সংস্কার বা পরিবর্তন সবকিছু শুরু হয়েছিল বিএনপির হাত ধরেই : মির্জা ফখরুল
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৪
এদেশের সংস্কার বা পরিবর্তন সবকিছু বিএনপির হাত ধরেই শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির ৩১ দফার পর আর কোনো সংস্কার থাকে না।
এ সময় অতিদ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংস্কারের পথ সুগম করার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে সংস্কারের কথা বলেন। প্রথম সংস্কার তো শুরু করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে এই সংস্কার শুরু করেছিলেন। প্রতিটি সেক্টরে তিনি সংস্কার করেছেন। এদেশের সংস্কার বা পরিবর্তন সবকিছু শুরু হয়েছিল বিএনপির হাত ধরেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এখন তারাই আমাদেরকে সংস্কারের কথা শোনান, যারা ‘পদগুনে বুদ্ধিমান, পতাকা বলে শক্তিমান’। আমাদের ৩১ দফার পর আর কোনো সংস্কার থাকে না।” অতিদ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংস্কারের পথ সুগম করার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ, সেই আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতার পর আমাদের স্বপ্ন গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় তরুণদেরকে হত্যা করেছে। এটা বারবার মনে করতে হবে।’
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ দেশের মানুষের একটাই প্রশ্ন- আমরা কেন আমাদের অধিকার আজকেও ফিরে পেলাম না? মানুষ প্রত্যাশা করেছিল, যে জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে, সে লক্ষ্যে সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাবে, কিন্তু সেটা তারা পায়নি। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তারা অনুতপ্ত না, বরং নানা ধরনের উস্কানি দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তবে দেশের মানুষ কখনোই নিশ্চুপ বসে থাকেনি। এর প্রতিকার করেছে। ভবিষ্যতেও করবে। সুযোগ পেলে তারা ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করে, সুযোগ না পেলে গণঅভ্যুত্থান ঘটায়। তাই সাবধান করে দিতে চাই- যারা বর্তমানে দেশ চালাচ্ছেন, তারা দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘বিজয়ের কথা বলতে পারতাম না যদি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা না করতেন।
‘যতদিন ভোটের অধিকার অর্জিত না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। রাজপথ ছেড়ে যাবো না,’ বলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছি, এত ভার কিভাবে বহন করব? এত প্রাণ দেয়া, স্বপ্ন দেখা- তার কি কোনো বাস্তবায়ন হয়েছে? আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা এবং বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়া হয়েছিল। ২৪ সালে এবার আকাঙ্ক্ষা আরো বেশি, জনগণের স্বপ্ন বেশি। এত হতাহত বাংলাদেশে কোনো সময় হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে চাই, ষড়যন্ত্র করে নয়- তাই বলেছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা অর্জনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাবে বিএনপি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নিয়ে কথা বলার আগে হিসাব-নিকাশ করে বলতে হবে। যা মন্তব্য করবেন বুঝেশুনে করবেন। জিয়াউর রহমান বলতেন মন্ত্রীর চেয়ে রাজনৈতিক নেতা বড়। পদগুলো হলো বুদ্ধিমান, পতাকাগুনে শক্তিমান। কিন্তু যখন পতাকা থাকে না তখন শক্তিও থাকে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘অরক্ষিত স্বাধীনতা পরাধীনতার চেয়েও ভয়ঙ্কর। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কারো করদ রাজ্যে হয়ে থাকার জন্য নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘এখন কঠিন সময় যাচ্ছে। দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রাজনীতি ছিল বা আছে বলেই ৪৭, ৫২, ৭১ , ৯০ ও ২৪ হয়েছে। বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না। জনগণের অধিকার জনগণকে ফিরে দিন। কোনোভাবেই জনগণের সাথে রাজনীতি করার চিন্তা করবেন না। নির্বাচন নিয়ে যত কালক্ষেপণ করবেন, ততই পতিত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। ইতিহাস ভুলে যাবেন না।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা