স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা : রিজভী
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৮, আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘কয়েকদিন আগে নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর না কি উথাল পাথাল করে দিবে, ওইদিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছে, ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেয়নি, তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ? কারণ শেখ হাসিনা তাদের লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফরিদপুরের ছাত্রলীগ নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের বলেছিলেন তোরা যত পারোস লুটপাট কর। কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না, বের হলেই হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। এর পরিণাম ভয়াবহ, তাই হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো একজন রক্ত পিপাসু নর ঘাতক এক নায়কের আর এ দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কোনো সুযোগ নেই। সে শিশুদের রক্ত পান করা একজন রক্ত পিপাসু নারী।পাপ করেছে, যে হত্যালীলা চালিয়েছে এর জন্য হয় আল্লাহর কাছে মাফ চান, না হলে শয়তানের মতো চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়ে থাকবেন।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব জিম্মি করে দিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুক। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমান তো আমরা দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, ‘আদানি বলে ভারতের একটা কোম্পানি শেখ হাসিনার সাথে বিদ্যুতের চুক্তি করেছে অত্যন্ত অসম চুক্তি, অত্যন্ত অন্যায় চুক্তি। এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার কম। আদানির কাছ থেকে যেটা কেনা হয় সেটার এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা, পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। আদানির সাথে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে, তাকে যদি কখনো পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সাথে কোনো চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে?’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত-প্রেম। ওই একটাই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারণ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন যে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সুতরাং তার প্রেম কার সাথে ছিল এটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘স্বাচিব (স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ) নামে তাদের একটি সংগঠন আছে। আজও স্বাস্থ্য অধিদফতর ওই স্বাচিবের চিকিৎসকদেরকে ঢাকা মেডিক্যালসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করছে। এগুলো যদি অন্তর্বর্তী সরকার না দেখে, বিপদ তো তাদেরও হবে, আমাদেরও হবে। কোনো ফাঁক দিয়ে যদি ওই দানবরা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে, তাহলে তো অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য শুভ হবে না।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা বলেছি যে মার্কেটগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে, বাজারগুলো এখনো তাদের সিন্ডিকেটের কাছে। আপনারা কি তাদের একজন লোককে ধরেছেন? একটা লোককে গ্রেফতার করেছেন? অথচ আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন, তারপরও তো পেঁয়াজের দাম কমে না, তারপরও আলুর দাম কমে না, চিনির দাম কমে না, আটার দাম কমে না, সয়াবিন তেলের দাম কমে না। কারণ এগুলো ইমপোর্ট করতে হয়। দাম কমানোর জন্য আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন। তারপরও কি দাম কমছে? কমছে না। কারণ সিন্ডিকেটবাজদের আপনারা গ্রেফতার করতে পারেননি। এই বিষয়গুলো আপনারা যদি না দেখেন, পরাজিত ফ্যাসিস্টরা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই আওয়াজ দেবে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধক্ষ্য রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, বিএনপির সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা