২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো ২ বছর সময় দিতে হবে : ভিপি নুর

আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ভিপি নুরুল হক নুর - ছবি : নয়া দিগন্ত

অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো দু’বছর সময় দিতে হবে মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘দেশের সংস্কারের ক্ষেত্রে এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। হাসিনার পতন না হলে তো আরো চার বছর থাকতো, তাই এই সরকারকে দু’বছর সময় দিলে তো ক্ষতি নেই। কোনো কোনো উপদেষ্টা ব্যর্থ হলে তাদের সমালোচনা করতে হবে, দরকার হলে তাদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করতে হবে কিন্তু দেশের সংস্কারের কাজ ও গণহত্যার বিচার, এই সরকারকেই করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু পুলিশের সংস্কার নয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিচারবিভাগ, নির্বাচন কমিশন, সশস্ত্রবাহিনীসহ সব ক্ষেত্রে সংস্কার লাগবে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সকল সেক্টরে তাদের দোসরদের বসিয়েছে।’

রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে ডাকসু হামলার সাথে জড়িতদের বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী সাদ্দাম সঞ্জীতের নেতৃত্বে হামলা হয়েছিল। সেদিন ঢাবির প্রক্টরকে কল দিয়েও আমরা সহযোগিতা পায়নি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের হামলাগুলোর পেছনে ঢাবির প্রক্টর গোলাম রব্বানী ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করত। ঢাবির ওই প্রক্টর শিক্ষক নামের কলঙ্ক, একজন বিকৃত মনের মানুষ। ছাত্রলীগের সকল অপকর্মের দায় এই গোলাম রাব্বানী ও সাবেক ভিসি আখতারুজ্জামানকে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমে শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করে। সেখানে পড়াশোনা করে কেউ কেউ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বিসিএস ক্যাডার হয়। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবারে এতো খারাপ, খাবার খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও খাবারের ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খাঁন বলেন, ‘শুধুমাত্র ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এদেশীয় রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) এজেন্ট কুখ্যাত মাফিয়া সাদ্দাম ও সনজিতের নেতৃত্বে ডাকসুতে নারকীয় হামলা করে জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বিচারহীনতার পাঁচ বছর। আজো আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেসময় পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলো, কোনো হামলা হয়নি, হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ওই সময় শিক্ষক নামের কলঙ্ক প্রক্টর গোলাম রাব্বানীকে কল দিলে, তিনি বলেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে কেন এসেছি? তাকে বারবার কল দিলেও তিনি আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। এতে সাবেক ভিসি আক্তারুজ্জামানেরও ইন্ধন ছিল। এসব শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করতে হবে, যারা হামলা করেছে, এদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। অবৈধভাবে যারা ডাকসুতে বিজয়ী হয়, তাদের ডাকসু পদ বাতিল করতে হবে এবং ডাকসু নির্বাচনের তদন্ত হতে হবে। যে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের হত্যা, নির্যাতন করেছে, এদের নাম মুছে ফেলতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে অনেক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, ছাত্রলীগের ক্যাডার প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে চাকরি করে। এদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি সানাউল্লাহ, সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম।

আলোচনা সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতির শিক্ষক রাশাদ ফরিদী। এছাড়াও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ডাকসু হামলায় আহত ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা আবু হানিফ, মাহফুজুর রহমান খান, মনজুর মোর্শেদ মামুন, বরিউল হাসান প্রমুখ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement