‘জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের ওপর টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে আ’লীগ’
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:২৭
জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের ওপর আওয়ামী লীগ টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের কোনো কোনো নেতা অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের রক্তের সাথে বেইমানি করে কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সাথে আপস করতেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় ভৈরব প্যালেস পার্টি সেন্টারে জুলাই বিপ্লব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আবু হানিফ বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগও তাদের খোলস পাল্টে সেই সুযোগ নিচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ৬২৬ জনকে আশ্রয় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের পরের অবস্থান সম্পর্কে সেনাপ্রধান কোন বক্তব্য দেননি, আমরা ৬২৬ জনের তালিকা জানতে চাই এবং তারা কে কোথায় আছেন সেটাও জানতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে, এ সরকারকে জনগণ বসিয়েছে, তাই সরকারকে জনগণের পার্লস বুঝতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম বক্তব্য আসছে, এমনকি প্রধান উপদেষ্টার সবশেষ বক্তব্যেও নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়ে সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল আজকের ছাত্র অধিকার পরিষদ। বাংলাদেশে বিরোধী মতের ওপর যখন দমনপীড়ন চলছিল তখনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। এমনকি বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়েও সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। রাজনীতিতে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।’
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য বলেন, ‘এ জুলাই বিপ্লবে গণঅধিকার পরিষদ ও অঙ্গ সংগঠনের ১২ জন শহীদ হয়েছেন, কমপক্ষে এক হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। আমাদের দলের প্রধান নুরুল হক নুর জেল খেটেছেন। আমাকে র্যাব রাতে অন্ধকারে তুলে নিয়েছিল, দু’দিন গুম ছিলাম, জেল খেটেছি, কোনো কিছু পাওয়ার আশায় জেল খাটিনি, দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখজনক জুলাই বিপ্লবে একসাথে যারা লড়াই করেছেন তাদের ভেতর বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। এ বাংলাদেশে কোনো গণহত্যাকারীদের স্থান হবে না। জুলাই বিপ্লবের পরে আমরা দেখছি, দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট করে হত্যা চালাচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সেই বিষয়ে সরকারকে আরো সক্রিয় হতে হবে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের শিগগিরই আটক করতে হবে। কিন্তু সরকার দৃশ্যত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে না পারলে তার উচিত দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া। আওয়ামী লীগ জুলাই গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে, আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ তাদের রাজনীতি করতে দিবেন না।’
কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্র জনতার নেতৃত্বে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখন তরুণদের নেতৃত্ব দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে তরুণদের বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন।’
আলোচনা সভায় ছাত্রনেতা বিন ইয়ামিন সরকার জুনায়েদের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুল ইসলাম, ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল সাবেক সদস্য সচিব ভৈরব উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ, মোমেন উদ্দিন জনি আহ্বায়ক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ, সৈয়দ আলীউজ্জাম মহসিন সাবেক আহ্বায়ক কটিয়াদি উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ, ভৈরব উপজেলার গণঅধিকার পরিষদের নেতা শামসুল হক মামুন, ভৈরব উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা আবির, আমজাদ, ইমরান প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি