সাবেক এমপি আনারের দেহাংশের সাথে মিলেছে মেয়ের ডিএনএ, দাবি ভারতীয় সিআইডির
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৫, আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪০
বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার পর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উদ্ধার করা মাংস ও হাড়ের সাথে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনের ডিএনএ মিলেছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে চলতি বছরের শুরুর দিকে নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। পরে ওই ভবনের সিসি ফুটেজ যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজনের সাথে সেখানকার একটি ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন আনার। কিছুক্ষণ পরে ফ্ল্যাট থেকে কয়েকজনকে ট্যুরিস্ট ব্যাগ হাতে বের হতে দেখা যায়। দেয়ালে ও মেঝেতে মেলে রক্তের দাগ। তদন্তকারীদের ধারণা, আনারুলকে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে সংলগ্ন খালে ফেলা হয়। পরে কলকাতা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সঞ্জীবা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রায় চার কেজি মাংস উদ্ধার করে।
ঘাতকরা সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্লাটে এমপি আনারের লাশ টুকরো টুকরো টয়লেটে ফ্ল্যাশ করেন। এছাড়া শরীরের হাড় কলকাতার ভাঙ্গরের বাগজোলা খালের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয় তারা।
কলকাতা পুলিশ বলেছে, ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা দেয়ার জন্য আনারের স্ত্রী ইয়াসমিন ফেরদৌস ও ভাই এনামুল হককে ডাকলেও কেবল তার মেয়েই কলকাতায় গিয়েছিলেন।
ভারতের সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে দু’টি নমুনাই পাঠানো হয়েছিল। সেই দু’টির ডিএনএ মিলে গেছে।
জানা গেছে, নভেম্বরের শেষ দিকে ডরিন কলকাতায় এসেছিলেন। তখন তার ডিএনএর নমুনা নেয়া হয়। তারপর দুটি নমুনাই যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির সিনিয়র এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডিএনএ রিপোর্ট নিশ্চিত করেছে যে একটি খাল এবং ফ্ল্যাটের পাশ থেকে উদ্ধার করা মাংস এবং হাড়গুলো বাংলাদেশের সাবেক এমপির।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে পশ্চিমবঙ্গে যান ঝিনাইদহের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সাথে দেখা করতে যান। পরদিন ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনার। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলে জানান তিনি। বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।
চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় আনার তার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য সতর্ক করেছিলেন।
১৭ মে আনারের পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে জানান, তার (আনার) সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিন ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে এমপি আনারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সূত্র : দ্য ওয়াল