২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক

উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ - সংগৃহীত

বেসামরিক বিমান পর্যটন ও ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিষদের এক বিশেষ সভায় এই শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।

বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা হাসান সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহিত হয়।

সভায় রিজওয়ানা হাসান জানান, আগামীকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের কবরের পাশে হাসান আরিফকে দাফন করা হবে।

সভার শুরুতে উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টাগণ হাসান আরিফের স্মৃতি চারণ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ ছোট ছোট অনেক কথাই মনে পড়ছে, তিনি সবসময় আমাকে মনে করিয়ে দিতেন- আমরা কিন্তু সমবয়সী। শিশুর মতো সরল ব্যবহার ছিল তার। যতরকম সমস্যা দেখা দিয়েছে, যেখানে কোনো কোন্দল দেখেছেন, তিনি হাজির হয়েছেন তার সমাধানে। এ এক অপূর্ব লোক, আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন।’

অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘হাসান আরিফ ছিলেন একজন বিরল ব্যক্তিত্ব এবং সদা হাস্যময়।’

অতীতের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে পাট বস্ত্র ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে হাসান আরিফের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।’

সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘এখানে কাজ করতে এসে উনার সাথে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। উনি আমাদের জন্য ছিলেন এক ইতিবাচক প্রেরণা।’

মৎস্য ও পশু সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘আজকে আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আমরা হাসান আরিফকে মিস করছি। উনাকে ছাড়া আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আইনজীবী হিসেবে হাসান আরিফের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘উনি ছিলেন মানবাধিকার রক্ষায় সবসময় সোচ্চার।’

সভায় আদিলুর রহমান জানান, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি হিসেবেও কাজ করেছেন হাসান আরিফ।

আইন ও বিচার এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, হাসান আরিফ ছিলেন একজন কর্মনিষ্ঠ ও পরিশ্রমী মানুষ। সবগুলো নথি তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘হাসান আরিফ কখনো কোনো কাজকে কম গুরুত্বের সাথে নিতেন না।’

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘হাসান আরিফ ছিলেন অমায়িক এক মানুষ, যেকোনো সমস্যা উনার সাথে আলোচনা করে সমাধান করা যেত।’

জ্বালানি ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমাদের সমাজে বিভেদ অনেক বেশি। এই বিভেদ জোড়া লাগানোর মানুষ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। সর্ব মহলে উনার গ্রহণযোগ্যতা ছিল।’

১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সময় হাসান আরিফের ভূমিকা স্মরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘উনি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের নিয়ে অনেক ভাবতেন। তার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হলো পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের।’

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদে এসে হাসান আরিফকে চিনেছি, উনাকে সব সময় শিক্ষকের মতো পাশে পেয়েছি।’

তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘উনার সাথে কাজ করতে গিয়ে একবারও আমাদের বয়সের পার্থক্য বুঝতে পারিনি। তিনি সবার সাথে আন্তরিকভাবে মিশতেন।’

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিকভাবে কাজ করতে দেখেছি উনাকে। এবারো উনি অত্যান্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছেন।’

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, বেসামরিক বিমান সচিব নাসরীন জাহান, ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল