২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সম্প্রীতি রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : আমিরে জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য সাধারণ দেশ; ফুলের বাগান। মাঝে মাঝে কিছু হুতুম পেঁচা আমাদের ফুলের বাগানে ঢুকে সবকিছু এলোমেলো করে দেয়ার অপচেষ্টা করে। এরা কোনো ধর্মের নয় বরং অপশক্তি। তাই এদের সম্পর্কে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় রাজধানীর মিরপুর সেনপাড়া খ্রিস্টান চার্চে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াত আয়োজিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মিরপুর ব্যাপটিস্ট চার্চের জ্যেষ্ঠ পালক-রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, মিরপুর ব্যাপটিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক বাবুল কুমার সাহা, মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পালক রেভারেন্ড প্রিন্স কিরণ বাইন, সহ-সম্পাদক মনোজ বাড়ৈ, কোষাধ্যক্ষ অসিত মিত্র, ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মহিলা কমিটির সভানেত্রী প্রভাতি ফলিয়া, সম্পাদক অনিমা বাড়ৈ। মতবিনিময় সভায় জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন, শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, আব্দুল মতিন খান ও মাওলানা আতিক হাসান রায়হান প্রমুখ।

বক্তব্য রাখেন চার্চের সহ-কোষাধ্যক্ষ ডেভিড হালদার, টমাস সিংহ, ঢাকা এবিসিএস জন সরকার চার্চের সহ পালক, পরিচালক জেমস প্রদীপ বিশ্বাস, সমীর বাড়ৈ, ডেভিড বিশ্বাস, দিলীপ সিং, আদরী বাড়ৈ সুশ্রী অধিকারী ও সুতপ সিংহ তমা জুয়েল বালা জয় প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আদি পিতা হযরত আদম আ: এবং আদি মাতা হযরত হাওয়া আ:। ইসলামে সব নবী-রাসূলকে যথাযথভাবে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এটা আমাদের ঈমান বা বিশ্বাসের অংশ। তারা সকলেই আল্লাহর প্রফেট, মেসেঞ্জার। তারা আল্লাহর বিধানের বার্তা বাহক হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরীত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে হযরত ইসা আ: ই ব্যতিক্রম। তিনি দুনিয়াতে দ্বিতীয়বার প্রেরীত হয়ে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবেন। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করি না। জামায়াত ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মত, পথ নির্বিশেষে সকলকে নিয়েই দেশকে কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জামায়াতের এই সংগ্রামে খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ সকল ধর্মের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছোট একটি রাষ্ট্র। এদেশে ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। দেশে নানা ধর্ম ও গোত্রের মানুষের বসবাস হলেও মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান প্রধানতম ধর্ম। সকলের সাথে মিলেমিশে চলা আমাদের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত বা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নই বরং আমরা সকলেই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। জামায়াতের লোকেরা চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি, লুটপাটসহ কোনো ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত নন। তারপরও আমরা মানুষ। আমাদের কোনো মানবীয় ভুল ধরিয়ে দিলে আমরা তা সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই হীনমন্য নই। আমরা দেশের সকল নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সব সময়ই আপসহীন। তিনি একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকল শ্রেণির মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।’

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘সৃষ্টি এক; স্রষ্টাও এক ও অদ্বিতীয়। আকাশ থেকে বৃষ্টি হলে সকল ধর্ম ও শ্রেণির মানুষ সমাজভাবে উপকৃত হোন। আবার কোনো বিপর্যয় হলেও সকলকেই তা ভোগ করতে হয়। ধর্মীয় সংখ্যালঘু আখ্যা দিয়ে শ্রেণি বিশেষ মানুষের ওপর জুলুম করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী এ ধরনের সংকীর্ণতার সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে। মূলত, দুই শ্রেণির মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বেশি। একটি হলো সবচেয়ে উচ্চ শ্রেণি। এরা কলমের খোঁচায় মানুষের অধিকার কেড়ে নেন। আর অপর শ্রেণি হচ্ছে বস্তি। এদের হাতেই মাদক ও অস্ত্র তুলে দিয়ে দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হয়। তাই এদের সম্পর্কে আমাদের শূণ্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। তিনি গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।’-বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement