একবার আসতে পারলে আর কেউ ফেলাতেই পারবে না : শেখ হাসিনা
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:১৫, আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৪১
‘এবার একবার আসতে পারলে কেউ ফেলাতেই পারবে না, ইনশাআল্লাহ’ সম্প্রতি শেখ হাসিনার কণ্ঠসদৃশ একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে শেখ হাসিনাকে এই কথা বলতে শোনা যায়।
তিন মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ওই ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে দাবি করতে শোনা যায়, ‘ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তোমাদের বাড়ি-ঘরে যারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তাদের বাড়ি ঘর নেই? সব কথা কি বলে দিতে হয়?’
ফোনকলের অন্য প্রান্তের কণ্ঠটি গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আলম বুলবুলের দাবি করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে কোথায় পালিয়ে আছে তা জানা যায়নি।
তবে কণ্ঠস্বরটি শেখ হাসিনার নাকি প্রযুক্তির সাহায্যে বানানো তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফোনলাপে শেখ হাসিনার সদৃশ কণ্ঠ বলেন, ‘যারা এখন বেশি বেশি বাড়াবাড়ি করছে। বেশি ভালো থাকবেন না আপনি। দেখো ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই শত্রুরা টেকে কিনা? কাউকে পালাতেও দেয়া হবে না। যে কয়টা নাফরমানি করছে তাদের একটাও অস্ত্র থাকবে না।’
এ সময় অন্য প্রান্ত থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী নেত্রী, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার কথায় আমরা ভরসা রাখছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একদম একদম।’
তখন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আপনি একটু মাথা ঠান্ডা রেখে, আপনার কৌশলে এগোন নেত্রী। তবে সবাইকে সব কাজ বরাদ্ধ রেখে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঠিক আছে, আমি সবাইকে বলছি, তোমরা শুধু দুই মাস অপেক্ষা করো। কিছু বলো না।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী নেত্রী।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওরা ফেল করবে, আর আমরা যদি কিছু করি, তখন বলবে আমাদের জন্য করতে পারে নাই। সেটা আর বলার মুখ নেই। জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবেও, ওই যে সুদ খোর ইউনূসের গুটি গুটি চেহারা দ্বার আটকে গেছে মানুষের কাছে।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী নেত্রী, অলরেডি বাংলার মানুষ বুঝে গেছে। মানুষ ভয়তেই কেউ মুখ খুলতে পারছে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এখন ওদের ভয় দিতে হবে।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী নেত্রী, ওই যে আমাদের গোবিন্দগঞ্জের কালাম ভাই এমপি আর আমি উপজেলার চেয়ারম্যান বর্তমান ছিলাম নেত্রী, আর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পরপর ছিলাম দুইবার, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। ওনারও বাড়ি-গাড়ি সব জ্বালাই-পুড়াই দিছে। আমারও বাড়ি-গাড়ি সব জ্বালাই পোড়াই দিছে নেত্রী। আমাদের অসংখ্যা মামলা দিছে, আপনি শুধু আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘না আমি একটা কথা আমি বলি, তোমাদের বাড়ি পোড়াই দিছে কে?’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ওরাই নেত্রী, জামায়াত-বিএনপি সকলই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের ঘর-বাড়ি নেই?’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাহলে? সবকিছু কি প্রকাশ্যে করতে হয়।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী না, না নেত্রী।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমাদের নাই, তাহলে কারো ঘর-বাড়ি থাকবে না।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘একটা সংশয় নেত্রী, মাননীয় নেত্রী গোবিন্দগঞ্জ আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সেক্রেটারি, তাদের নামে একটি মামলাও হয়নি। কিংবা তাদের বাড়ি-ঘরেও ওরা যায়নি। ওরা কিভাবে এটাকে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শোনো ওরা দেখে যেগুলো পোটেনশিয়াল, যে গুলো দেখে একেবারেই শক্ত তাদের ওরা তালিকা করে। সবাইকে কাউন্ট করে না। সেই জন্য বললাম, যাদের বাড়ি-ঘর পোড়া গেছে, তাদের হিসাব নেয়া হচ্ছে, কারা পোড়াতে আসছিল, আর আমার বাড়ি যদি পোড়ে তোদেরও পুড়ব।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বী নেত্রী, জ্বী নেত্রী, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার সাথে কথা বলে বুকটা ভরে গেল নেত্রী। আপনি ভালো থাকবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মামলা, আমার তো শুধু গোবিন্দগঞ্জ না, আমার তো সারা বাংলাদেশে ২২৭টি মার্ডার কেস। আমি বলছি সবাই তালিকা করো। তোমরাও তালিকা করো। ২২৭ মার্ডার লাইন্সেস পেয়ে গেছি। এক মামলায় যে শাস্তি শোয়া দুই শ’ মামলায় একই শাস্তি। তাই না। জ্বী ঠিক আছে সেই শাস্তি নেব। তার আগে শোয়া দুই শ’ হিসাব করে নেব। এটা যেন মাথায় থাকে।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, ইনশাআল্লাহ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবার একবার আসতে পারলে কেউ ফেলাতেই পারবে না, ইনশাআল্লাহ।’