নববর্ষের প্রকাশনা ইসলামী শ্রমনীতির প্রচারে ভূমিকা রাখবে : শামসুল ইসলাম
- ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:১৮, আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৮
নববর্ষের প্রকাশনা ইসলামী শ্রমনীতির প্রচারে ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ফেডারেশনের উদ্যোগে ২০২৫ সালের নববর্ষের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রথম শ্রমিকদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতির সুফল তুলে ধরতে হবে। আশা করছি, ২০২৫ সালের নববর্ষের প্রকাশনা সামগ্রী ইসলামী শ্রমনীতির প্রচার-প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সহজ ভাষায় শ্রমিকদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতি তুলে ধরার প্রয়াস চালিয়ে আসছে। আমরা ইসলামী আদর্শ ধারণ করি। ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে আসছি। আমাদের আদর্শ কালজয়ী আদর্শ। আমাদের আদর্শ সকল জাতি গোষ্ঠীর জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। তবে আমাদের আদর্শ মেহনতি শ্রমজীবী মানুষদের বিশেষভাবে সম্মানিত করেছে। অন্য সকল আদর্শ যখন শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে তখন ইসলামী আদর্শ সমাজ রাষ্ট্রে শ্রমজীবীদের মর্যাদা উঁচু আসনে বসিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও প্রাপ্য মর্যাদা বুঝিয়ে দিতে মালিক-শাসকের প্রতি কঠোর নির্দেশ দিয়েছে। ইসলামী শ্রমনীতির সুফল ততক্ষণ পর্যন্ত পাওয়া যাবে না, যতক্ষণ না ইসলামী শ্রমনীতি রাষ্ট্রীয়ভাবে কায়েম হবে। শ্রমিকদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতির সুফল পৌঁছে দিতে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করতে হবে। আমাদের প্রথম কাজ শ্রমিকদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতির দাওয়াত উপস্থাপন করা। শ্রমিকদের কাছে কুরআনের ভাষায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে হবে। তাদেরকে উপলব্ধি করাতে হবে মানুষরচিত মতবাদ দিয়ে তাদের মুক্তি হবে না। বরং এসব মতবাদ যুগযুগ ধরে তাদের উপর জুলুম-শোষণ ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। পক্ষান্তরে আমাদের নবী সা: শ্রমিকদের কী পরিমাণ ভালোবাসতেন তা তুলে ধরতে হবে। আমাদের প্রিয় নবী সা: বলেছেন, শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বেই তার মজুরি পরিশোধ করতে। মালিক যা খাবে, যা পরিধান করবে একই খাবার ও পোশাক শ্রমিকদের দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর বিধানকে পাশ কাটিয়ে মানুষের মুক্তি অসম্ভব। মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ ইসলাম। আজকে দেশের নানা উন্নতি হলেও শ্রমজীবী মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসছে না। এর একমাত্র কারণ হলো দেশ আল্লাহর দেয়া জীবন-বিধান অনুসারে চলছে না। মানুষরচিত বিধান মানুষের জীবনে শান্তি আনয়নে ব্যর্থ হয়েছে। আজকে দেশের কোনো শ্রেণি পেশার মানুষের জীবনে শান্তি নেই। আল্লাহর দেয়া জীবন-বিধান অনুসরণ করার মাধ্যমে সমাজ রাষ্ট্রে শান্তি ফিরে আসবে। মানুষে মানুষে ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি হবে। সকল ধরনের জুলুম নির্যাতনের অবসান ঘটবে। আমরা চাই এমন একটি সমাজ যেখানে শ্রমিক মালিক ভেদাভেদ হবে না। বরং তারা পরস্পর কল্যাণকামী হবে। আমরা মালিক শ্রমিক মিলে একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠন করবো।’
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আজকের উদ্যোগ শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে হবে। শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আগামীর বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। যে দেশে শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা বলে কিছু থাকবে না। আন্দোলন করে দাবি আদায় করতে হবে না। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আমরা বিশ্বাস করি সেদিন আর বেশি দূরে নয়।’
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, লস্কর মো: তসলিম, কবির আহমাদ, মনসুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক ঐক্যের সভাপতি এ এম ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, জাতীয় গার্মেন্টসশ্রমিক জোটের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন সহিদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, মো: মহিব্বুল্লাহ, দফতর সম্পাদক নুরুল আমিন, প্রকাশনা সম্পাদক জামিল মাহমুদসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি