গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে শেখ মুজিব আর কবর দিয়েছে শেখ হাসিনা : মুজিবুর রহমান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৯
শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করছে, তার কন্যা হাসিনা গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অন্যায়, জুলুম, শোষন থেকে মুক্তির জন্য ছাত্র-জনতা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ছাত্ররা চেয়েছে অধিকার, তাদেরকে স্বৈরাচার হাসিনা বানিয়েছে রাজাকার।’
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রমনা থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের চাওয়া-পাওয়া, মানুষের অধিকার গত ৫৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। যাকে বলা হয়েছে স্বাধীনতার নায়ক, সেই শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে এদেশে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছে। নিজ দলীয় তিনটি গণমাধ্যম ব্যতিত সকল গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। যেই ব্যক্তি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে, গলমাধ্যম বন্ধ করে, গণতন্ত্র হত্যা করে সেই ব্যক্তি কখনো স্বাধীনতার নায়ক হতে পারে না। শেখ মুজিব ভূয়া নায়ক।’
আওয়ামী লীগ এদেশে যত আগুন দিবে, ততই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে নিঃশেষ হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘জীবন দিবো, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দখল করতে দেয়া হবে না। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে তার কার্যালয়ে গিয়ে সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাতীয় স্বার্থে আমরা এক ও অভিন্ন থাকবো।’
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, সংসদে কুরআনের আলো জালাতে পারলেই, ঘরে-ঘরে কুরআনের আলো জলবে। নয়তো শেখ হাসিনার মতই ইসলাম বিদ্বেষীরা মানুষের ঘর থেকে কুরআন হাদিস জব্দ করে, জিহাদী বই উদ্ধার করা হয়েছে বলে মানুষকে হামলা-মামলা দিয়ে জুলুম নির্যাতন চালাবে। শান্তি ও বৈষম্যমুক্ত ইসলামী সমাজ গড়তে তিনি দেশবাসীকে ইসলামের পক্ষে ভোট দিতে আহ্বান জানান।
রমনা থানা আমির মো: আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমিরর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ও পল্টন থানা আমির মো: শাহিন আহমেদ খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমির মাওলানা শরিফুল ইসলাম, রমনা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী অফিস সম্পাদক ও রমনা থানার সাবেক আমির আবদুস সাত্তার সুমন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা ভারতীয় বিজেপি সরকারকে দিয়ে সেদেশের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশের বিজয় দিবস কে ভারতের বিজয় দিবস বলে মোদী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত করেছে। আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করায় মোদীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার এখনো ঘুমিয়ে আছে। যার ফলে ফ্যাসিবাদের দোসররা সচিবালয়ে আগুন দিয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের প্রতি কোনো দয়া প্রদর্শন না করে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করতে তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
সম্মেলনের অন্যতম বিশেষ অতিথি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে ৪ দফা কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে। মানুষের তৈরি মতবাদে যতই সংস্কার করা হোক না কেন সমাজে স্থায়ী শান্তি আসবে না। জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর বিধানে সমাজ সংস্কার ও সমাজ গঠনে কাজ করছে। আল্লাহর বিধান কায়েমের মাধ্যমে বাংলাদেশে চিরস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ড. মাসুদ।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার মাধ্যমে আমাদেরকে বাঘের পিঠ থেকে মুক্ত করে সিংহের মুখে আবদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে আমাদের স্লোগান ছিল, ‘দিল্লি না ঢাকা...ঢাকা ঢাকা’- ২০২৪ সালের আগস্টে এদেশের ছাত্র-জনতা সিংহের মুখ থেকে মুক্ত হয়ে সত্যিকার অর্থের স্বাধীনতা লাভ করেছে। এই স্বাধীনতা ভোগ করতে আগামী নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে ভোট দিতে হবে। ইসলাম ব্যতিত কোথাও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহন করা যায় না।
ড. মাসুদ বলেন, আওয়ামী লীগ আগুন সন্ত্রাসের মূল হোতা। তারা গত ১৫ বছর এদেশে বাসে-ট্রেনে, মানুষের ঘরবাড়িতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী দলের দায় চাপিয়ে দিতো। কিন্তু আজও পর্যন্ত এদেশের কেউ প্রমাণ করতে পারেনি জামায়াত-শিবির আগুন সন্ত্রাস করে। সচিবালয়ে আগুন লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের অপকর্মের তথ্য পুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও এদেশের ১৮ কোটি মানুষ সাক্ষী আছে। তাদের সাক্ষীতে আওয়ামী লীগের বিচার হবেই, হবে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন জুলাই বিপ্লবে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের পিতা শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন রমনা থানা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট সুলতান উদ্দিন, রমনা থানা শিবির সভাপতি নেয়ামত হোসেন, ইসলামী ছাত্র শিবিরের কলেজ জোনের সভাপতি শোয়াইব, রমনা থানা কর্মপরিষদের সদস্য আবু মুসা, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ও অধ্যক্ষ মো: একরাম উল্লাহ, মগবাজার ওয়ার্ড সভাপতি আহমদ আলী সরকার, সিদ্ধেশ্বরী ওয়ার্ড সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, কাকরাইল ওয়ার্ড সভাপতি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, মালিবাগ পশ্চিম ওয়ার্ড সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোবাশ্বের হোসেন প্রমুখ।
বিজ্ঞপ্তি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা