটেইনেবল (টেকসই) নয়, যেকোনো সময় মুখ থুবড়ে পড়বে।

আজ বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎখাতের পরিস্থিতি নিয়ে মূল্যায়ন তুলে ধরা হয় এই সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্যুৎ তো দেখা যায় না। বিদ্যুৎ তো হাওয়া। আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ খাতকে ব্যবসার খাত এবং লুটপাট করার মেশিন বানিয়েছিল বলে জানান টুকু।

তিনি দাবি করেন, আওয়ামী সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ খাত থেকে পাঁচ শ’ মিলিয়ন ডলার আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এক লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট করে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠরা। যার পেছনে সামিটসহ পাঁচটি কোম্পানি জড়িত বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। সরকারকে দ্রুত এসব চুক্তি প্রকাশ করতে হবে বলেও দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে বিগত সরকার। ডিস্ট্রিবিউশন নামে নিজেরদের নামে কোম্পানি বানিয়ে লুট করেছে।’

টুকু বলেন, বিএনপি সরকার থাকতে ৬০ শতাংশ যেত সরকারি খাতে আর ৪০ শতাংশ যেত বেসরকারি খাতে। সরকারি মালিকানার পাওয়ার প্লান্টগুলো কিছু করা হয়নি। তারা ৮০ শতাংশ বেসরকারি মালিকানা দিয়ে টাকা কামাই করেছে।

‘বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রথম কাজ হলো বিদ্যুৎ খাতকে টেন্ডার করে দেয়া। টেন্ডার হলে আমরা জানতে পারি। ক্যাপাসিটি চার্জ কত এটা নির্ধারণ করতে পারি,’ জানান তিনি।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিগত সরকারের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনিয়ম এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ দুর্নীতির চিত্র ভেসে উঠেছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম নির্ধারণ এবং ঘুষের মাধ্যমে টেন্ডার দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন সাবেক এই বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।

গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে টেন্ডারের বাইরে যে চুক্তিগুলো হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করা জনগণের দাবি বলে জানান তিনি।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতি করতে আওয়ামী লীগ ‘ম্যাজিক পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে জনগণের চোখে ভেলকির মাধ্যমে পরিচালনা করে অর্থ লুটপাট এবং পাচারকে অন্যতম অগ্রাধিকার দেয়। শুরু থেকেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ধ্বংসের লক্ষ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে অবাস্তব ম্যাজিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার নীলনকশা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে চরম অনিয়ম ও দুর্নীর্তির মাধ্যমে অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ।

এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের সব চুক্তি রিভিউ করবে বিএনপি।


আরো সংবাদ



premium cement