১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩০, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে : সিরাত মাহফিলে বক্তারা

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে : সিরাত মাহফিলে বক্তারা - ছবি : সংগৃহীত

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করে সিরাত মাহফিলে বক্তারা বলেছেন, ‘আইনজীবীরা যদি সমাজে ন্যায়বিচার বাস্তবায়নে আল্লাহর ভয় বুকে ধারণ করে কাজ করেন তবেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আইনজীবী বিভাগের উদ্যোগে অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান মিলনায়তনে সিরাত মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সিরাত মাহফিলে প্রধান অতিথির ব্ক্তব্যে প্রফেসর মোখতার হোসেন বলেন, ‘রাসূল সা:-এর আদর্শে দেশ ও জাতি পরিচালিত হলে সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সমাজের সকল স্তরে শান্তি বিরাজ করবে। তাই রাসূল সা:-এর আদর্শ বাস্তবায়নে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।

এ সময় প্রধান আলোচক ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম প্রতিষ্ঠান আদালত। আদালত সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় আইনজীবীদের প্রচেষ্টায়। ছাত্রদের ‘ইউ ওয়ান জাস্টিস’ স্লোগান বাস্তবায়নে আইনজীবীরা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন কুরআন ও সুন্নাহর কোনো বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেননি। তিনি বৃটিশদের আইন বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছে। যে আইন আল্লাহ ও তার রাসূল সা:-এর বিধান পরিপন্থী, সে আইন দিয়ে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না। তাই তিনি কুরআনের বিধান বাস্তবায়নে আইনজীবীদের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।’

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিরাত মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টারের পরিচালক ও তারবিয়াহ্ অ্যাডুকেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোখতার হোসেন, প্রধান আলোচক ছিলেন মদীনাতুল উলূম কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ল ইয়ার্স কাউন্সিলের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।

ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান এমনভাবে রচিত হয়েছে যেখানে ইসলামের কোনো বিধি-বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আইন করা হয়েছে সাধারণ নাগরিকের জন্য। কিন্তু যারা আইন করেছে তাদের জন্য নয়। তারা অপরাধ করেও আইনের ফাঁকা দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়। মানুষের তৈরি আইনে বৈষম্য রয়েছে কিন্তু আল্লাহর আইনে কোনো বৈষম্য নেই। ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ, মুসলিম-অমুসলিম সকলের জন্য বিচারের ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন এক এবং সমান। তাই আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে। দুনিয়াতে মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল আদালত। আর সেই আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে লড়তে হয় আইনজীবীদের। কিন্তু মানুষের তৈরি আইনে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না। আদালতে না লড়ে তিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী রাষ্ট্র বিনির্মাণে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।’

হেলাল উদ্দিন আরো বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অসংখ্য মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। কেন দিতে হয়েছে? এর কারণ মানব রচিত বিধান। ছাত্ররা যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্লোগান দিয়েছে, সে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে।’

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘খুনি হাসিনাকে ছাত্র-জনতা দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। আর অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর দায়িত্ব দিয়েছে, খুনি হাসিনার দোসরদের অপসারণ করে একটি জনবান্ধব প্রশাসন জাতিকে উপহার দিতে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের নজর সেদিকে একেবারেই কম। তিনি অনতিবিলম্বে হাসিনার দোসরদের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে যোগ্য ও প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের দায়িত্ব দেয়ার দাবিও জানান।’

সীরাত মাহফিলে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, কেরানীগঞ্জ থানা আমির অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক মণ্ডল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো: মাইন উদ্দিন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, নবাবগঞ্জ থানা আমির অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম, হাতিরঝিল থানা আমির অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান আজমি, টিম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সাবেক কার্যকরী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক ইমন, মুজাহিদুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক চৌধুরী প্রমুখ।-বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement