ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান
- সরকার মাজহারুল মান্নান, রংপুর ব্যুরো
- ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:৫৭, আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:১৪
ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী এবং জামায়াত এদেশের একমাত্র দেশপ্রেমিক শক্তি। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে ভারতের কাছে ইজারা দিয়েছিল এবং মইন ইউর সাথে ক্ষমতার জন্য ষড়যন্ত্র করে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদস্যদের।’
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রংপুরের পাগলাপীরে এক পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এর আগে উত্তরবঙ্গ সফর উপলক্ষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন জামায়াতের আমির। পথে রংপুরের পাগলাপীরে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মঈন ইউ আহমেদের সাথে ষড়যন্ত্র করে, পেছনের দরজা দিয়ে কানাকানি করে, ভোটের ইঞ্জিনিয়ারিং করে মেকানিজম করে ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি তারা যখন ক্ষমতায় আসে তার দু’মাস পূরণ হয়নি। পরের মাসেই আমরা লক্ষ্য করলাম, বিডিআর সদর দফতর পিলখানায় তারা ৫৭ জন সেনা অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যা করল। হত্যা করে লাশ ড্রেনে ভাসিয়ে দিয়েছে। সাথে সাথে পিলখানার চারদিকে রাতের বেলা কারেন্ট বন্ধ করে দিয়ে খুনিদেরকে পালানোর ব্যবস্থা করে দিল। বিডিআরের লোকজনকে দফায় দফায় অ্যারেস্ট করেছে। সাড়ে ১৬ হাজার বিডিআর জওয়ানকে জেলে নিয়ে গেছে। সকলের চাকরি নষ্ট করে দিয়েছে। জেলের ভেতর সাড়ে ৩০০ অধিক অফিসার ও সৈনিক মারা গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার জন্য। আর জীবন গেল বিডিআরের। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের দল। একটি বাহিনীকে শেষ করে দিয়েছে তারা। সেনাবাহিনীর কোমর ভেঙে দিল। এরপর জামায়াতে ইসলামের গায়ে হাত দিল।’
এদেশের পরীক্ষিত দু’টি দেশপ্রেমিক শক্তি আছে, একটা সেনাবাহিনী আর একটা হলো জামায়াতে ইসলামী। আগেই সেনাবাহিনীর ক্ষতি করেছে। জামায়াতকে তছনছ করে দিতে পারলে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। তারা জমিদার হয়ে ওঠবে। আর দেশের মানুষকে তারা ভাড়াটিয়া বানাবে। এভাবেই ষড়যন্ত্র করেছিল তারা। কিন্তু মালিক তো বাড়ি ছেড়ে পালায় না। ভাড়া দিতে না পেরে ভাড়াটিয়া পালায়। এখন কে পালিয়েছে, ভাড়াটিয়ারা পালিয়ে গেছে? বলে মন্তব্য করেন তিনি।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশকে ভারতের কাছে ইজারা দিয়ে রেখেছিল। আমরা এদেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান চারটি ধর্মের মানুষ পাশাপাশি বসবাস করি। হিংসা-বিদ্বেষ নেই বললেই চলে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই দৃষ্টান্ত পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আমরা শিখেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিপক্ষে নয়, ধর্মের ভিত্তিতে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু হিসেবে এদেশের মানুষকে আখ্যায়িত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যাদেরকে তারা সংখ্যালঘু বলে যাদের জন্য মায়া কান্না করে তারাই তাদের জায়গা জমি অন্যায়ভাবে সব দখল করে রেখেছিল। তাদের সম্পদের উপর হাত দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের ইজ্জতের উপরেও হাত দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই সময়ে আওয়ামী লীগ মায়া কান্না করে এবং দোষ চাপায় এদেশের দেশপ্রেমিক মানুষ বিশেষ করে যারা নিষ্ঠাবান মুসলমান তাদের ওপরে।’
ডা. শফিক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে তছনছ করেছে। দেশপ্রেমিক ইসলামী শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরকে খুন করেছে। শত শত নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। আলেমকে খুন করেছে। পায়ে ডান্ডাবাড়ি হাতে হাত কড়া পরিয়ে এক জেল থেকে আরেক জেলে আলেম ওলামাদেরকে ট্রান্সফর করেছে। এভাবে দেশপ্রেমিক মানুষ এবং মুসলমানদের উপর তাণ্ডব চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। হাজার হাজার মানুষ খুন করেছে। হাজার হাজার যুবককে খুন করেছে। হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলিকে খেয়ে হজম করে ফেলেছে। দেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে। আর পালানোর সময় খাল-বিল, নদী-নালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছে।’
জামায়াত আমির অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদেরকে হত্যা করেছে, সঠিক বিচারের মাধ্যমে এটি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্ত করা হবে, ইনশাআল্লাহ। '
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে তিন কোটি টাকার জন্য নজিরবিহীনভাবে নিপীড়ন করা হয়েছে। এখন ২৬ লাখ কোটি টাকা লুটপাটের জন্য শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে বেকার যুবকদের হাতে কাজ দেয়া হবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে বাংলাদেশে। ন্যায়বিচার এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে গাইবান্ধায় জনসভা এবং দুপুরে মিঠাপুকুরে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা