১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
১২ দলীয় জোটের প্রতিবাদ সমাবেশ

বাংলাদেশ ১৭ বছর ভারতকে শুধু দিয়েই গেছে : ডা. জাহিদ

১২ দলীয় জোটের প্রতিবাদ সমাবেশ - নয়া দিগন্ত

পতিত আওয়ামী স্বৈরচারের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘ভারতের বিষয়ে দেশপ্রেমিক সব মানুষের বক্তব্য একই। ষড়যন্ত্র অনেক আগেই শুরু হয়েছে। তবে কারো শেষ রক্ষা হয়নি।’

তিনি বলেছেন, ‘গত ১৭ বছরে ভারতকে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই গেছে। বলা হয়েছে বাংলাদেশ দিয়ে ভারত ট্রানজিট নিলে বাংলাদেশ নাকি সিঙ্গাপুর হবে? তাহলে আখাউড়া দিয়ে ভারতের এত ট্রাক গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি শুধু কমছেই! বিগত বছরগুলোতে আমাদেরকে শুধু ভুল বোঝানো হয়েছে।’

বুধবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১২ দলীয় জোটের এক প্রতিবাদ সমাবেশ তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে ভারত সরকার এ মিডিয়ার অপপ্রচার এবং ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।

১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) ফিরোজ মো: লিটন।

সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটু।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার টুইটের যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন সেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যে ষড়যন্ত্র রেসকোর্সে হয়েছিল সেটিই। গত ১৭ বছরে ভারতকে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল সে জন্য কৃতজ্ঞ। তবে বিগত বহু বছর তারা কড়ায়গণ্ডায় প্রতিদান আদায় করেছে। আজও ফারাক্কার পানির সমস্যা নিরসন হয়নি। সীমান্তে মানুষ মারা হচ্ছে। ভারতের বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার সৃষ্টি করা হয়। তারা পেয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়।’

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার বহু বছর পর হয়েছে। সুতরাং আগামীতেও সেরকম হবে না সেটি ভাবার কিছু নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) বাড়ি-ঘর দখল ও গায়েবি মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে। আল্লাহ তার বান্দাকে অবকাশ দেন যদি কেউ তা বুঝতে পারে। কিন্তু তা না হলে কী পরিণতি হয় সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এত পরিমাণ গুম-খুন ও লুট করেও রক্ষা হয়নি। নিজেকে বাঁচার ভয়ে আপনি (সালমান এফ রহমান) নিজের দাঁড়ি কামিয়েছেন। অতএব অহংকার পতনের মূল।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রত্যেকটা কাজের হিসাব কিন্তু আগামী প্রজন্মের কাছে দিতে হবে। কেউ হয়তো নেদারল্যান্ড গেছেন। কলকাতা গেছেন। কেউ চট করে ঢুকার চেষ্টা করছেন। সৎ সাহস থাকলে ঢুকেন, বিচারের মুখোমুখি হোন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র মেরামত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এরশাদের পতনের সময় কত দিন পর নির্বাচন হয়েছিল সেটি সবারই মনে থাকার কথা। নির্বাচন করতে কত দিন লাগে সেটি দেশের মানুষ জানে। যেহেতু পতিত স্বৈরাচার সরকার সাড়ে ১৫ বছরে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। সে জন্যই সকল রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছেন। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।’

তিনি অন্তর্বতীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘সব সংস্কার তো আপনারা করতে পারবেন না। কখন নির্বাচন হবে সেটা স্পষ্ট করুন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন একরকম। আবার তার প্রেস সচিব বলেন আরেক রকম। আপনাদেরকে তো আমরাই সবাই মিলে সহযোগিতা করছি। আপনার কে কথা বলবেন দায়িত্ব নিয়ে বলুন। না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের দুর্বিষহ জীবন। এখান থেকে উত্তরণের জন্য জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রেত্মাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনুন। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। যারা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করতে চায় তাদেরকে দেশবাসী স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, ইনশাআল্লাহ।’

সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের স্বাধীনতার গৌরব ছিনতাই করতে চায়। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ যুদ্ধ করে অপরিসীম ত্যাগ শিকার করেছেন। আমরা নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যকে ঘৃণা করি, প্রত্যাখ্যান করি। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে সেটি কেউ বিনষ্ট করতে পারবেন না। আগামীতেও সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করবে, ইনশাআল্লাহ।’

সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল। রক্ত দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করলে আমরা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে পিছপা হবো না।’

বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘এই সরকারকে অবিলম্বে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। যদি কোনো উপদেষ্টা কিংস পার্টি গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার কল্পনা করেন সেটি হবে ভুল চিন্তা। কারণ আমরা লড়াই করতে জানি। রাজপথে এখনো আছি।’

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান বলেন, ‘ভারত তার দাদাগিরির কারণে প্রতিবেশী বন্ধু শূন্য হয়ে গেছে। আজকে বাংলাদেশে তাদের একমাত্র বন্ধু আওয়ামী লীগের পতনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আমাদের হাইকমিশনে হামলা করে পতাকা ছিঁড়েছে। এখন বিজয় দিবসকে অস্বীকার করছে। আমরা সাম্প্রদায়িক মোদির শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। তার বক্তব্যকে দেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছেন।’


আরো সংবাদ



premium cement
একীভূত হতে প্রাথমিক আলোচনায় হোন্ডা ও নিশান ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সিরীয়দের নেতৃত্বে’ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের রাশিয়ায় জেনারেল হত্যার ঘটনায় উজবেক নাগরিক আটক আসাদের পতনের পর দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে প্রথম বিমান উড়লো ক্যানসারের টিকা তৈরি করেছে রাশিয়া, হবে বিনামূল্যে বিতরণ সোনাগাজীতে বায়ু বিদ্যুতের যন্ত্রাংশ লুটের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগবান্ধব গন্তব্য : বাণিজ্য উপদেষ্টা ৩১ দফার মাধ্যমে সব অন্যায়ের জবাব দিতে চাই : তারেক রহমান সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করছে : আসিফ নজরুল তিন সংস্করণেই ক্যারিবীয়দের কোচ হচ্ছেন সামি ‘অন্য ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলি সেনারা গুরুত্বপূর্ণ এই অবস্থানে থাকবে’

সকল