০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আ’লীগের চাঁদাবাজি-ঘুষের কারণে এডিপি’র ১৪-২৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি

আ’লীগের চাঁদাবাজি-ঘুষের কারণে এডিপি’র ১৪-২৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ ও স্ফীতি বাজেটের কারণে এডিপি এবং উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা ৬০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৪ থেকে ২৪ বিলিয়ন বা ১ লাখ ৬১ হাজার থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। এ সময় কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহৎ আকারের সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে গড়ে ৭০ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে এবং পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিলম্ব হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের সময় তহবিলের অপব্যবহার এবং পক্ষপাতদুষ্ট প্রকল্প পরিচালকদের নিয়োগ আরো বেশি সম্পদ সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। যার ফলে অবকাঠামো ও সামাজিক বিনিয়োগ থেকে সম্ভাব্য সুফল হ্রাস পেয়েছে। কর ফাঁকি, কর ছাড়ের অপব্যবহার এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ থেকে বঞ্চিত করেছে, ফলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। যা বিদেশী সাহায্য এবং এফডিআই প্রবাহের সম্মিলিত মানের দ্বিগুণেরও বেশি। তদুপরি, কর ছাড় অর্ধেকে নামিয়ে আনলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ তিনগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।

গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গৃহস্থালির উৎপাদন পরিসংখ্যান বিকৃত করা এবং চাহিদা কম দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে চাল, ভোজ্য তেল ও গমের মতো প্রধান পণ্যের ক্ষেত্রে এমন চিত্র দেখা গেছে। যা বাজারকে অস্থিতিশীল করেছে। এলোমেলো ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ক্রয়নীতিমালা শক্তিশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলোকে সুবিধা দিয়েছে এবং সাধারণ ভোক্তাদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। নিয়মিত মজুত পর্যবেক্ষণের অভাবে এই সমস্যাগুলোকে আরো জটিল করেছে।

শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ঋণদান প্রক্রিয়া ব্যাংকিং খাতের সঙ্কটকে আরো গভীর করেছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত আর্থিক মূল্য হিসাব করলে ১৪টি ঢাকা মেট্রো সিস্টেম বা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণের সমান হবে। ধারাবাহিক ঋণ খেলাপি এবং উচ্চ প্রোফাইল জালিয়াতি আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং উৎপাদনশীল খাত থেকে মূলধন সরিয়ে নিয়েছে।

গত এক দশকে ভিসা ক্রয়ের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হুন্ডির মাধ্যমে ১৩ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করেছে। যা ঢাকা এমআরটি-৬ (উত্তরা-মতিঝিল) নির্মাণের খরচের চার গুণ। সিন্ডিকেট এবং শোষণমূলক রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রম অভিবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। যা রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

সামাজিক সুরক্ষা নেটের অওতায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অপবরাদ্দের কারণে ব্যয় লাখ লাখ মানুষকে বিপন্ন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। ২০২২ সালে ৭৩ শতাংশ সুবিধাভোগী গরিব হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ হয়নি। যা ২০১৬ সালে ৬৬ শতাংশ থেকে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।

জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের মধ্যে দুর্নীতি পরিবেশগত অবক্ষয়কে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত জলবায়ু সম্পদের অপব্যবস্থাপনা স্থায়িত্বমূলক উদ্যোগগুলোকে ব্যাহত করেছে এবং জলবায়ু-উদ্ভূত ঝুঁকির বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement
ইসকন বটিকায় সর্বনাশা চক্রান্ত আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলায় ছাত্রশিবিরের নিন্দা ও প্রতিবাদ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক থাকতে হবে ‘শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য ভারতের প্রচেষ্টার অন্ত নেই’ ভারত কোনোদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি : মাহমুদুর রহমান দেড় মাস পর কাজে ফিরছে সিলেটের চা শ্রমিকরা আগামী এইচএসসির ফরম পূরণ ২ মার্চ থেকে শুরু ‘নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চায় পুলিশ’ চাঁদাবাজির অভিযোগে মাধবদীর ওসি তছলিমের স্ট্যান্ড রিলিজ শ্রীলঙ্কায় নিজস্ব ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণ করছে ওয়ালটন জুলাই বিপ্লবোত্তর বিচার বিভাগ মানবাধিকার রক্ষায় বদ্ধ পরিকর : প্রধান বিচারপতি

সকল