উপদেষ্টার মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হলেন খলিলুর রহমান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৪
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলীসংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রতিনিধি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. খলিলুর রহমান।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পররাষ্ট্র ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলীসংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি উপদেষ্টার মর্যাদা, বেতন-ভাতাদি ও আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন।’
জানা যায়, ২০০১ সালে ড. খলিলুর রহমান তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। ড. রহমান রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. খলিলুর রহমান ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) কাডারে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান এবং একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি আমেরিকান এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকে নির্বাহী পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮০-৮৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ও আইন ও কূটনীতিতে এমএ এবং অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৮৩-৮৫ সময়কালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালে তাকে নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মুখপাত্র হিসেবে এই কমিটি ও জাতিসঙ্ঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে দায়িত্ব পালন করেন।
ড. রহমান ১৯৯১ সালে জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনে (আঙ্কটাড) বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসঙ্ঘ সচিবালয়ে যোগ দেন। জাতিসঙ্ঘে পরবর্তী ২৫ বছরে তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন, যার মধ্যে ছিল জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের নির্বাহী কার্যালয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়নবিষয়ক প্রধান; জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি গ্রুপের নির্বাহী সচিব; আঙ্কটাড-এর প্রযুক্তি বিভাগ, ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি বিশ্লেষণ গ্রুপের প্রধান; জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে আঙ্কটাড ব্যুরো প্রধান; জাতিসঙ্ঘ সচিবালয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কর্মসূচির প্রধান; আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অশুল্ক বাধাসংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের আন্তঃসংস্থা গ্রুপের চেয়ার এবং বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন ও গতিশীল খাতসমূহের কর্মসূচির প্রধান সমন্বয়কারী।
ড. রহমান জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন ফ্লাগশিপ প্রকাশনার প্রধান রচয়িতা এবং অবদানকারী ছিলেন। এছাড়া তিনি জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব এবং আঙ্কটাড মহাসচিবের বাণিজ্য, অর্থনীতি ও উন্নয়ন সম্পর্কিত অনেক বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। ২০০১ সালে ব্রাসেলস স্বল্পোন্নত দেশগুলির সম্মেলনে কর্মসূচি পরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে তিনি নেতৃত্ব দেন, যা এলডিসি দেশের রফতানির জন্য শুল্ক ও কোটা মুক্ত সুবিধা প্রদানের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।