০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

কোরআন শুধু মুসলমানদের জন্য নয় পুরো মানবজাতির জন্য নাজিল হয়েছে : ড. মাসুদ

কোরআন শুধু মুসলমানদের জন্য নয় পুরো মানবজাতির জন্য নাজিল হয়েছে : ড. মাসুদ - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, মহাগ্রন্থ আল কোরআন কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্য নয়, পুরো মানব জাতির জন্য নাজিল হয়েছে। যেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি, প্রতিবেশীর কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেশী মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টানসহ যেকোনো জাতি-গোষ্ঠী প্রতিবেশী রয়েছে তাদের হক নষ্ট না করার কঠোরভাবে নির্দেশনা রয়েছে কোরআনে।

বুধবার (৯ অক্টোবর) পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হিন্দু ধর্মালম্বীদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই কোরআনই কেবল শান্তির কথা বলে, শান্তি বজায় রাখে। সমাজে কোরআনের বিধান কায়েম হলে ধর্মের বৈষম্য থাকবে না।

বাউফল পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু অধির চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলা আমির অধ্যাপক শাহ আলম, বাউফল উপজেলা আমির মাওলানা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: কামাল। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জিতেন্দ্র নাথ, অতুল চন্দ্র পালসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

ড. মাসুদ বলেন, যারা মসজিদে যেতে বাধা দিয়েছে, মসজিদে তালা মেরেছে, মসজিদে ভেতরে মানুষকে রক্তাক্ত করেছে, তারাই মন্দির ভেঙেছে, মন্দির লুটপাট করেছে, হিন্দুদের দোকান দখল দিয়েছে, হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে নিজের তৈরি দালাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেই দায় চাপিয়ে দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলাম পন্থীদের ওপর। অথচ জামায়াতে ইসলামী বারবার প্রমাণ দিয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর হাতে দেশের, সমাজের সকল মানুষ নিরাপদ এবং সকল মানুষ নাগরিকের মর্যাদার অধিকারী। কেউ সংখ্যালঘু নয়। মুসলমানরা যদি তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে ভিন্ন ধর্মের সাথে মতবিনিময় করে সহযোগিতা চাইতে না হয়, তাহলে হিন্দু ধর্মের মানুষ কেন তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে মুসলমানদের সাথে মতবিনিময় করে সহযোগিতা ও নিরাপত্তা চাইতে হবে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তারমানে কিছু ঘাপলা আছে! জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনা দায়িত্ব পেলে এসব ঘাপলা বুড়িগঙ্গা ছুঁড়ে ফেলা হবে। সমাজে হিন্দু-মুসলিমসহ সকল ধর্মের লোকজন পরস্পর ভাই-ভাই, ভাই-বোন হিসেবে শান্তিতে বসবাস করবে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ হিন্দুদেরকে সংখ্যালঘু উপাধি দিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, কেউ সংখ্যালঘু নয় সবাই জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। সকলের মর্যাদা ও অধিকার সমান। যেদল আমাদেরকে নাগরিক হিসেবে সম্মান দেখিয়েছে। আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে আমরা সেই দলের পক্ষ থাকব। কেউ কেউ অতিতে প্রচার করেছে আমরা নিদিষ্ট একটি দলের কিন্তু না যারা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে আমরা তাদের দলের নয়।

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনকালের চেয়ে গত দুই মাসে বেশি ভালো ও নিরাপদে হিন্দু সম্প্রদায় রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাউফলসহ সারাদেশেই হিন্দুদের ওপর হামলা ও লুটপাটের চক্রান্ত করা হয়েছে। সেই চক্রান্তের সাথে আওয়ামী লীগ ও অন্য দলের নেতাকর্মীরা ছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী সবার আগে হিন্দুদের নিরাপত্তায় তাদের বাড়ি-ঘর, মন্দির পাহারা দিয়েছে। পরবর্তী অন্য দলও তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সম্প্রদায়িক সম্প্রতির দেশ উল্লেখ করে তারা বলেন, কোনো অপপ্রচারে হিন্দু সমাজ আর বিভ্রান্ত হবে না।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement