২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

নির্বাচনের আগে সংবিধানসহ সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই : জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) - ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেছেন, দেশের মানুষ আশা করছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেবে। আমরা এই ভালো নির্বাচনের আগেই সংবিধানসহ সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই। আমরা চাই ভালো নির্বাচনের পর যেনো কোনো সরকার আর দানব হতে না পারে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের শাসন পদ্ধতি শেখ হাসিনাকে দানব বানিয়েছে। আমাদের সংবিধান সরকারকে অসীম ক্ষমতা দেয়। বিখ্যাত ইতিহাসবীদ লর্ড এটন-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, ‘ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। অসীম ক্ষমতা মানুষকে নিশ্চিতভাবে চরম দুর্নীতিগ্রস্ত করে।’ এ কারণেই, ভালো নির্বাচনে জনগণের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েও একটি রাজনৈতিক দল দানবে পরিণত হতে পারে।

তিনি বলেন, দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা, বিচার বিভাগের প্রায় শতভাগই সরকার প্রধানের হাতে থাকে। এছাড়া, সাংবিধানিক পদগুলোও সরকার প্রধানের হাতের মুঠোয়। কারো কাছেই সরকারের জবাবদিহিতা নেই। এ কারণেই বাংলাদেশের যেকোন সরকারই দানবে পরিণত হতে পারে। 

জিএম কাদের বলেন, আমাদের সন্তানেরা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা গুলির সামনে বুক পেতে স্বৈরাচার হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। এত হত্যা ও নির্যাতনের পরও আমাদের সন্তানরা আন্দোলন থেকে সরে যায়নি। আমাদের সন্তানদের আত্মত্যাগ বিফল হতে দেবো না। যে লক্ষ্য অর্জনে ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, সেই লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে কাজ করতে হবে। আমরা শুরু থেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আন্দোলনের শুরুতেই ৩ জুলাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে আমি জাতীয় সংসদে বক্তৃতা করেছি। সংসদে ও রাজপথে আমরা বলেছি, ছাত্রদের আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক। যখন সরকারের নির্দেশে ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো হলো, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। জীবন দেয়া ছাত্রদের আমরা জাতির বীরমুক্তিসেনা বলে অভিহিত করেছি। সমন্বয়কদের যখন ডিবি অফিসে আটক করা হলো, আমরা তাদের মুক্তি দাবি করেছি। ছাত্রদের ওপর অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করেছি। জাতীয় পার্টির যৌথসভা করে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছি। আমার নির্দেশে জাতীয় ছাত্র সমাজ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে রাজপথে ছিল। রংপুরে আমাদের ছেলেরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে মামলায় হয়রানি হয়েছে। রংপুরে আমাদের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছে। রাজনীতিবীদ হিসেবে সর্বপ্রথম রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। আবু সাঈদের পরিবারকে বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছি।

জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রাকিবুল হাসানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রফিকুল আলম সেলিম, জাহিদ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ হান্নান।


আরো সংবাদ



premium cement